সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাষ্ট্রসংঘের মঞ্চে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একটি কথাও বলেনি ভারত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বক্তৃতায় একবারও পাকিস্তান শব্দটি উল্লেখ করেননি। পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান অবশ্য সে পথে হাঁটেননি। রাষ্ট্রসংঘের মঞ্চে ভারতের প্রতি বিদ্বেষ এবং ঘৃণা উগরে দিলেন তিনি। ব্যক্তিগত স্তরে আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং আরএসএসকে। নির্ধারিত সময় ১৫ মিনিট পেরিয়ে আধ ঘণ্টা ধরে শুধু ভারত বিদ্বেষ ছড়ালেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। রাষ্ট্রসংঘের মঞ্চেও পরোক্ষে পরমাণু যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী।
পরমাণু যুদ্ধের হুঁশয়ারি ইমরান আগেও দিয়েছিলেন। কিন্তু, রাষ্ট্রসংঘের মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি ফের এই হুঁশিয়ারি দেবেন তা অনেকেই ভাবেননি। রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভায় দাঁড়িয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর স্পষ্ট হুঁশিয়ারি, “আমি কোনও হুমকি দিচ্ছি না। কিন্তু আন্তর্জাতিক মহলকে ভাবতে হবে তাঁরা ১৩০ কোটির বাজারকে তোষণ করবেন, না নিরীহ নিরপরাধ নাগরিকদের পাশে থাকবেন। দুটি পরমাণু শক্তিধর দেশ যদি যুদ্ধ করে তাঁর প্রভাব কিন্তু গোটা বিশ্বেই পড়বে।” মোদি বিদ্বেষে ভরা বক্তব্যে ইমরান সরাসরি আক্রমণ শানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী এবং সংঘ পরিবারকে। তিনি বলছেন,”মিস্টার মোদি আজীবন আরএসএসের সদস্য। আরএসএস হিটলার-মুসোলিনির আদর্শে অনুপ্রাণিত। সংঘ ভারত থেকে মুসলিমদের মুছে ফেলার ‘জাতি শোধন’ তত্ত্বে বিশ্বাসী। এই ঘৃণার মানসিকতাই গান্ধীকে খুন করেছিল। এই আদর্শেই ২০০২ সালে নরেন্দ্র মোদি মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন গুজরাটে মুসলিমদের নিয়ে দাঙ্গা বাঁধিয়েছিল। প্রাক্তন কংগ্রেসি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী নিজেই বলেছেন, আরএসএস ক্যাম্পে জঙ্গি তৈরি হয়। এই জঙ্গিরাই ২০০০ মুসলিমকে কেটে ফেলেছিল। ঘরছাড়া হয় দেড় লক্ষ মুসলিম।” কাশ্মীরে কারফিউ নিয়েও এদিন সরব হন পাক প্রধানমন্ত্রী। তাঁর হুঁশিয়ারি, কারফিউ তুললে কাশ্মীরে রক্তবন্যা বইবে।
বালাকোট এয়ার স্ট্রাইক প্রসঙ্গেও এদিন সরব হন ইমরান। এতদিন পাক সেনা এই এয়ার স্ট্রাইকের কথা অস্বীকার করলেও, এদিন রাষ্ট্রসংঘের মঞ্চে হামলার কথা স্বীকার করে নেন পাক প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “দশটা গাছ ছাড়া কিছুরই ক্ষতি হয়নি ভারতের হামলায়। ভারতের এক পাইলট ধরা পড়েছিলেন। আমরা তাঁকে মুক্তি দিয়েছি। অথচ এটাকে শান্তি প্রক্রিয়া না-ভেবে ১৫০ জন জঙ্গি মারা গিয়েছে বলে ভোটে মিথ্যা প্রচার চালিয়েছেন মোদি।” কূটনৈতিক মহল বলছে, ইমরানের এই ভারত বিদ্বেষী বক্তব্যে আদতে ভারতেরই লাভ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যেখানে উদারতা দেখিয়ে বিশ্ব ভ্রাতৃত্বের বার্তা দিচ্ছেন, সেখানে ইমরানের সংকীর্ণ ভারত-বিদ্বেষ আন্তর্জাতিক মহলে তাঁকেই কোণঠাসা করবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.