সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আমেরিকার ইতিহাসে চিরস্থায়ী জায়গা করে নিলেন হিলারি রডহ্যাম ক্লিনটন৷ এই প্রথম কোনও প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রথম মহিলা হিসাবে লড়াইয়ের সুযোগ পেলেন তিনি৷
মঙ্গলবার রাতে ক্যালিফোর্নিয়া ও অন্য তিনটি প্রদেশের প্রাইমারিতে জয়ের সঙ্গে সঙ্গেই হিলারির প্রার্থী হওয়া সুনিশ্চিত হয়ে যায়৷ যদিও প্রতিদ্বন্দ্বী বার্নি স্যান্ডার্স এখনও পরাজয় স্বীকার করতে নারাজ৷ এমনকী, জয়ের রাতেই হিলারিকে কটাক্ষ করেছেন রিপাবলিকান দলের সম্ভাব্য প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পও৷ কিন্তু আপাতত সমালোচনায় কান দিতে চান না হিলারি নিজেই৷ নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিনে তাঁর প্রচারের সদর দফতরে দাঁড়িয়ে তাঁর ঘোষণা, “সবাইকে ধন্যবাদ৷ আমরা একটা কীর্তি গড়েছি৷ দেশের ইতিহাসে এই প্রথম কোনও মহিলা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হবে৷” প্রয়োজনীয় সংখ্যক প্রতিনিধি জোগাড় করায় হিলারিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা৷ তবে এখনও সরাসরি তাঁর প্রাক্তন বিদেশ সচিবের হয়ে মুখ খোলেননি৷ হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জানান, “হিলারির ঐতিহাসিক জয় লক্ষ লক্ষ মানুষকে অনুপ্রাণিত করবে৷ মধ্যবিত্ত পরিবার, শিশুদের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই তিনি লড়াই করছেন৷” একইসঙ্গে হিলারির প্রতিদ্বন্দ্বী ভারমন্টের সেনেটর স্যান্ডার্সের সঙ্গে আগামিকাল হোয়াইট হাউসে দেখা করবেন ওবামা৷
ক্যালিফোর্নিয়া, নিউ জার্সি, নিউ মেক্সিকো ও সাউথ ডাকোটায় জিতে ২৪৯৭ জন প্রতিনিধি জোগাড় করে ফেলেছেন হিলারি৷ যা তাঁর প্রয়োজনীয় প্রতিনিধির থেকে অনেক বেশি৷ অন্যদিকে, মন্টানা ও নর্থ ডাকোটায় জয়ী স্যান্ডার্সের পক্ষে রয়েছেন ১৬৬৩ প্রতিনিধি৷ তবুও লড়াই ছাড়তে নারাজ স্যান্ডার্স৷ আগামী মঙ্গলবার ওয়াশিংটন ডিসি, তারপর ফিলাডেলফিয়াতে জাতীয় কনভেনশনেও লড়তে চান তিনি৷ অবশ্য ডেমোক্র্যাটদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার স্বার্থে স্যান্ডার্সকে সরে দাঁড়ানোর জন্য দলের অনেকে চাপ দিচ্ছেন৷ যদিও তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, শুধু ট্রাম্পকে হারানোই তাঁর লক্ষ্য নয়৷ দলের নীতি নির্ধারণ ও ডেমোক্র্যাট প্রশাসনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চান তিনি৷ এদিন জয়ের পর ট্রাম্পকে কটাক্ষ করে উচ্ছ্বসিত হিলারি বলেন, “প্রতিটি ছোট মেয়েকে বলছি৷ যারা বড় স্বপ্ন দেখতে চাও, সবকিছুই তোমাদের হাতে পাবে৷ এমনকী, প্রেসিডেন্টও হতে পারো৷ এই রাত তোমাদের জন্য৷ যে মহিলাদের সম্মান করে না, জাত-ধর্ম নিয়ে অন্যদের আক্রমণ করে, সন্দেহের বীজ বুনতে চায়, তাকে কখনও নির্বাচিত করা সম্ভব নয়৷”
অন্যদিকে, এবার হিলারির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক আক্রমণ শুরু করেছেন ট্রাম্পও৷ তিনি বলেন, “হোয়াইট হাউসে হিলারিকে ফেরানোর অর্থ ওবামার বিপর্যয়ের রেশ টেনে যাওয়া৷ আমরা নিঃশেষ৷ প্রচুর ঋণের বোঝা আমাদের ঘাড়ে৷ পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছে৷ অপরাধ বাড়ছে, মানুষ আতঙ্কিত৷ হিলারির রাজনীতি করার একমাত্র লক্ষ্য নিজের আর্থিক উন্নতি৷ উপকার, সরকারি সাহায্য বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ ডলার কামিয়েছেন ওঁরা৷” ডেমোক্র্যাটদের দ্বন্দ্ব উস্কে দিয়ে স্যান্ডার্স সমর্থকদের সমর্থনও চেয়েছেন ট্রাম্প৷ সুপার ডেলিগেটসদের নামে আসলে হিলারির পক্ষে ভোট জোগাড় করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.