সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ছকভাঙা পথে হেঁটে নিজের উদারপন্থী মানসিকতার জন্য প্রবল জনপ্রিয় ভ্যাটিকানের পোপ ফ্রান্সিস। ব্যাসিলিকার ঘেরাটোপেই বসে থাকেননি তিনি। বাইরে বেরিয়ে পথেঘাটে ঘুরে সাধারণ জনতার সঙ্গে কথাবার্তা বলে তিনি বুঝিয়েছিলেন, আপনজন হতে না পারলে শ্রদ্ধা অর্জন করা যায় না বিশেষ। ক্রিসমাস হোক কিংবা অন্য যে কোনও উৎসবে, ভ্যাটিকানের ঝুলন্ত বারান্দা থেকে পোপ জনতাকে শুভেচ্ছা জানান। কখনও সরাসরি সংযোগ স্থাপনও করেন। কিন্তু পোপের এই মিশে যাওয়ার প্রকৃতির জন্য তাঁকে মাঝেমধ্যে অপ্রীতিকর অবস্থাতেও পড়তে হয়েছে। নতুন করে বিপত্তিতে পড়ার আগে সতর্ক করে দিলেন তিনি।
ঘটনাটা কী? নতুন বিপত্তির কথা জানানোর আগে পুরনো ঘটনাটি একবার মনে করিয়ে দেওয়া দরকার। নতুন বছরের প্রথমদিন পোপকে শুভেচ্ছা জানাতে সেন্ট পিটার্স স্কোয়্যারে জমায়েত হয়েছিলেন বহু মানুষ। তাঁদের সকলের সঙ্গে করমর্দন করছিলেন বছর তিরাশির পোপ ফ্রান্সিস। এমন সময় আচমকা এক মহিলা করমর্দনের সময় তাঁর তালুতে একটু বেশি চাপ দিয়ে দেন। তাতে সামান্য কষ্ট হয় তাঁর। বিরক্তিও প্রকাশ করেন তিনি।
সেই ভিডিও ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। সমালোচনাও শুরু হয়ে গিয়েছিল। নেটিজেনদের একাংশ শান্ত, স্মিত পোপের মুখে বিরক্তির ছায়া মোটেই ভালভাবে নেননি। তবে ব্যথা তাঁকে বেশ ভুগিয়েছে বলেই ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর। সেইদিনই বেশ একটা শিক্ষা হয়েছিল তাঁর। কিন্তু পরে তিনি নিজেই বুঝেছিলেন যে ওই আচরণ তাঁকে ঠিক মানায় না। তাই প্রকাশ্যে ক্ষমাও চেয়ে নিয়ে বলেছিলেন, ”অনেক সময় ছোট ছোট কারণে আমরা বিরক্ত হই। এটা একেবারেই ঠিক নয়। আমার সেদিন ওভাবে বিরক্ত হওয়া ঠিক হয়নি। এর জন্য আমি দুঃখিত।”
এবার আসা যাক আজকের প্রেক্ষাপটে। বুধবার ভ্যাটিকানের অডিটোরিয়ামে এক বক্তৃতার আয়োজন করা হয়েছিল। মূল বক্তা ছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। তিনি প্রেক্ষাগৃহে প্রবেশের সময়েই জনগণ ঘিরে ধরে তাঁকে। হাত মিলিয়ে পোপের আশীর্বাদ নেওয়ার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। তিনিও শান্ত হয়ে হাসিমুখে সকলের সঙ্গে হ্যান্ডশেক করেন। এক সন্ন্যাসিনীর সঙ্গে করমর্দনের পর তিনি পোপের গালে চুমু খাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে বসেন। সঙ্গে সঙ্গে ফ্রান্সিসের মানসপটে ভেসে ওঠে নববর্ষের সন্ধেবেলার ঘটনা। তিনি সন্ন্যাসিনীকে হাসতে হাসতেই বলেন, ”গাল এগিয়ে দিতে পারি। চুমু খাও, ঠিক আছে। কিন্তু ধৈর্য্য হারিও না, কামড়ে দিও না।” তাঁর এই মন্তব্যে হাসির রোল ওঠে সমবেত জনতার মধ্যে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.