সুচন্দ্রা মজুমদার, ওয়াশিংটন: হোয়াইট হাউসের মসনদে পৌঁছনোর লড়াই ক্রমশ হাড্ডাহাড্ডি হয়ে উঠছে৷ দেশব্যাপী বিভিন্ন জনমত সমীক্ষায় প্রকাশ, প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে মাত্র দু’শতাংশ ভোটে এগিয়ে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন৷ কিন্তু ভারতের মতোই এখানেও জনমত সমীক্ষা যে মিলবে, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই৷ ফলে কার্যত বিনিদ্র রাত কাটাচ্ছেন দুই প্রার্থী ও তাঁদের কট্টর সমর্থকরা৷
ফক্স নিউজ তাদের সাম্প্রতিক সমীক্ষায় বলেছে, হিলারি (৪৫ শতাংশ) এগিয়ে রয়েছেন ট্রাম্পের (৪৩ শতাংশ) চেয়ে৷ যদিও খোদ হিলারির দাবি, ভোটে সুইং হবে৷ এফবিআই তাঁর ব্যক্তিগত ই-মেল নিয়ে ফের তদন্ত শুরু করলেও সততার প্রশ্নে যাবতীয় সংশয় দূর করে জিতবেন তিনিই৷ আবার সিএনএন-এর সমীক্ষায় প্রকাশ, হিলারি আপাতত এগিয়ে থাকলেও ট্রাম্পের পক্ষে সুইং হচ্ছে ‘ব্যাটলগ্রাউন্ড’ স্টেটগুলিতে৷ অর্থাত্ যেখানে ডেমোক্র্যাট বা রিপাবলিকানদের নিরঙ্কুশ একাধিপত্য নেই৷ আত্মবিশ্বাসী ট্রাম্প তাই হুঙ্কার ছাড়ছেন, “সুইং নয়, রিভার্স সুইং হবে৷” প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিততে হলে ইলেক্টোরাল কলেজে ন্যূনতম ২৭০ ভোট চাই৷ এই প্রথম দেখা যাচ্ছে, সেই লক্ষ্যের চেয়ে পিছিয়ে হিলারি৷ ওহায়ো, অ্যারিজোনায় দুই প্রার্থীই ছিলেন সমানে সমানে৷ দু’টি প্রদেশই সামান্য হলেও ট্রাম্পের দিকে ঝুঁকে৷ আবার নিউ হ্যাম্পশায়ার ছিল হিলারির পক্ষে৷ সেখানে এখন সেয়ানে-সেয়ানে লড়াই চলছে৷ ফ্লোরিডা, নেভাদা, নর্থ ক্যারোলিনাতেও ওঠা-পড়া জারি৷ অন্যদিকে, রিয়ালক্লিয়ার পলিটিক্স, নিউ ইয়র্ক টাইমস ও হাফিংটন পোস্ট এগিয়ে রাখছে হিলারিকেই৷ সব শিবিরেই এখন তাই প্রশ্ন, কার হিসাব কতটা মিলবে৷
(১০০৮ নারকেল ফাটিয়ে হিলারির জয়ের কামনা শ্রীলঙ্কার তামিলদের)
১৯৮৪ থেকে সফলভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করে আসছেন অ্যালান লিঞ্চম্যান৷ মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক একাধিক কারণ ব্যাখ্যা করে ট্রাম্পের পক্ষে রায় দিয়েছেন৷ কিন্তু তিনিও ফল নিয়ে খুব একটা নিশ্চিন্ত নন৷ একে তো প্রচারের শেষ পর্বেও বিভিন্ন প্রদেশে ঝড়ের গতিতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন দুই প্রার্থী ও তাঁদের সঙ্গীরা৷ প্রায় কুড়ি কোটি ভোটার এবারের নির্বাচনে ভোট দেবেন৷ তার মধ্যে প্রায় তিন কোটি মানুষ ‘আর্লি ভোটিং’-এ ভোট দিলেও এখনও অনেক হিসেব-নিকেশ পাল্টে যেতে পারে৷ তার উপর নিত্যনতুন খবর, কেলেঙ্কারির কাহিনি উঠে আসছে৷
যেমন, একাধিক হিসাবের নথি, চুক্তিপত্র থেকে স্পষ্ট, কুড়ি বছর আগে বৈধ নথি ছাড়াই আমেরিকায় মডেল হিসাবে কাজ করেছিলেন ট্রাম্পের বর্তমান স্ত্রী মেলানিয়া৷ অভিবাসীদের সম্পর্কে ট্রাম্প যখন কড়া অবস্থান নিয়েছেন, তখন এই তথ্য তাঁকে কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে ফেলবে৷ কারণ, আইন অনুযায়ী সরকার চাইলে মেলানিয়ার নাগরিকত্ব বাতিল করতে পারে৷ প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর পক্ষে যা মোটেও সম্মানজনক নয়৷
এদিকে, হিলারির ব্যক্তিগত ই-মেল সার্ভার নিয়ে ফের তদন্তের কথা বলায় এফবিআই-কে একহাত নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা৷ গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানকে সার্টিফিকেট দিয়ে তিনি বলেছেন, “মনে করি না, জেমস কোমি নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন৷ তবে যতক্ষণ না কোনও সুনির্দিষ্ট তথ্য মিলছে, তা প্রকাশ্যে জানানো উচিত নয়৷ এমনকী, তেমন কোনও তথ্য পেলে সেটা সরকারি আইনজীবীকে জানানো দরকার৷ সেটা প্রকাশ্যে আনা হবে কি না, তিনিই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন৷” যা থেকে ই-মেল কাণ্ডে ডেমোক্র্যাটদের অস্বস্তি স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে৷ তার উপর ওবামার সভায় এদিন অভূতপূর্ব পরিস্থিতি তৈরি হয়৷ ট্রাম্পের সমর্থনে পোস্টার নিয়ে উঠে দাঁড়ান এক প্রবীণ, অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মী৷ ডেমোক্র্যাট সমর্থকরা তাঁর উদ্দেশে চিৎকার শুরু করলে অনেক কষ্টে তাঁদের শান্ত করেন ওবামা৷ আমেরিকার. বাক স্বাধীনতার ঐতিহ্যের কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রেসিডেন্ট বলেন, “ওঁর বয়স, দেশের প্রতি অবদানকে সম্মান করুন৷ নিজের কাজে মন দিন৷”
(স্মার্টফোনের পর বিস্ফোরণ স্যামসাংয়ের ওয়াশিং মেশিনেও)
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.