সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া থেকে ফুটবল চর্চা। সবেতেই আগ্রহী ছিল আবু বকর আল বাগদাদির। ক্লাব ফুটবলে রীতিমতো স্টার হয়ে উঠেছিল সে। কিন্তু দুনিয়া তাকে চিনেছে অন্যভাবে। মসজিদের বারান্দায় দাঁড়িয়ে মাইক্রোফোনের সামনে আইএস প্রধান বাগদাদিকে বক্তৃতা দিতে দেখার ছবিই দুনিয়ার কাছে সবচেয়ে বেশি পরিচিত। রবিবারই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেছেন। কে এই বাগদাবি? কী তার অতীত?
ইরাকের ছোট্ট শহর সামারায় একটি সুন্নি পরিবারে জন্ম হয়েছিল বাগদাদির। যদিও ওই সময় বাগদাদির নাম ছিল ইব্রাহিম আল বদরি। ছোটবেলা থেকেই কোরান ও ধর্মীয় রীতিনীতির প্রতি অসম্ভব টান ছিল তার। তা নিয়েই পড়াশোনা শুরু করে বাগদাদি। ১৯৯৬ সালে বাগদাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামিক স্টাডিজের উপর ব্যাচেলর ডিগ্রি পায় সে। এরপর কোরানিক স্টাডিজে মাস্টার ডিগ্রি ও পরে ডক্টরেটও পায় বাগদাদি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরনো তথ্য থেকে অবশ্য বাগদাদি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মেলেনি।
জানা গিয়েছে যে, ওই সময়েই বাগদাদ শহরের কাছে একটি মসজিদে শিশুদের কোরান শিক্ষা দিতে শুরু করে সে। সেইসঙ্গে চলতে থাকে তার ফুটবল চর্চাও। ক্লাব ফুটবলে রীতিমতো স্টার হয়ে উঠে ছিল বাগদাদি। ২০১৩ সালে নিজেকে ‘খলিফা’ হিসাবে ঘোষণা করার পরই আইএস প্রধান হিসাবে উঠে আসে তার নাম। তবে ৪২ বছরে বাগদাদির কথা তেমনভাবে শোনা যায়নি। বরং, তা মার্কিন গোয়েন্দাদের হাতেই সীমাবদ্ধ ছিল।
পরিবারের ধর্মীয় পরিবেশ জোরালো প্রভাব ফেলেছিল বাগদাদির উপর। ইরাকে মুসলিম ব্রাদারহুড আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েছিলেন বাগদাদির কাকা। তিনিই জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সময়েই মুসলিম ব্রাদারহুডে যোগ দেয় বাগদাদি। তবে, শুধুমাত্র সেই গণ্ডিতেই আটকে থাকেনি সে। ২০০০ সাল নাগাদ সালাফি জিহাদিদের সঙ্গে যোগ দেয় বাগদাদি। মার্কিন গোয়েন্দা সূত্র অনুযায়ী, ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০০ সালের মধ্যেই আফগানিস্তানে জিহাদি প্রশিক্ষণ নেয় বাগদাদি। নব্বইয়ের দশকে উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় ছাত্র ছিল বাগদাদি। ২০০৩ সালে মার্কিন বাহিনী যখন ফের ইরাকে অভিযান শুরু করে তখন বাগদাদি অবশ্য পুরোপুরি জঙ্গি। ২০০৪ সালে তাকে প্রথম এবং শেষবারের জন্য গ্রেপ্তার করেছিল মার্কিন বাহিনী। পাঠানো হয়েছিল বুক্কা ক্যাম্পে, সেখানে ১০ মাস কাটায় বাগদাদি। তখন বেশিরভাগ সময়ই ধর্মীয় চর্চা করত বাগদাদি। সেই সঙ্গে বিভিন্ন বিরোধী জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির নেতাদের সঙ্গেও তার যোগাযোগ ঘটে। বুক্কা ক্যাম্প থেকে ছাড়া পাওয়ার পর ইরাকের আল কায়দা গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ করে বাগদাদি। যদিও, পরে ওই জঙ্গি সংগঠন ভেঙে দিয়ে তার নাম রাখা হয় আইএস। বিরোধী গোষ্ঠীগুলিকে এক জায়গায় আনার ক্ষমতা, ধর্মীয় পড়াশোনা- সমস্ত কিছু বাগদাদিকে নেতা হিসাবে উঠে আসতে সাহায্য করেছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.