সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বহু টানাপোড়েনের পরও নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় থেকে রাজকীয় পদ ছেড়েছিলেন ব্রিটেনের ছোট রাজকুমার হ্যারি এবং তাঁর স্ত্রী মেগান মর্কেল। এবার রাজকীয় উপাধিটুকু থেকেও বেরিয়ে এলেন দম্পতি। এবার থেকে ডিউক অ্যান্ড ডাচেস অফ সাসেক্সের আগে ‘রাজকীয়’, ‘মাননীয়’ – এই সম্মানসূচক শব্দগুলি আর চলবে না। একেবারে সাধারণ ব্রিটিশের পরিচয় নিয়ে থাকতে হবে তাঁদের। শনিবার বাকিংহাম প্যালেস থেকে বিবৃতি দিয়ে একথা জানিয়ে দিয়েছেন রানি এলিজাবেথ। রাজপরিবারের বাইরেই অধিকাংশ সময় কাটাবেন হ্যারি, মেগান এবং তাঁদের ছেলে আর্চি। অতএব, পাকাপাকিভাবে ব্রিটিশ রাজপরিবারের বিচ্ছেদ হয়েই গেল চার্লস-ডায়নার ছোট ছেলের।
রাজকীয় আভিজাত্যের বাইরে বেরিয়ে আরও স্বনির্ভর হতে চেয়েছিলেন বাকিংহামের ছোট রাজপুত্র হ্যারি। স্ত্রী, পুত্রকে নিয়ে কানাডায় থাকার পরিকল্পনা করেছিলেন। পরিবারের কাউকে কিছু না জানিয়ে নিজেদের এই সিদ্ধান্তের কথা আচমকাই ঘোষণা করে দিয়েছিলেন হ্যারি-মেগান। তা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছিল রাজপ্রাসাদের অন্দরে এবং বাইরে। জট কাটাতে আসরে নেমে হ্যারির ঠাকুমা, পরিবারের বর্তমান কর্ত্রী রানি এলিজাবেথও ছোট নাতির সিদ্ধান্তকে কার্যত মান্যতা দিতে বাধ্য হয়েছিলেন। বিবৃতি দিয়ে তিনি জানিয়েছিলেন, নতুন জীবন শুরু করতে চায় হ্যারি। তাঁর এই সিদ্ধান্তের পাশে পরিবারের সকলেই রয়েছেন। তবে রাজপরিবার ছেড়ে বেরিয়ে গেলে যে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাগুলোও আর পাবেন না হ্যারি-মেগান, তাও স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন রানি এলিজাবেথ। ডিউক অ্যান্ড ডাচেস অফ সাসেক্সের নামে যে পাবলিক ফান্ড আছে, তাও তাঁরা ব্যবহার করতে পারবেন না। চলতি বছরের বসন্ত থেকেই লাগু হয়ে যাবে এই নিয়ম।
শনিবারের বিবৃতিতে রানি এলিজাবেথ জানিয়েছেন, ”গত দু’বছর ধরে ওরা স্বনির্ভর হওয়ার জন্য অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। অনেক আলাপ-আলোচনার পর আমরা যে ওদের পাশে দাঁড়াতে পেরেছি, ওদের স্বাধীন জীবনযাপনের সুযোগ দিয়েছি, তার জন্য পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও খুশি। ওরা ভাল থাকলেই, আমরা ভাল থাকব।” হ্যারি-মেগানের ব্যক্তিগত জীবনকে সংবাদমাধ্যমের অতি কৌতুহল যাতে কোনওভাবে বিঘ্নিত না করে, সে সম্পর্কেও প্রচ্ছন্ন সতর্কবার্তা দিয়ে রাখলেন রানি। একইসঙ্গে এই বিতর্কে ইতি টানতে চাইলেন। বাকিংহাম প্যালেস সূত্রে খবর, সম্প্রতি ছোট ছেলেকে বোঝানোর পর্বে কথোপকথনে হ্যারি নাকি জানিয়ে দিয়েছেন, জনগণের দেওয়া অর্থের উপর নির্ভর করবেন না তাঁরা। নিজেরাই আয় করে নিজেদের জীবন চালাবেন। উইন্ডসর ক্যাসলে ফ্রগমোর কটেজ, অর্থাৎ হ্যারি-মেগানের বাসস্থানটি সংস্কারের জন্য যে ৩১ লক্ষ ডলার খরচ হয়েচে, সেই অর্থ তাঁরা শোধ করে দিতে চান।
যদিও হ্যারি-মেগানের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কয়েকটি বিষয় এখনও অস্পষ্ট। পরবর্তী সময়ে রাজপরিবারের কোষাগার থেকে তাঁদের প্রাপ্য কতটুকু, রাজপরিবারের নামে ব্যবসার লভ্যাংশই বা কতটা পাবেন ছোট রাজকুমার, তা নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। এদিকে, ‘সাসেক্স রয়্যাল’ ব্র্যান্ডের জন্য আলাদা করে নিজেদের নামে নথিভুক্তির জন্য আবেদন জানিয়েছেন হ্যারি-মেগান। অর্থাৎ আইনি জট এখনও কিছু রয়ে গিয়েছে। ব্রেক্সিট পাশ হয়ে যাওয়া ব্রিটেনে সংবাদমাধ্যমের একাংশ হ্যারি-মেগানের এই পারিবারিক বিচ্ছেদকে ‘মেগজিট’ বলে অ্যাখ্যা দিয়েছে। আগামী সপ্তাহে হ্যারির উড়ে যাওয়ার কথা কানাডা, যেখানে স্ত্রী মেগান, ছেলে আর্চিকে নিয়ে রয়েছেন তাঁর মায়ের কাছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.