ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত আট মাস ধরে ইজরায়েলি সেনার অভিযানে ‘ধ্বংসস্তূপে’ পরিণত হয়েছে গোটা গাজা ভূখণ্ড। কিন্তু এই যুদ্ধ থামেনি। আন্তর্জাতিক মহলের প্রবল চাপ, ইন্টারন্যাশনাল কোর্টের নির্দেশ সব কিছু উপেক্ষা করে গাজায় আক্রমণ শানাচ্ছে ইজরায়েল। এবার তা আরও তীব্র হয়েছে। ফলে কার্যত কোনঠাসা হয়ে গিয়েছে হামাস জঙ্গিরা। সঙ্গে জারি রয়েছে মৃত্যুমিছিল। এই পরিস্থিতিতে প্যালেস্টাইনের জেহাদি সংগঠনটির কাতর আর্জি, যদি লড়াই থামায় ইজরায়েল তাহলে তারা সমস্ত চুক্তি মেনে নেবে। তাহলে রণক্ষেত্রে হার স্বীকার করে নিল হামাস?
এই মুহূর্তে প্যালেস্তিনীয়দের ‘শেষ আশ্রয়’ রাফাতে ঢুকেও হামলা চালাচ্ছে ইজরায়েল। চলতি সপ্তাহে সেখানকার একাধিক শরণার্থী শিবিরে ইজরায়েলি সেনার ‘অগ্নিবর্ষণে’ প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় পঞ্চাশের উপর মানুষ। অন্যদিকে, ইজরায়েলের হাতে খতম হচ্ছে একের পর হামাস জঙ্গি। মাটির নিচের টানেল থেকে শুরু করে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে জেহাদিদের ডেরা। এরই মধ্যে গাজার গুরুত্বপূর্ণ ‘ফিলাডেলফিক করিডোরে’র নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে তেল আভিভ। রয়টার্স সূত্রে খবর, এই পরিস্থিতিতে হামাসের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ‘ইজরায়েল যদি যুদ্ধ থামাতে সম্মত হয়, প্যালেস্তিনীয়দের মৃত্যু বন্ধ হয় তাহলে সবরকম চুক্তিতে আমরা সম্পূর্ণ সহমত হব।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘যুদ্ধবিরতি নিয়ে যেসব আলোচনা হচ্ছে আমরা আর তাতে থাকতে রাজি নই। ক্রমগত এইসব বৈঠক হচ্ছে, যার মধ্যেই আমাদের মানুষদের গণহত্যা হচ্ছে। অনাহারে মানুষ ভুগছে। যারা মধ্যস্থতা করছে তাদের আমরা জানাতে চাই, যদি এই যুদ্ধ বন্ধ হয় তাহলে আমরা সবরকম চুক্তিতে রাজি। পণবন্দিদের মুক্তির চুক্তিতেও আমাদের সম্মতি রয়েছে।’ গত আট মাস ধরে চলতে থাকা এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের অবসান চাইছে সকলে।
বলে রাখা ভালো, চলতি মাসে মিশরের রাজধানী কায়রোতে একটি শান্তি বৈঠক হয়েছিল। সেখানে গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করতে হামাস ও ইজরায়েল দুপক্ষই নিজেদের প্রতিনিধি পাঠিয়েছিল। যা নিয়ে হামাসের তরফে জানানো হয়, “যারা এখানে মধ্যস্থতা করছে তারা কিছু প্রস্তাব দিয়েছিল। যার বেশ কয়েকটিতে ইজরায়েল আপত্তি জানিয়েছে। ফলে এখন সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ ওদের। বল ইজরায়েলের কোর্টেই রয়েছে।” এর আগে একাধিকবার মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতায় চুক্তিতে সম্মত হয়েছিল হামাস। যা প্রত্যেকবারই নাকচ করে দিয়েছেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
উল্লেখ্য, গত এপ্রিল মাসেই রাফায় ঢুকে পড়েছিল ইজরায়েলের ট্যাঙ্কবাহিনী। রাফা বর্ডার ক্রসিংয়ের প্যালেস্তিনীয় অংশও দখল করে নেয় তারা। এবার মধ্য রাফার প্রাণকেন্দ্র আল-আওদা শহরে ঢুকে ঘাঁটি গেড়েছে ইজরায়েলি ট্যাঙ্কবাহিনী। সেখান থেকে আরও অন্যান্য শহরের দিকে অগ্রসর হচ্ছে তারা। লক্ষ্য একটাই। হামাসের ডেরা খুঁজে ‘অগ্নিবর্ষণ’ করা। এই মুহূর্তে গাজার যা পরিস্থিতি তাতে অভিযান সম্পূর্ণ করতে আরও ৭ মাস সময় লাগবে বলেই ধারণা করছে ইজরায়েলি ফৌজ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.