ফাইল ফটো
সুব্রত বিশ্বাস: ‘কথায় আছে স্বভাব যায় না ম’লে।’, তা সে যে পরিস্থিতিই হোক, করোনা বা লকডাউনের মতো সংকটেও এক শ্রেণির পুলিশকর্মী অসাধু উপায়ে টাকা আয় করতে ব্যস্ত। অভিযোগ, অসহায় পরিযায়ী শ্রমিকদের টিকিট কেড়ে তা দালালদের হাতে তুলে দিয়ে মোটা মুনাফা লুটছে পুলিশকর্মীদের একাংশ। খোদ মুম্বই স্টেশনের এই দশায় চক্ষু চড়কগাছ হয়েছে অনেকের। অভিযোগ পৌঁছে গিয়েছে খোদ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে। মুম্বই পুলিশ কর্তারা ‘দালাল গ্যাং’-এর বিরুদ্ধে অভিযান শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন। দালালদের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
পরিযায়ী শ্রমিকদের অভিযোগ, মুম্বইয়ের ওয়াডালা থানা তাঁদের কুপন দিয়ে এলটিটি বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে আসে। ট্রেনের টিকিট দিয়ে তা পরে ফিরিয়ে নেয়। সেই টিকিট চলে যাচ্ছে দালালদের হাতে। তারপর তা অত্যাধিক দামে অন্য শ্রমিকদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। পাশাপাশি শ্রমিকদের বরাদ্দ কুপন ও চোরাগোপ্তা ভাবে দালালদের হাতে আসছে। যা মোটা দামে বিক্রি করা হচ্ছে অন্য শ্রমিকদের কাছে। এই লেনদেনের বিস্তারিত ফুটেজ প্রধানমন্ত্রী থেকে রেলমন্ত্রীর কাছে গিয়ে পৌঁছেছে। মুম্বই পুলিশের হাতে ভিডিওটি পৌঁছনোর পর রীতিমতো বিচলিত প্রশাসন। মোটা টাকা লেনদেন দেখাও যাচ্ছে। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
উত্তরপ্রদেশের পরিযায়ী শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, ওয়াডালা থানায় বাড়ি ফেরার জন্য তাঁরা নাম নথিভুক্ত করিয়ে ছিলেন। নির্ধারিত দিনে তাঁদের সিল থাকা কুপন দেয় থানা। এরপর বাসে তাঁদের এলটিটি স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ট্রেনের টিকিট দেওয়া হয়। যা নিয়ে তাঁরা স্টেশনে প্রবেশ করতে পারবেন। কিন্তু স্টেশনে প্রবেশের আগেই ওই থানার পুলিশরা তাঁদের টিকিট এক প্রকার জোর করে নিয়ে নেয়। ফলে তাঁরা স্টেশনে ঢুকতে পারেননি। পুলিশ টিকিটগুলি দালালদের হাতে তুলে দেয়। এজন্য প্রতি টিকিট পিছু হাজার টাকা করে নেয়। দালালরা সেই টিকিট আরও মোটা দামে অন্য শ্রমিকদের কাছে বিক্রি করে বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, মুম্বইতে একশ্রেণির দালাল চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। কুপন পাইয়ে দেবে বলে যারা শ্রমিকদের থেকে আগাম টাকা নিচ্ছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের অভিযোগ, আগে ফেরার আশায় বহু শ্রমিক নির্দ্বিধায় মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে দিচ্ছেন নিরুপায় হয়েই। পরিযায়ী শ্রমিকদের অভিযোগ, মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গায় লক্ষ লক্ষ শ্রমিক আটকে রয়েছেন। যে কোনও উপায়ে তাঁরা বাড়ি ফিরতে চান। এই সুযোগকে অস্ত্র করে মাঠে নেমেছে এক শ্রেণির দালাল। যারা নির্দ্বিধায় লুটপাট চালাচ্ছে। এদের সঙ্গে সখ্য রেখেছেন পুলিশকর্মীদের একাংশ। যাদের সহযোগিতায় এ ধরনের দালাল চক্র সক্রিয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.