সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০ বছর পর দেশ তীব্র সংকটে। তালিবান জমানায় চূড়ান্ত অরাজকতা আফগানিস্তানে (Afghanistan)। প্রাণে বাঁচতে কাতারে কাতারে আফগানি স্বদেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন। কোথায় যাবেন, কোন মুলুকে ঠাঁই পাবেন, তার বিন্দুবিসর্গও জানেন না। তা সত্ত্বেও তালিবান বাহিনীর কবল থেকে সুরক্ষার স্বার্থে দৌড়ে চলেছেন আম আফগানরা। ইতিমধ্যে ইউরোপের (Europe) দেশগুলির কাছে গুচ্ছ গুচ্ছ আবেদন জমা পড়েছে আফগানদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য। তবে তারা কতটা পাশে থাকবে, তা নিয়ে ঘোর সংশয়ের মাঝে আরও নেতিবাচক বার্তা দিল গ্রিস (Greece)। আফগান শরণার্থীদের ঢল নামতে পারে, এই আশঙ্কায় গ্রিস-তুরস্ক সীমান্ত পাঁচিল দিয়ে ঘিরে ফেলল। অর্থাৎ গ্রিস বুঝিয়ে দিল, সেই দেশে উদ্বাস্তু আফগানদের ‘নো এন্ট্রি’।
শুক্রবার গ্রিসের জনসুরক্ষা মন্ত্রী মিকালিস ক্রিসোকোইডিস জানিয়েছেন, সীমান্তে ৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে খুব শক্তপোক্তভাবে ঘেরা হয়েছে, যা প্রায় প্রাচীরের (Wall) সমান। কারণ, ভবিষ্যতের জন্য আগাম সুরক্ষা নিয়ে রাখাতেই বিশ্বাসী তাঁরা। ফলে এই মুহূর্তে দেশ ছেড়ে যদি ইউরোপের দিকে স্রোতের মতো ধেয়ে যায় আফগান শরণার্থীদের (Migrants) ঢল, সেক্ষেত্রে গ্রিসের দরজা অন্তত তাঁদের জন্য বন্ধ। অন্যান্য দেশও সতর্ক। সেখানেও আফগানদের কতটা আশ্রয় মিলবে, সেক্ষেত্রে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে কি না, এমন হাজারও সংশয় থেকেই যাচ্ছে।
আসলে আফগানিস্তানে তালিবান বাহিনী একটু একটু করে ক্ষমতা দখলের পথে এগোতেই তুরস্ক সবার প্রথম এ বিষয়ে সতর্ক হয়ে ওঠে। গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কাইরিওতোস মিতসোতাকিসকে বার্তা পাঠিয়ে তুরস্কের (Turkey) প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোগান পরিস্থিতির কথা জানান। তাঁর পরামর্শ ছিল, এখনই ইউরোপীয় দেশগুলো সতর্ক পদক্ষেপ না নিলে ২০১৫-১৬র মতো পরিস্থিতি হবে। সেসময় মধ্যপ্রাচ্য ও পশ্চিম এশিয়ার একাধিক দেশ যুদ্ধবিধ্বস্ত হয়ে পড়ায় দলে দলে উদ্বাস্তু ঢুকে পড়েছিল ইউরোপের মাটিতে। আন্তর্জাতিক নীতি মেনে তাঁদের ঠাঁই দিতে হয়। এ বিষয়ে সবচেয়ে বেশি চাপ ছিল গ্রিস, জার্মানির উপর। সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার তাই বাড়তি সতর্ক গ্রিস। কোনও আঁচ পড়ার আগেই পাঁচিল তুলে নিরাপত্তার ঘেরাটোপে নিজেদের মুড়ে ফেলল।
আসলে এসব যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলি থেকে শরণার্থীরা প্রথমে ভূমধ্যসাগর হয়ে ইউরোপ ভূখণ্ডেই প্রবেশের চেষ্টা করে। লিবিয়া, সিরিয়ার গভীরতম সংকটেও পরিস্থিতি এমনটাই হয়েছিল। সেসময় প্রচুর মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন ইউরোপের একাধিক দেশে। পরবর্তী সময়ে অবশ্য তার চাপ বুঝেছিল সেসব দেশ। ফলে এবার অনেক আগে থেকে সতর্ক তারা। কিন্তু শরণার্থীদের কী হবে? নিজভূম থেকে উৎখাত হয়ে পরবাসে গিয়েও যে ঠাঁই নেই। তাঁদের জন্য সকলের দরজা যে বন্ধ!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.