সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: “আমি এমন মৃত্যু চাই, যা শুধু ব্রেকিং নিউজ হবে না। এমন মৃত্যু আমি বরণ করতে চাই যা গোটা বিশ্বকে নাড়িয়ে দেবে। সময়ের নিক্তিতে যা চাপা পড়ে যাবে না।” কয়েক মাস আগে সোশাল মিডিয়ায় লেখা কথাগুলোই সত্যিই হয়ে গেল গাজার সাংবাদিক ফতিমা হাসুনার জীবনে। বিয়ের আগের দিনই ইজরায়েলি হানায় নিহত হলেন ২৫ বছরের সাহসিনী।
যুদ্ধে তরুণী সাংবাদিকের বলি হওয়ার কথা সারা বিশ্বকে সত্যিই নাড়িয়ে দিয়েছে। নির্মমভাবেই সেই ইচ্ছা পূরণ হল ফতিমার। মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টা আগে ফতিমা জানতে পেরেছিলেন যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় তাঁর জীবন নিয়ে তৈরি তথ্যচিত্র দেখানো হবে কানের অ্যাসিড ফিল্ম ফেস্টিভালে। গত দেড় বছর ধরে উত্তর গাজায় ইজরায়েল-হামাসের যুদ্ধের ক্ষতচিহ্ন ক্যামেরাবন্দি করছিলেন ফতিমা। ইজরায়েলি সেনার বোমাবর্ষণ, তাঁদের ধ্বংস হয়ে যাওয়া বাড়ির স্তূপ, ১০ আত্মীয়র নিহত হওয়ার দৃশ্য লেন্সে ধরছিলেন। জানতেন, মৃত্যু তাঁর কাছেই দাঁড়িয়ে। তবু দুনিয়ার সামনে তাঁর গল্প, গাজার মানুষের গল্প পৌঁছে দিতে মরিয়া ছিলেন।
ফতিমার বিয়ের ঠিক একদিন আগে অর্থাৎ গত বুধবার (১৬ এপ্রিল) ইজরায়েল সেনা টার্গেট করে ফতিমার বাড়ি। বোমাবর্ষণে নিমেষে ধূলিসাৎ হয়ে যায় ফতিমার বাড়ি। বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় ফতিমা ও তাঁর পরিবার। মৃতদের মধ্যে ছিলেন ফতিমার অন্তঃসত্ত্বা দিদিও। ফতিমার মৃত্যুর খবরে দুঃখপ্রকাশ করে ফ্রান্সের ওই ফিল্ম ফেস্টিভাল কর্তৃপক্ষ লেখে, ‘ওঁর দৃঢ়তার মতোই ম্যাজিক ছিল ওঁর হাসিতেও। গাজার ছবি তুলে, বোমার বদলে ক্ষুধার্ত ও শোকার্তদের খাবার বিলিয়ে ও ভয়াবহ সব মূহূর্তের সাক্ষী থেকেছে। ওঁর জন্য সব সময় আমরা ভয়েই থাকতাম।’গত মার্চে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে ফের নতুন করে সংঘর্ষ শুরু করেছে ইজরায়েল। শুক্রবারই ইজরায়েলের বোমা হামলায় গাজায় নিহত হয় ৩০ জন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.