সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নাইজারের পর এবার সেনা অভ্যুত্থান গ্যাবনে। বুধবার জাতীয় টেলিভিশনে ক্ষমতা দখলের কথা ঘোষণা করেছে সে দেশের সেনাবাহিনী। এই ঘটনার জেরে মধ্য আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত গ্যবনে গৃহযুদ্ধ শুরু হতে পারে বলে আশঙ্কা।
বিবিসি সূত্রে খবর, চলতি আগস্ট মাসেই গ্যাবনের নির্বাচন কমিশন বর্তমান শাসক আলি বঙ্গো অনডিম্বাকে ফের প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত ঘোষণা করে। এরপরই সেনা বিদ্রোহের খবর পাওয়া গিয়েছে। জাতীয় টেলিভিশন চ্যানেল ‘গ্যাবন ২৪’-এ বিদ্রোহী সেনাকর্তারা দাবি করেছেন, দেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রতিনিধিত্ব করছেন তাঁরা। বিগত সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করা হল বলেও ঘোষণা করেন তাঁরা। পরবর্তী নোটিস না দেওয়া পর্যন্ত দেশের সব সীমান্ত বন্ধ থাকবে বলেও জানায় বিদ্রোহীরা।
গ্যাবনের (Gabon) রাজধানী লিব্রেভিলে তীব্র গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে বলে জানিয়াছে রয়টার্স। বিদ্রোহী সেনাকর্তারা বলছেন, “গ্যাবনের জনগণের নামে বর্তমান শাসনের অবসান ঘটিয়ে শান্তি রক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” গত শনিবার প্রেসিডেন্ট, পার্লামেন্টে ও আইন পরিষদগুলোর নির্বাচন হওয়ার পর থেকেই দেশটিতে তীব্র উত্তেজনা চলছিল। বঙ্গোর পরিবার ৫৬ বছর ধরে দেশটির ক্ষমতা দখল করে রয়েছে, যা নিয়ে চলছে বিক্ষোভ। বঙ্গো ক্ষমতায় থাকতে চাইলেও দেশটির বিরোধীদল পরিবর্তন চাইছে।
বলে রাখা ভাল, খনিজ তেল এবং কোকোর মতো কৃষিপণ্যে সমৃদ্ধ হলেও গ্যাবন দারিদ্র্যপীড়িত। জনগণের এহেন দুর্দশার নেপথ্যে রাজনেতাদের দুর্নীতিই মূলত দায়ী বলে মনে করা হয়। এবারের নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। কোনও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকও এই নির্বাচনে হাজির ছিলেন না।
উল্লেখ্য, গত জুলাই মাসে সেনা অভ্যুত্থান হয় নাইজারে। ইউরেনিয়াম, কয়লা, সোনার মতো প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে দেশটিতে। দীর্ঘদিন উপনিবেশ থাকার পর ১৯৬০ সালে ফ্রান্সের হাত থেকে স্বাধীনতা পায় নাইজার। তবে আজও দেশটিতে ফরাসি প্রভাব রয়েছে। অভিযোগ, আজও দেশটির সম্পদ লুট করছে প্যারিস। এই প্রেক্ষাপটে, নাইজারে সেনা অভ্যুত্থান ঘটে। রাজধানী নিয়ামেতে নিজের প্রাসাদে রক্ষীদের হাতেই আটক হন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ বাজুম। ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আমেরিকা (America)। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে আফ্রিকান ইউনিয়ন ও আমেরিকা। এই অভ্যুত্থানের নেপথ্যে রাশিয়ার ওয়াগনার গ্রুপের হাত রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.