সাংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সময়টা মোটেও ভাল যাচ্ছে না ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁর। পেনশন নীতি নিয়ে বিক্ষোভ না থামতেই এবার গণইস্তফার হুঁশিয়ারি দিলেন ফ্রান্সের ছ’শোরও বেশি চিকিৎসক। স্বাস্থ্য খাতে বাজেটে বরাদ্দ কমায় আন্দোলনের পথে হাঁটছেন তাঁরা।
ইতিমধ্যে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁকে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন ৬৬০ জন চিকিৎসক। তাঁদের অভিযোগ, স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যাপক ছাঁটাইয়ের জেরে ও হাসপাতালে কমে আসা বেডের সংখ্যায় ফ্রান্সের সরকারি চিকিৎসালয়গুলিতে পরিষেবা প্রায় ভেঙে পড়েছে। চিঠিতে ডাক্তারদের আরও দাবি, প্রায় ন’মাস ধরে সরকারই হাসপাতালে চলা বনধ তুলতে আলোচনা শুরু করুক সরকার। গত মার্চ মাসে জরুরি বিভাগে প্রথম এই বনধ শুরু হয়। ক্রমে তা শিশুবিভাগ থেকে শুরু করে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। চলতি মাসে বিক্ষোভে যোগ দেন জুনিয়র ডাক্তাররাও। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ জোরাল করতে মঙ্গলবার ব্যানার হাতে রাস্তায় নামেন চিকিৎসকরা। তাতে লেখা রয়েছে, ‘পাবলিক হসপিটালস: আ লাইফ থ্রেটনিং এমার্জেন্সি।’
২০০৫ সাল থেকেই ফ্রান্সে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে ধাপে ধাপে প্রায় ৯০০ কোটি ইউরো বরাদ্দ কমেছে। ফলে সরকারি হাসপাতালগুলির অবস্থা ক্রমে খারাপ হচ্ছে। এদিকে, পেনশন নীতি নিয়ে বিক্ষোভ, রেলকর্মীদের প্রতিবাদের সঙ্গে এবার ডাক্তারদের আন্দোলন। সব মিলিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ। গত মাসে চিকিৎসকদের বরাদ্দ বাড়ানোর তথা নয় পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। আগামী তিন বছরে ১৫০ কোটি ইউরো অতিরিক্ত দেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি। তবে তাতে চিঁড়ে ভেজেনি।
উল্লেখ্য, চলতি মাসের শুরুতেই ফরাসি প্রেসিডেন্টের পেনশন ব্যবস্থা সংস্কারের প্রস্তাব ঘিরে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে প্যারিস। রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ সাব্যস্ত করেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, ফ্রান্সের অধিকাংশ মানুষ পেনশন ব্যবস্থায় সংস্কারের পক্ষে। কিন্তু, জটিল এই বিষয়টি সঠিকভাবে সামাল দেওয়ার ম্যাক্রঁ সরকারের ক্ষমতা ও বিচক্ষণতা নিয়ে অনেকেই সন্দিহান। বিষয়টি আরও স্পষ্ট ভাবে ধরা পড়েছে সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায়। যাতে দেখা গিয়েছে ফ্রান্সের ৭৬ শতাংশ মানুষ পেনশন ব্যবস্থায় বদল চান, কিন্তু ৬৪ শতাংশ মানুষই মনে করেন এটা সরকার সফল ভাবে করতে পারবে না। জ্বালানির ওপর কর বৃদ্ধির প্রতিবাদে গত বছরের নভেম্বর মাসে ফ্রান্সের শহরগুলিতে প্রবল বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে তা প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁর বাণিজ্যনীতির বিরুদ্ধে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.