সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নজির গড়ে প্রাক্তন পাক প্রেসিডেন্ট তথা একনায়ক পারভেজ মুশারফকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিল পাকিস্তানের একটি বিশেষ আদালত। মঙ্গলবার মুশারফের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের একটি মামলায় এই সাজা ঘোষণা করে তিন বিচারপতির বেঞ্চ।
পাক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ২০০৭ সালে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক কার্যকলাপ ও বেআইনিভাবে জরুরি অবস্থা লগু করার নিয়ে ২০১৩ সালে মুশারফের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তৎকালীন নওয়াজ শরিফ সরকার। তাঁর বিরুদ্ধে দেশ ও সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়। শুনানি শেষে ২০১৪ সালের মার্চ মাসে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। তবে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন ও অন্যান্য আইনি জটিলতায় সাজা ঘোষণা ক্রমে পিছিয়ে যায়। এহেন পরিস্থিতিতে ২০১৬ সালে দেশ ছাড়েন প্রাক্তন পাক সেনাপ্রধান। বর্তমানে দুবাইয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন মুশারফ বলে খবর। উল্লেখ্য, সরকার ও আদালতের মধ্যে চলা টানাপোড়েনের শেষে চলতি মাসের ৫ তারিখ বিশেষ আদালত জানিয়েছিল, ডিসেম্বরের ১৭ তারিখ বা আজ শুনানি শেষে সাজা ঘোষণা করা হবে। এই বিশেষ আদালতের তিন সদস্যের বেঞ্চের শীর্ষে রয়েছেন পেশাওয়ার হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি ওয়াকার আহমেদ শেঠ।
উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালে থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের মসনদে ছিলেন মুশারফ। কারগিল যুদ্ধে হারের পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের উপর দায় চাপিয়ে ক্ষমতা দখল করেন তিনি। তাঁর আমলেই পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে ভারত বিরোধী কার্যকলাপ তুঙ্গে পৌঁছায়। ২০০১ সালে ৯/১১ হামলার পর মুশারফের নেতৃত্বে আফগানিস্তানে মার্কিন লড়াইয়ে যোগ দেয় পাকিস্তান। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, তাঁর আমলে বেশ মজবুত হয় পাক অর্থনীতি। ২০০২ সালে প্রসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হলেও প্রতিশ্রুতি মতো সেনাপ্রধানের পদ ছাড়তে অস্বীকার করেন মুশারফ। ২০০৭ সালে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের হওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে বরখাস্ত করেন তিনি। তারপর থেকেই প্রাক্তন সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের হওয়া বইতে শুরু করে। বাধ্য হয়ে গদি ছাড়তে হয় তাঁকে। এদিকে, বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই রায় ঘোষণার পর আপাতত দেশে ফিরবেন না প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মুশারফ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.