সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের শিরোনামে ব্রিটিশ রাজপরিবার। প্রায় আড়াই দশক আগের এক বিতর্কিত সাক্ষাৎকার ঘিরে আবার আলোয় যুবরানি ডায়না (Princess Diana)। বছর পঁচিশেক আগে ব্রিটেনের যুবরানির এক ‘বিতর্কিত’ সাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য তাঁর ছেলে প্রিন্স হ্যারি ও উইলিয়ামের কাছে অবশেষে ক্ষমা চাইলেন বিবিসি-র প্রাক্তন সাংবাদিক মার্টিন বশির। শুধু তাই নয়, এই বিতর্কের জেরে ব্রিটিশ ন্যাশনাল গ্যালারির প্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন টনি হল।
নিজের খোলামেলা জীবনযাপন ও প্রাণোচ্ছ্বল স্বভাবের জন্য বরাবরই সংবাদমাধ্যম ও আমজনতার আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন ডায়না। অনেকেই অবশ্য তাঁর এই আচরণ রাজপরিবারের সদস্যের পক্ষে অশোভন বলে মনে করতেন। স্বামী চার্লসের সঙ্গে তাঁর দাম্পত্য জীবনের নানা ঘটনাও লোকের মুখে ঘোরাফেরা করত। এহেন পরিস্থিতিতে ১৯৯৫ সালে প্রিন্স ডায়নার একটি সাক্ষাৎকার নেন বিবিসির সাংবাদিক মার্টিন বশির। সেখানে নিজের দাম্পত্য জীবন নিয়ে অনেক গোপন কথা বলে ফেলেন যুবরানি। স্বামী চার্লসের সঙ্গে প্রেমহীন সম্পর্ক থেকে নিজের প্রেম, সমস্ত কিছু নিয়ে সেদিন সব বলেছিলেন ডায়না। রাখঢাক না করে জানিয়েছিলেন, বিয়ের প্রথম থেকেই তাঁদের মধ্যে তৃতীয় জন ছিলেন। অভিযোগ ওঠে সেই সাক্ষাৎকারের জেরেই বিবাহ বিচ্ছেদ হয় ডায়নার। এমনকী ছল-চাতুরি করে বশির ওই সাক্ষাৎকারের জন্য ডায়ানাকে রাজি করান বলেও অভিযোগ ওঠে। ডায়ানার ভাই আর্ল স্পেন্সার এই সাক্ষাৎকারের বছর দুয়েকের মাথায় ডায়নার দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পরেই বিবিসি-র কাছে তদন্তের দাবি করেন। শুরু হয় তদন্ত। সেই তদন্তের দায়িত্বে টনি হলও ছিলেন। ওই ঘটনার নৈতিক দায় নিয়ে ন্যাশনাল গ্যালারির প্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি।
এদিকে, বিতর্কের মাঝে ওই সাক্ষাৎকারের জন্য প্রিন্স উইলিয়াম ও হ্যারির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন বিবিসির তৎকালীন সাংবাদিক মার্টিন বশির। লন্ডনের ‘সানডে টাইমস’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি ডায়নার কোনও ক্ষতি করতে চাইনি। এটা আমি বিশ্বাসও করি না যে, তাঁর আমি কোনও ক্ষতি করেছি। ডায়ানার জীবনে যা হয়েছে, তার সঙ্গে আমার সাক্ষাৎকারকে যুক্ত করাটা অযৌক্তিক। আমি ও আমার পরিবার ডায়ানাকে ভালোবাসি।” সম্প্রতি শারীরিক অসুস্থতার জন্য বিবিসি-র চাকরিতে ইস্তফা দিয়েছেন বছর আটান্নর বশির। তবে অনেকেই মনে করছেন এটা অনুতাপ। লন্ডন টাইমসের যে সাংবাদিক তাঁর সাক্ষাৎকার নিতে গিয়েছিলেন, সেই রোসামুন্ড উরউইনের দাবি, “দেখে মনে হবে, বশির এখন যেন সত্যিই এক ভগ্নহৃদয় মানুষ। তবে কেন জানি না মনে হল, লোকটা খুব ভাল অভিনেতাও।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.