সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সম্পর্কে টানাপড়েন সত্বেও মালদ্বীপে জরুরি পণ্যের জোগান বজায় রেখেছে ভারত। নয়াদিল্লির এহেন মানবিক পদক্ষেপে রীতিমতো আপ্লুত দ্বীপরাষ্ট্রের বিদেশমন্ত্রী মুসা জামির। দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব অটুট ও সময়পরীক্ষিত বলেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তিনি। কূটনীতিকদের মতে, প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর গলায় সবসময় ভারতবিরোধীতার সুর শোনা যায়। ফলে মালদ্বীপের বিদেশমন্ত্রী যেভাবে নয়াদিল্লির প্রশংসা করেছেন তাতে কার্যত মুখ পুড়েছে মুইজ্জুর।
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু যে চিনের হাতে তামাক খান সেকথা সকলের জানা। বেজিংয়ের উস্কানিতেই ভারতের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে মালে। দেশ থেকে ভারতীয় সেনা সরানোর নির্দেশ দেওয়া, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য এইরকম একাধিক বিষয়ে দিল্লির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে মালদ্বীপের। কিন্তু এই টানাপড়েনের মাঝেও পড়শি দেশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে রেখেছে ভারত। এই বিদেশনীতির জন্য শনিবার এক্স হ্যান্ডেলে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে জামির লিখেছেন, ‘ভারত অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের রপ্তানি জারি রেখেছে। এনিয়ে দুদেশের মধ্যে যে চুক্তি রয়েছে তা পুনর্নবীকরণ করেছে ভারত। এর জন্য বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরকে আন্তরিক ধন্যবাদ। ভারত সরকারকে ধন্যবাদ। এর মাধ্যমেই প্রমাণ হয় যে দুদেশের মধ্যে অটুট বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে।’
কিন্তু এত বিরোধ স্বত্বেও কেন পড়শি দেশ থেকে মুখ ফেরায়নি ভারত? বিশ্লেষকদের মতে, কৌশলগত দিক মালদ্বীপ ভারতের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে চিনের প্রভাব বৃদ্ধি হোক সেটা কোনওভাবেই চায় না দিল্লি। কিন্তু চিনপন্থী মুইজ্জু ক্ষমতায় আসার পরই ভারতের সঙ্গে মালের সম্পর্কে চির ধরেছে। যা নিয়ে ক্ষোভ বেড়েছে মুইজ্জু সরকারের অন্দরেই। ভারতবিরোধীতার বিরুদ্ধে সব হয়েছেন সেদেশের বিরোধীদলের অনেক নেতামন্ত্রীরা। এহেন পরিস্থিতিতে ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্রটির মানুষের কাছে নিজেদের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চায় না ভারত। তাই এখনও সেদেশে প্রয়োজনীয় পণ্যের জোগান বজায় রেখেছে কেন্দ্র। এর ফলে আরও বিপাকে পড়বেন মুইজ্জু।
উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে ভারতের সঙ্গে সংঘাতে জড়ানোর ফল হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে মালদ্বীপ। দ্বীপরাষ্ট্রে ভারতীয় পর্যটকের সংখ্যা রেকর্ড হারে কমে গিয়েছে। দিল্লির কাছে ঋণের পরিমাণও বিপুল। এর ফলে ক্ষোভের সঞ্চার হচ্ছে দ্বীপরাষ্ট্রের অন্দরে। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে গত মাসেই ভারতকে তাদের ‘ঘনিষ্ঠতম’ সঙ্গী বলে উল্লেখ করেন মুইজ্জু। পাশাপাশি আর্জি জানান, মালদ্বীপের ঋণ মকুব করে দিক নয়াদিল্লি। বলে রাখা ভালো, গত বছরের শেষ পর্যন্ত যা হিসেব ভারতের কাছে দ্বীপরাষ্ট্রের ঋণ প্রায় ৪০০.৯ মিলিয়ন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.