সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বৃষ্টি অরণ্যের আগুন পরিস্থিতি যতই স্বাভাবিক আছে বলে দাবি করুক ব্রাজিল প্রশাসন, উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়ে যাচ্ছে মিথ্যে। সেদেশেরই ন্যাশনাল স্পেস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তরফে ছবি প্রকাশ করে বলা হচ্ছে, এতদিন ২০০০টি জায়গা আগুনের উৎস ছিল। এবার সেই সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮৫৯। অর্থাৎ আগুন নেভার বদলে ছড়িয়ে যাচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত অন্তত ১২ লক্ষ
হেক্টর জমি।
এই সময়টা ব্রাজিলে শুখা মরশুম। যা আগুন নেভানোর পক্ষে প্রতিকূল। তবে এবছর ব্রাজিলে তুলনামূলকভাবে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। তা সত্ত্বেও এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগ বাড়ছে।যদিও একটা বিষয়ে পরিবেশবিজ্ঞানীরা একমত। এই অগ্নিকাণ্ড প্রাকৃতিক নয় একেবারেই। ব্রাজিল সরকারের মদতে নির্বিচার জঙ্গল সাফ করাই এর প্রধান কারণ।তাঁরা একেবারে হিসেবনিকেশ দিয়ে জানাচ্ছেন, সাধারণত আমাজন অঞ্চলের
১২ একর জমি চাষের জন্য অনুমোদনপ্রাপ্ত। কিন্তু এই জমির গণ্ডি পেরিয়ে কৃষকরা জঙ্গলের আরও ভিতরের দিকে চাষযোগ্য জমি তৈরি করেছেন। ফলে এখন পৃথিবীর বৃহত্তম চিরসবুজ অরণ্যে চাষযোগ্য জমির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ একর, যা প্রায়শয়ই আগুন জ্বলে ওঠার অন্যতম কারণ। আর ব্রাজিলের এই অবৈধ কাজের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পাশের একাধিক দেশ। বলিভিয়া, পেরু, ভেনেজুয়েলা, কলম্বিয়া,
ইকুয়েডর, গুয়েনা – বিভিন্ন দেশের বনাঞ্চলের অবস্থাও একই।
সম্প্রতি রাষ্ট্রসংঘের পরিবেশ সংক্রান্ত বিভাগের প্রকাশিত একটি সমীক্ষা থেকে জানা গিয়েছে, অরণ্য ধ্বংস করতে এই শুষ্ক মরশুমে বনাঞ্চলের ঘাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তারপর তা দাবানলের আকার নিয়ে অনেকটা অংশ সাফ করে দেয়। কলম্বিয়াতে আবার অন্য ব্যাপার। সেখানে বরাবরই বেআইনিভাবে কোকো চাষের রমরমা। এছাড়া মাদক উৎপাদন এবং পাচারে কলম্বিয়ার কুখ্যাতি বিশ্বজুড়ে। এবার এই সমস্ত
বিষয়টিও জুড়ে যাচ্ছে আমাজন অরণ্যের অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে।
আমাজনের অগ্নিকাণ্ডের জন্য বিশ্বের কাছে রীতিমতো ভিলেন বনে গিয়েছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো।খামখেয়ালিপনার জন্য তাঁকে ঠাট্টা করে নিরক্ষীয় অঞ্চলের ‘ট্রাম্প’ বলছেন সকলে। তাঁর সাফাই, এই অগ্নিকাণ্ডের জন্য দায়ী জলবায়ু পরিবর্তন। কৃষকদেরও তো জীবিকা নির্বাহ করতে হবে, তাই তাঁদের জন্য চাষের জমি তৈরি করে দেওয়া সরকারের কর্তব্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.