Advertisement
Advertisement

নিজের বাড়িতেই খুন ‘ফাদার অফ তালিবান’, উত্তপ্ত ইসলামাবাদ

মৌলবাদী নেতার মৃত্যুতে পাক রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোকজ্ঞাপন ঘিরে চড়ছে বিতর্ক৷

Published by: Tanujit Das
  • Posted:November 3, 2018 10:30 am
  • Updated:November 3, 2018 10:30 am  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাওয়ালপিণ্ডিতে নিজের বাড়িতেই আততায়ীর হাতে খুন হল পাকিস্তানের মৌলবাদী নেতা মৌলানা সামিউল হক৷ ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখা যায় ‘ফাদার অফ তালিবান’কে৷ উদ্ধার করে কাছের হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন৷ এই মৌলবাদী নেতার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই উত্তেজনা ছড়ায় ইসলামাবাদ ও রাওয়ালপিণ্ডিতে৷ দুই শহরে কার্যত তাণ্ডব চালায় তার অনুগামীরা৷ হকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি৷ এক জঙ্গি নেতার মৃত্যুতে রাষ্ট্র নেতাদের শোকপ্রকাশ করার ঘটনা বিরল৷ এই ঘটনা আবারও প্রকাশ্যে আনল যে মুখে না বললেও, আসলে সন্ত্রাসবাদ ও সন্ত্রাসবাদীদের উপরেই নির্ভর করে পাকিস্তান৷ এই সন্ত্রাসবাদী ও মৌলবাদী মতবাদের প্রচারকদের দেশের সম্পদ বলে মনে করে পাক প্রশাসন৷

[স্বস্তি ভারতের, ইরান থেকে তেল আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলল আমেরিকা]

Advertisement

এই মৌলবাদী নেতার ছেলে হামিদুল হক জানিয়েছে, সামিউল হকের নিরাপত্তার জন্য সর্বক্ষণের একজন নিরাপত্তারক্ষী থাকে৷ তবে ঘটনার সময় সে ঘরের বাইরে ছিল না, অন্যত্র ছিল৷ ফলে ঘরের ভিতরে হককে একা পেয়ে তার উপরে হামলা করে এক আততায়ী৷ ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয় এই মৌলবাদী নেতাকে৷ ছুরির ঘায়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে তার ক্ষতবিক্ষত শরীর৷ হামিদুল হকের বয়ানে আরও জানা গিয়েছে, একজনই হামলা চালিয়েছিল তার বাবার উপর৷ চেষ্টা করলেও সেই আততায়ীকে পাকড়াও করা যায়নি৷ এরপরেই সামিউলকে কাছের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ সেখানেই তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা৷ মৌলবাদী নেতার হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়তেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়তে থাকে ইসলামাবাদ ও রাওয়ালপিণ্ডির একাধিক স্থানে৷ রাস্তায় নেমে কার্যত তাণ্ডবলীলা চালায় এই জঙ্গি নেতার অনুগামীরা৷ ভাঙচুর করা হয় যানবাহন৷ বন্ধ করে দেওয়া হয় দোকানপাট৷ খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশের একটি টোলপ্লাজায় আগুন লাগিয়ে দেয় তার অনুগামীরা৷৷ যদিও সামিউলের অনুগামীদের কাছে শান্তি বজায় রাখার আরজি জানিয়েছে হামিদুল হক৷

[মহম্মদকে ‘অপমানে’ অভিযুক্ত আসিয়ার মুক্তিতে মৌলবাদীদের তাণ্ডব পাকিস্তানে]

দীর্ঘদিন ধরেই পাকিস্তানে মৌলবাদের শিক্ষা দিয়ে আসছিল সামিউল হক৷ পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে তার মৌলবাদী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি৷ সেখান থেকেই মৌলবাদ ও জেহাদি ভাবধারার শিক্ষা নিয়েছে বহু জঙ্গি নেতা৷ যারা পরে পাক তালিবান বা আফগানিস্তান তালিবানের শীর্ষ নেতা রূপে আত্মপ্রকাশ করেছে৷ ফলে মৌলানা সামিউল হককে ‘তালিবানের জনক’ বলা হয়৷ তার উসকানিমূলক মৌলবাদী শিক্ষা বহু যুবকে সন্ত্রাসবাদের প্রতি প্রলুব্ধ করেছে৷ জামাত-উলেমা-ই-ইসলাম নামের একটি মৌলবাদী সংগঠনেরও প্রতিষ্ঠাতা হল সামিউল হক৷ মৌলবাদী নেতার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন পাক রাষ্ট্রপতি আরিফ আলভি ও প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান৷ মৌলবাদী নেতার হত্যার ঘটনাকে পাকিস্তানের জন্য বড় ক্ষতি বলে ব্যাখ্যা করেছেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান৷ আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, মৌলবাদী নেতা বা জঙ্গি নেতার মৃত্যুতে পাক প্রধানমন্ত্রীর এই শোকজ্ঞাপনই বুঝিয়ে দেয় যে, সন্ত্রাসবাদের প্রতিরোধে পাকিস্তান আদৌ কতটা ইচ্ছুক৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement