সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইক-কমেন্টের আসক্তি যে কোন পর্যায়ে পৌঁছতে পারে তা দেখালেন আলজিরিয়ার এক ব্যক্তি। সম্প্রতি এক বাচ্চাকে নিয়ে তিনি যা করলেন তা রীতিমতো নজিরবিহীন। সোশ্যাল মিডিয়াতেই সে ঘটনার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়েছে।
কী করলেন ওই ব্যক্তি?
১৫ তলার উপর থেকে ঝুলিয়ে ধরলেন একটি বাচ্চাকে। একহাতে তাকে জানলার বাইরে ধরে, অন্য হাতে তুলেছেন ছবি। যে কোনও মুহূর্তে ঘটে যেত পারত বড়সড় দুর্ঘটনা। কিন্তু এ ছবি স্রেফ ছবির প্রয়োজনে তোলা নয়। নেপথ্যে ইন্ধন জুগিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইক-কমেন্ট পাওয়ার মোহ। নেটদুনিয়ার মনযোগ কাড়তেই এমন কাজ করেছেন ওই ব্যক্তি বলে অভিযোগ। কেননা ছবি তোলার পরই তিনি তা পোস্ট করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। লেখেন, এখুনি এই ছবিতে ১০০০ লাইক চাই, নয়তো তিনি এই বাচ্চাকে ফেলে দেবেন। পুরোটাই মজার ছলে করা। কিন্তু একজনের জীবন নিয়ে এরকম মজা করার মানসিকতা রীতিমতো প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলতে অনেকেই অনেক কিছু করে থাকেন। সেলফি ম্যানিয়া যে একরকম রোগের পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে, তা নিয়েও সতর্ক করেছেন মনোবিদরা। বলা হচ্ছে, এই সেলফি ও সোশ্যাল মিডিয়ার আসক্তি ক্রমশ আত্মকেন্দ্রিক করে তুলেছে একটা প্রজন্মকে। বিপজ্জনক সেলফি তুলতে গিয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন বহু মানুষ। তা সত্ত্বেও অবশ্য ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও হেলদোল নেই। এবং এই অসুখ যে কতখানি প্রবল তা এই ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।
[ ‘পাকিস্তানের জয়ে উল্লাস করলে সে দেশেই থাকা উচিত’ ]
ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই নেটদুনিয়াতেই প্রতিবাদে সরব হয়েছেন বহু মানুষ। অনেকের দাবি, স্রেফ লাইক পাওয়ার জন্য যদি কেউ কারও বাচ্চার জীবনকে বিপন্ন করতে পারে, তবে তিনি নিশ্চিতই মানসিকভাবে অসুস্থ। ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারিরও দাবি উঠেছিল। সেই দাবির মুখে শেষমেশ শিশু নিগ্রহের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় ওই ব্যক্তিকে। জানা যাচ্ছে, আদালত ওই ব্যক্তিকে দুই বছরের কারাদণ্ডেরও নির্দেশ দিয়েছে।
[ আর্থিক সাহায্য চেয়ে ফেসবুকে যৌনকর্মীর তকমা জুটল এই ছাত্রীর ]
যদিও সে দেশের এক সংবাদমাধ্যমে ওই ব্যক্তির দাবি, মিথ্যা অভিযোগে তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি আগেই জানিয়েছিলেন যে, বাচ্চাটি তাঁর আত্মীয়ের সন্তান। ব্যালকনির ঘেরাটোপে শিশুটিকে নিয়ে ছবিটা তোলা হয়েছিল। কোনওভাবেই বাচ্চার জীবন বিপন্ন করেননি তিনি। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, সোশ্যাল মিডিয়াতেই ছবিটিকে বিকৃত করা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.