ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিনি দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর নেতৃত্বেই প্রথম ক্রিকেট বিশ্বকাপের ট্রফি এসেছে দেশে। কিন্তু বর্তমানে সেই বিশ্বজয়ী অধিনায়কের দিন কাটছে গরাদের অন্ধকারে। জেলে ‘জঙ্গিদের মতো খাঁচাবন্দি’ করে রাখা হয়েছে তাঁকে। এমনটাই অভিযোগ করেছেন ইমরান খান।
গত বছরের ৫ আগস্ট তোষাখানা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন ইমরান। প্রথমে তাঁর ঠাঁই হয়েছিল পাঞ্জাব প্রদেশের অটোক জেলে। সেখান থেকে তাঁকে স্থানান্তর করা হয় রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেলে। একাধিকবার কারাগারে তাঁর প্রাণনাশের আশঙ্কা করেছেন ইমরানের পরিবার ও সমর্থকরা। তার পর থেকে কাপ্তানের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে। এমনকী জেলের ভিতরেও তাঁর ‘খাতির যত্নে’কোনও ত্রুটি রাখা হচ্ছে না। কিন্তু ইমরানের অভিযোগ, জেলে তাঁর সঙ্গে ‘জঙ্গি’দের মতো আচরণ করা হচ্ছে। সন্ত্রাসীদের যে সেলে রাখা হয় সেরকমই এক কুঠুরিতে রাখা হয়েছে তাঁকে। কয়েকদিন আগে পাকিস্তানের সংবাদপত্র ডনের একটি সাক্ষাৎকারের জন্য নিজের আইনজীবীর কাছে এমনই সব অভিযোগ জানিয়েছেন প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী।
ডনের সংবাদ অনুযায়ী, ইমরান জানিয়েছেন, “আমাকে ৭ ফুট বাই ৮ ফুটের একটি সেলে রাখা রয়েছে। সাধারণত এই সেলটিতে জঙ্গিদের রাখা হয়। যাতে তারা কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারে। এখানে চলাফেরা করার মতোও জায়গা নেই। আমার উপর সর্বক্ষণ তদন্তকারী সংস্থাগুলো নজর রাখছে। ২৪ ঘণ্টা আমার কথাবার্তা রেকর্ড করা হচ্ছে। এখানে আমার মৌলিক অধিকারও খর্ব হচ্ছে।” ইমরানের মতো একই অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবিও।
দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের খবর অনুযায়ী বুশরার অভিযোগ, ইমরানকে জেলে খুবই নোংরা জায়গায় রাখা হয়েছে। তাঁকে নোংরা খাবার খেতে দেওয়া হচ্ছে। তিনি খুব দুর্বল হয়ে পড়েছেন। মাথায় পোকা হয়েছে। তাঁর আরও অভিযোগ, অপরাধীদের থেকেও খারাপভাবে রাখা হয়েছে ইমরানের মতো রাজনৈতিক বন্দিকে। ফের একবার ইমরানের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। প্রসঙ্গত, গত বছর থেকেই জল্পনা চলছে, নিষিদ্ধ করে দেওয়া হতে পারে ইমরানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফকে। কয়েকদিন আগেই জানা গিয়েছে,ইমরানের দলের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করতে চলেছে পাকিস্তানের সরকার।
তবে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে লাহোর হাই কোর্টের কাছে প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রীর সুরক্ষায় যা যা ব্যবস্থাপনা রয়েছে তা নিয়ে একটি রিপোর্ট পেশ করে আদিয়ালা জেল কর্তৃপক্ষ। আদিয়ালার জেল সুপারের দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, ইমরানের জন্য জেলের ভিতরে লাগানো হয়েছে ৫ হাজার টাকার সিসিটিভি। যা কারাগারের অন্য বন্দিদের তত্ত্বাবধানে জন্য রাখা ক্যামেরা থেকে আলাদা। জেলে রয়েছে কাপ্তানের জন্য আলাদা রান্নাঘর। সেখানে সর্বক্ষণ পাহারায় থাকে একজন। রান্নার পর ওই খাবার চেখে দেখেন অন্য আরেক ব্যক্তি। এছাড়াও তাঁর জন্য রয়েছে ছয় সদস্যের বিশেষ মেডিক্যাল টিম। যাঁরা রোজ ইমরানের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। জেলের সাতটা বিশেষ সেলের মধ্যে দুটি বরাদ্দ রয়েছে তাঁর জন্য। এমনকি সেখানে তাঁর হাঁটাচলা করার জন্যও আলাদা জায়গা তৈরি করা হয়েছে। এই এত কিছুর জন্য প্রত্যেক মাসে গুণতে হয় মোটা টাকা। ইমরানের নিরাপত্তা রক্ষার মাসিক খরচ ১২ লক্ষ টাকা। কিন্তু এবার জেল কর্তৃপক্ষের ‘খাতিরদারি’ একগুচ্ছ অভিযোগ জানালেন প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.