সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মানব সভ্যতার কোন পর্বে যে ঠিক কী লুকিয়ে থাকতে পারে, তা কল্পনারও অতীত! মাঝে মাঝেই একেকটা অধ্যায় চলে আসে চোখের সামনে এবং বিস্ময়ে হতবাক করে দেয়!
যেমনটা করছে এক সাম্প্রতিক অভিযান! বেলজিয়ামের এক গুহায় নিয়েনডারথাল মানুষের অস্থি খুঁজে পাওয়ার পর বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন, সেই সময়ে মানুষ নরখাদক ছিল! নিয়েনডারথাল মানুষরা নিজেদের মাংস খেতে দ্বিধা বোধ করত না।
ইতিহাস বলছে, ৪,০০,০০০ বছর আগে এই মানবপ্রজাতি ইউরোপ আর পশ্চিম এশিয়ার নানা জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। এবং, ৪০,০০০ বছর আগে তারা লুপ্ত হয়ে যায় পৃথিবী থেকে। সেই জন্যই তাদের নিয়ে কৌতূহলেরও অন্ত নেই। মনে করা হয়, এই নিয়েনডারথালদের জীবনযাপনের সূত্রটি খুঁজে পেলে মানবসভ্যতার ইতিহাসের এক অনাবিষ্কৃত অধ্যায়ে আলোকপাত হবে।
সেই আলোকপাতের ধারাই এবার চমকে দিল পৃথিবীকে। বেলজিয়ামের গয়েট গুহায় চারজন প্রাপ্তবয়স্ক এবং একজন শিশুর অস্থি পরীক্ষা করে জানা গেল, নিয়েনডারথাল মানুষ নরখাদক ছিল। ৪০,৫০০ থেকে ৪৫,৫০০ বছর আগে মৃত এই মানুষদের হাড়ের ৯৯টি টুকরো পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, নিয়েনডারথাল মানুষ অন্যকে হত্যা করে তার মাংস খেত না! গোষ্ঠীর মধ্যে কারও মৃত্যু হলে তখনই তার মাংস খাওয়া হত।
এতটা জোর দিয়ে বিজ্ঞানীরা কী ভাবে বলছেন এই কথা?
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, গুহায় যে হাড়গুলো পাওয়া গিয়েছে, সেগুলো পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে যে ওগুলো তীক্ষ্ণ পাথরের ফলা দিয়ে আঘাত করে করে শরীর থেকে ভেঙে নেওয়া হয়েছিল। পাথর দিয়ে হাড় ফাটিয়ে বের করে নেওয়া হয়েছিল মজ্জা। তা ছাড়া যে দাঁত পাওয়া গিয়েছিল, সেগুলো পরীক্ষা করেও তার মধ্যে মানুষের মাংস খাওয়ার প্রমাণ মিলেছে!
অবশ্য, এই দাবি যে নিয়েনডারথালদের নিয়ে এই প্রথম উঠল, তা কিন্তু নয়। এর আগে যখন ১৯৯০ সালে ফ্রান্সের এক গুহা থেকে নিয়েনডারথাল মানুষের অস্থি আবিষ্কৃত হয়েছিল, তখনও ঠিক এই কথাই বলেছিলেন বিজ্ঞানীরা।
অনেক গবেষক যদিও দাবি করে থাকেন, এই মৃত মানুষের মাংস খাওয়াটা নিয়েনডারথালদের অভ্যাস নয়, বরং একটা প্রথা। শেষকৃত্যের অঙ্গ আর কী! যদিও বক্তব্যের সপক্ষে তাঁরা খুব জোরালো কোনও যুক্তি পেশ করতে পারেননি।
বিতর্ক তাই চলছেই!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.