সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় চার দশক ধরে পুরস্কার প্রাপক এবং বিরল সম্মাননার অধিকারী হিসেবে ফি বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নের মানবাধিকার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়ে আসছে মায়ানমারের জননেত্রী আং সান সু কি (Aung San Suu Kyi)। তবে সেই তাল কেটে গেল এবছর। আর কোনওদিনই EU’র ওই অনুষ্ঠানে সম্মানীয় অতিথির আসনে দেখা যাবে না তাঁকে। মায়ানমারের তাঁর শাসনকালে নির্বিচার রোহিঙ্গা নিধনের নেপথ্যে তাঁর ভূমিকা নিন্দনীয়, এই পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে সু কি’কে আজীবন সাসপেন্ড করল ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওই পুরস্কার প্রদান কমিটি।
আজীবন শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে কাজ করার স্বীকৃতি স্বরূপ ইউরোপীয় ইউনিয়নের তরফে মানবাধিকার পুরস্কার ‘সাখারভ প্রাইজ’ পেয়েছিলেন সু কি। ১৯৯১ সালে পান নোবল শান্তি পুরস্কারও। তারপর থেকে প্রতি বছর তাঁকে এই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তাতে যোগ দিয়ে বক্তব্য পেশ করে থাকেন মায়ানমারের নেত্রীও। কিন্তু এবার EU পার্লামেন্টের সদস্যরা মায়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যার তীব্র নিন্দা করে সু কি’কে বহিষ্কারের দাবি তোলেন। সেইমতো তা কার্যকর করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
মায়ানমারের দীর্ঘ সময় ধরে সেনাশাসনের বিরোধিতা করে বহুকাল জেলবন্দি ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মানবাধিকার নেত্রী আং সান সু কি। ২০১৫এ বিপুল ভোটে সে দেশে প্রতিষ্ঠিত হয় গণতান্ত্রিক সরকার। স্টেট কাউন্সিলর হয়ে বকলমে দেশের নেত্রীর ভূমিকা গ্রহণ করেন সু কি। এর পরের দুটো বছর মায়ানমাররের রাখাইন প্রদেশে নির্বিচারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের হত্যালীলায় মেতে ওঠে সেনাবাহিনী। প্রাণ বাঁচাতে প্রচুর রোহিঙ্গা পালিয়ে পাশের বাংলাদেশে চলে আসেন। ভারতেও আশ্রয় নেন গুটিকয়েক রোহিঙ্গা।
কিন্তু সু কি বারবার এই গণহত্যার পিছনে সেনাবাহিনীর ভূমিকার কথা অস্বীকার করেছেন। ঘটনায় নীরব থাকার জন্য এবং শক্ত হাতে তা মোকাবিলা না করার ব্যর্থতার কারণে আন্তর্জাতি আদালতে মামলা দায়ের হয় সু কি’র বিরুদ্ধে। এবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের পার্লামেন্ট সদস্যরাও একই যুক্তিতে প্রতিবাদ জানালেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.