সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহাকাশে পাড়ি দিয়েছে বিশ্বের সব চেয়ে শক্তিশালী রকেট, ‘ফ্যালকন হেভি’। যত বড় রকেট, তত বেশি জ্বালানিও ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে মহাকাশে ক্রমেই বাড়ছে বর্জ্যের পরিমাণ। ফ্যালকন হেভির জন্য ব্যবহার করা হয়েছে আরপি-১ ও তরল অক্সিজেন। জ্বালানি পুড়ে তৈরি হচ্ছে বিপুল পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড। পাঁচটি ডবল ডেকার বাসের সমান এই মহাকাশযানের ‘পে-লোড’।যত বেশি পে লোড, তত বেশি জ্বালানি। তাই দূষণের পরিমাণ ক্রমশই বাড়ছে। তবে এই মহাকাশযানটি পুনর্ব্যবহারযোগ্য। অ্যাপোলো যুগের পর এই যানটিই সবচেয়ে শক্তিশালীও বটে।
প্রথমবার আমেরিকার বেসরকারি সংস্থা ‘স্পেসএক্স’-এর মাধ্যমে মহাকাশ অভিযান যতই সুখবর হোক, মহাকাশে বর্জ্যের পরিমাণ ভাবনায় ফেলছে পরিবেশবিদদের। ১৮৭৪৭টি জেট বিমানের গতিতে মঙ্গলবার মাটি ছেড়েছে ফ্যালকন। রাতারাতি পাহাড়-প্রমাণ ধোঁয়ায় ঢেকে যায় আকাশ। কম খরচে বহুগুণসম্পন্ন যে যানটিকে পাঠানো হয়েছে, তার বেশিরভাগ ওজনই (৯৫%) জ্বালানি। বড় রকেট, বেশি পে লোড মানেই এক্ষেত্রে পরিশোধিত কেরোসিন (আরপি) ব্যবহার করা। এক্ষেত্রে প্রায় ৪৪০ টন কেরোসিন ব্যবহার করা হয়েছে। তার মধ্যে ৪৪ শতাংশই কার্বন। সারাবিশ্বে কারখানার বর্জ্য বা ধোঁয়া থেকে থেকে যে পরিমাণ দূষণ হচ্ছে, সেই তুলনায় মহাকাশে বর্জ্যের পরিমাণ অনেক কম। দুই সপ্তাহ অন্তর যদি ২৭টি ইঞ্জিনের এই যান পাড়ি দেয় মহাকাশে, সেক্ষেত্রে দূষণের পরিমাণ পৃথিবীকে ছাপিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মহাকাশযানের সঙ্গে মহাকাশ বর্জ্যের সংঘাতও ঘটবে। অন্য গ্রহেও ছড়াচ্ছে দূষণ।
পৃথিবীর কক্ষপথে ১ লক্ষ ৪০ হাজার পাউন্ড রকেট পর্যন্ত পাঠাতে সক্ষম মহাকাশযানটি। স্পেসএক্সের আসল লক্ষ্য লালগ্রহ হলেও প্রথমে ধেয়ে যাচ্ছে গ্রহাণুপুঞ্জের দিকে। বর্জ্যের সঙ্গে যানের অনভিপ্রেত সংঘর্ষের সম্ভাবনাও বাড়ছে। ভবিষ্যতে মঙ্গল, শনি কিংবা বৃহস্পতির মতো গ্রহগুলিতে কৃত্রিম উপগ্রহ স্থাপনেও সমস্যা দেখা দিতে পারে। মঙ্গলের মহাকর্ষ তরঙ্গ কিংবা সৌরবায়ুতে ভেসে আসা বর্জ্যগুলি গ্রহাণুপুঞ্জের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটতে পারে। এমন কোনও ব্যাকটেরিয়া পৃথিবীতে চলে আসতে পারে এই সংঘর্ষের ফলে, যা হয়তো মারণ রোগ ছড়ায়। যার চিকিৎসাপদ্ধতি এখনও অজ্ঞাত। তাই বেসরকারি সংস্থাগুলি শক্তিশালী রকেট পাঠানোর আগে দূষণের দিকটি সঠিকভাবে যাচাই করে নেওয়া জরুরি। ফ্যালকন-এর পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ দেখতে মঙ্গলবার কেনেডি স্পেস সেন্টারে ভিড় করেছিলেন হাজার খানেক উৎসাহী ব্যক্তি। বিশেষ কৌতূহল ছিল অবশ্যই তারামানুষ অর্থাৎ ‘স্টারম্যান’-এর জন্য। সংস্থার চেয়ারম্যান এলন মাস্কের চেরি লাল টেসলা রোডস্টারে চেপে একাই রওনা দিয়েছে স্পেসস্যুট পরিহিত নকল মহাকাশযাত্রীটি। ফ্যালকন রকেটে যাত্রা করছে মঙ্গলের দিকে। দেখানো হচ্ছে তার লাইভ ভিডিও স্ট্রিমিং। দেখতে চান নাকি? তাহলে এই দেখুন-
মাস্ক জানিয়েছেন, তাঁর টেসলা রোডস্টার থেকে মহাকাশে ভেসে যাবে প্রয়াত গায়ক ডেভিড বাউয়ির গান ‘‘লাইফ অন মার্স’’। মহাকাশযাত্রীটির নাম ‘স্টারম্যান’ রাখা হয়েছে বাউয়িরই অন্য একটি গান থেকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.