সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যে কোনও সংকটের সময় এক কণা খাবারের জন্য হুড়োহুড়ি পিছিয়ে পড়া দেশগুলির স্বাভাবিক ছবি। কিন্তু ধনী তকমা পাওয়া কোনও দেশে এমনটা ঘটলে, বোঝা যায়, আসলে মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ এখনও অনেকটা দূরে। প্রতিবেশী দ্বীপরাষ্ট্র মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে বিনামূল্যে খাবার পেতে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে মৃ্ত্যু হল ২ মহিলার।
মালয়েশিয়ায় এখন বর্ষশেষ। হ্যাঁ, মালয়েশিয়ার মতো এশিয়া মহাদেশের ছোট দ্বীপরাষ্ট্রগুলির সময় চলে চন্দ্রায়ণ অনুযায়ী। তাই লুনার ক্যালেন্ডার মতে, আগামী সপ্তাহে শুরু হবে নতুন বছর। এই বছরকে বিদায় জানাতে তাই সে দেশে চলছে নানা ধরনের উৎসব। তেমনই এক অনুষ্ঠান ছিল কুয়ালালামপুরের পুডু ইন্টারন্যাশনাল কমার্শিয়াল কমপ্লেক্সে। অনুষ্ঠানের একটি অংশ হিসেবে বিনামূল্যে খাওয়ানোর ব্যবস্থা ছিল। আর সেখানেই ঘটে গেল এমন বিপত্তি।
ভার্চুয়াল জগতে ‘ঠান্ডা লড়াই’ চিন-আমেরিকার, পিছিয়ে নেই ভারতও
সূত্রের খবর, সোমবার পুডুর ওই অনুষ্ঠানে মাত্র ২০০ জনের খাবারের মতো আয়োজন করা হয়েছিল। বিতরণ করা হচ্ছিল কুপন। লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন অন্তত হাজার জন। যাদের মধ্যে বয়স্ক পুরুষ, মহিলার সংখ্যা কম ছিল না। এত ভিড়ভাট্টার মধ্যে দীর্ঘক্ষণ ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে অনেকেই অস্বস্তি বোধ করছিলেন। তারপরই তাঁরা জানতে পারেন, মাত্র ২০০ জন বিনামূল্যে খাওয়ার সুযোগ পাবেন। তাতেই ফ্রি কুপন পাওয়ার জন্য একে অন্যকে ঠেলে সামনের সারিতে যাওয়ার চেষ্টা করেন। হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। নিরাপত্তারক্ষীরাও পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থ হন। সংবাদমাধ্যমে তাঁরা জানিয়েছেন, ‘হঠাৎ করেই দেখলাম, শান্তিপূর্ণ লাইনে চিৎকার শুরু হয়ে গেল। সবাই একে অন্যকে ঠেলাঠেলি করছেন। তারই মধ্যে বয়স্ক কয়েকজন অসুস্থ হয়ে মাটিতে পড়ে যান।’ সকলের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হলেও, ৭৮ বছরের ল লন নাং এবং ৮৫ বছরের আ ফো নামে দুই মহিলাকে বাঁচানো যায়নি। চূড়ান্ত শ্বাসকষ্টের মধ্যে তাঁদের মৃত্যু হয় বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছেন চিকিৎসকরা। পুডু এলাকার পুলিশ অফিসার শাহরুদ্দিন আবদুল্লাও একই কথা জানাচ্ছেন।
হলুদ জ্যাকেটের পালটা, এবার প্যারিসের পথে নামল লাল রুমাল
এশিয়া মহাদেশের দ্বীপ রাষ্ট্র মালয়েশিয়া রীতিমতো সমৃদ্ধশালী। অর্থনৈতিক দিক থেকে ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তানের চেয়ে কয়েক কদম এগিয়ে। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থানের মতো মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণের মতো আর্থিক স্বাচ্ছল্য আছে প্রশাসনের। কিন্তু এসবই দেশটি সম্পর্কিত ওপরওপর কয়েকটি তথ্য মাত্র। প্রদীপের নিচে অন্ধকার বোধহয় থেকে যায় সর্বত্রই। নইলে কি এমন এক আকর্ষণীয় দেশে বিনামূল্যে খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রাণ খোয়াতে হয় কাউকে? কেন এমনটা হল, প্রশাসনের কাছে উত্তর নেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.