সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উন্নয়নের নামে ঋণের পসরা সাজিয়ে বসেছে চিন (China)। বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পের আওতায় পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা-সহ এশিয়ার দেশগুলিতে ‘ডেট ট্র্যাপ’ বা ঋণের জাল বিস্তার করেছে। এহেন পরিস্থিতিতে চিনা ঋণের ফাঁদে না জড়াতে নেপালকে পরামর্শ দিলেন সেদেশেরই এক প্রথমসারির অর্থনীতিবিদ।
শুক্রবার অর্থাৎ আজ নেপাল সফরে আসছেন চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। এই সফরকালে কাঠমান্ডু ও বেজিংয়ের মধ্যে একাধিক বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা রয়েছে। সূত্রের খবর, বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পের আওতায় পরিকাঠামো নির্মাণে চিনের কাছ থেকে ঋণ নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে কাঠমান্ডুর শের বাহাদুর দেউবার সরকার। সেই বিষয়ে নেপালি অর্থনীতিবিদ বিশ্বম্ভর পোখরায়েল দেউবা সরকারকে সতর্ক করেছেন। তাঁর কথায়, চিনের থেকে ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারকে সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, বিদেশি অর্থ সহায়তা বা সহজ কথায় ঋণ নিতে চিনের সঙ্গে দশখানা চুক্তি স্বাক্ষর করতে চলেছে নেপাল। আর এতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন অর্থনীতিবিদদের একাংশ। কারণ প্রকল্পগুলি নির্মাণে যে বিপুল ব্যয় হবে তা বহন করা হবে ঋণের মাধ্যমে। ভবিষ্যতে সুদে-আসলে সেই ঋণ পাহাড়প্রমাণ হয়ে দাঁড়ালে বিপাকে পড়বে নেপালই। এই বিষয়ে শ্রীলঙ্কার প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন অর্থনীতিবিদ বিশ্বম্ভর পোখরায়েল। তাঁর কথায়, “অর্থনীতির নিরিখে নেপাল এখন শ্রীলঙ্কার মতো জায়গায় পৌঁছতে পারেনি। অর্থনীতির দিক থেকে স্বনির্ভর হতে গেলে বিদেশি ঋণ নিয়ে পরিকাঠামো নির্মাণের আগে আমাদের দু’ বার ভাবতে হবে।”
উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই ‘চিনের বেল্ট অ্যান্ড রোড’ প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বেশ কয়েকটি দেশ। চিন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডর নিয়ে অসন্তোষ দেখা দেয় সে দেশে। চিনের মদতে একটি উচ্চাকাঙ্খী পরিকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প বাতিল করে দেয় মালয়েশিয়া সরকার। দেখা গিয়েছে, যে চিনা প্রকল্পের কোনও লাভ ঋণগ্রহীতারা পাচ্ছে না। বরং তাদের বাণিজ্যিক ঘাটতির মুখে পড়তে হচ্ছে। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ শ্রীলঙ্কা। দেশটির বিদেশি ঋণের পরিমাণ বিপুল আকার ধারণ করেছে। এবং এই ঋণের অর্ধেকেরও বেশি চিন থেকে নেওয়া। গত সাত দশকে সবচেয়ে বড় আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছে দ্বীপরাষ্ট্রটি। বিদ্যুতের অভাবে ব্ল্যাক আউট চলছে দেশে। খাবার, ওষুধ অগ্নিমূল্য। এমনকী মিলছে না প্রতিদিনের প্রয়োজনের রান্নার গ্যাস। এই অবস্থায় অনেকেই শ্রীলঙ্কা ছেড়ে ভারতে চলে আসছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.