সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ধর্ষণ করা হয়েছিল৷ শারীরিক যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছিল অনেকদিন৷ কিন্তু মানসিক যন্ত্রণা? দিন যত যাচ্ছিল, ততই যেন তা অসহনীয় হয়ে উঠেছিল৷ তাই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে বাধ্য হয়ে স্বেচ্ছামৃত্যুর পথ বেছে নিলেন বছর সতেরোর কিশোরী৷ ইনস্টাগ্রামে সেকথা জানিয়েছেন তিনি৷ শোকে বিহ্বল নেটিজেনরা৷
শৈশবের গণ্ডি পেরোনোর আগে কামুক যুবকের লালসার শিকার হন নোয়া পঠোভেন৷ বিকৃতকামীর আঁচড়ে-কামড়ে রক্তাক্ত হয়েছে গোটা শরীর৷ লজ্জায় দীর্ঘদিন সেকথা ঢেকে রেখেছিলেন৷ পুরস্কারপ্রাপ্ত আত্মজীবনী ‘উইনিং অ্যান্ড লার্নিং’-এ নিজের হতাশার সঙ্গে লড়াইয়ের বর্ণনা দিয়েছেন নোয়া। তারপর জানতে পারেন সকলেই৷ ‘অপরাধ’ ধর্ষকের৷ তবে সমাজ তা মানল কই? পরিবর্তে বইপ্রকাশের পর থেকে বারবার বাঁকা চোখে দেখা হয়েছে তাঁকে৷ শারীরিক কষ্ট আর তার সঙ্গে কোণঠাসা হয়ে যেতে থাকার মানসিক যন্ত্রণা৷ দুয়ে মিলে জীবন যেন অসহনীয় হয়ে গিয়েছিল নোয়ার৷ কঠিন পরিস্থিতিতে জীবন থেকে মুক্তি খুঁজছিলেন নির্যাতিতা৷ জীবনের থেকে যেন মৃত্যুই তখন অনেক বেশি সুন্দর মনে হয়েছিল৷ কিন্তু জন্ম-মৃত্যু তো কেউ নিজে ঠিক করতে পারেন না৷ তবে মৃত্যুর কথা ভাবতে ভাবতে জীবনের প্রতি অনীহা তৈরি হয়৷ জীবন থেকে মুক্তির পথ হিসাবে স্বেচ্ছামৃত্যুকেই বেছে নেন নোয়া৷
উল্লেখ্য, টার্মিনেশন অফ লাইফ অন রিকোয়েস্ট অ্যান্ড অ্যাসিস্টেড সুইসাইড অ্যাক্ট অনুযায়ী ২০০১ সাল থেকেই নেদারল্যান্ডসে স্বেচ্ছামৃত্যু বৈধ৷ তাই করলেন নোয়া৷ তাঁর চিকিৎসকও অসহ্য মানসিক যন্ত্রণার কথা লিখে দেন৷ স্বেচ্ছামৃত্যুতে তাই কোনও বেগ পেতে হয়নি নির্যাতিতাকে৷ তবে মারা যাওয়ার আগে নিজেই ইনস্টাগ্রামে মানসিক পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে স্বেচ্ছামৃত্যুর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে যান নোয়া৷ তিনি লেখেন, ‘‘বহু বছর ধরে লড়াইয়ের শেষ হওয়া প্রয়োজন৷ আমি বর্তমানে খাবার-জল খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি৷ অনেক ভাবনাচিন্তার পর আমি স্বেচ্ছামৃত্যুর পথ বেছে নিয়েছি৷’’
কিশোরীর ইনস্টাগ্রাম পোস্ট ভাইরাল হতে বেশি সময় নেয়নি৷ নেটিজেনদের একাংশ তাঁর মানসিক যন্ত্রণার কথা ভেবে দুঃখ প্রকাশ করেছেন৷ স্বেচ্ছামৃত্যুকে মোটেও ভাল চোখে দেখছেন না অনেকেই৷ এই ঘটনায় ক্ষুব্ধও হয়েছে নেটিজনদের একাংশ৷ যেখানে ধর্ষকের শাস্তি পাওয়া উচিত, সেখানে কেন লজ্জার হাত থেকে বাঁচতে নির্যাতিতাকে স্বেচ্ছামৃত্যুর পথ বেছে নিতে হবে সেই প্রশ্নও তোলেন তাঁরা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.