স্টাফ রিপোর্টার: কথাতেই আছে, বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। এক উৎসব শেষ হয়, আরেকটা এসে যায়। তবে তা যে কেবল বঙ্গেই, তেমনটা নয়। তেরো পার্বণ পালন হচ্ছে সুদূর ইউরোপের বেলজিয়ামের ব্রাসেলসেও। ‘তেরো পার্বণ – প্রবাসী বেঙ্গলি কমিউনিটি অফ বেলজিয়াম’ করছে দুর্গাপুজোও। পুজোর এবার দ্বিতীয় বর্ষ। কুমোরটুলি থেকে সেখানে উড়ে গিয়েছে ৯ ফুটের প্রতিমা। সঙ্গে উপকরণও। সেখানকার হ্যারন গ্রামে পুজোপ্রাঙ্গণে আঁকা হয়েছে আলপনাও। একেবারে পঞ্জিকা মেনে চারদিনের পুজো এখানে। গতবছর অতিমারীর প্রকোপে আয়োজন অত্যন্ত সীমিত হলেও এবারে তাদের এলাহি ব্যবস্থা। অন্য অনেক বিদেশি পুজোর মতো এখানে তিথির আগে বা পরে সকলের সুযোগ-সুবিধা মতো কোনও একটা উইকএন্ডে পুজো হয় না, পুজো এখানে হয় চারদিন ধরে– সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী ও দশমী। সন্ধিপুজো থেকে শুরু করে কুমারী পুজো। সবশেষে সিঁদুর খেলা। উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, এই পুজোর আরেকটি মূল বৈশিষ্ট্য হল এখানে নারী-পুরুষ উভয়েই পৌরোহিত্য করেন। এবং এখানে বর্ণ-লিঙ্গের কোনও বৈষম্য নেই। সোমবার অষ্টমীর দিন সকালে সেখানেও প্রচুর বাঙালি অঞ্জলি দেন।
তেরো পার্বণের প্রতিমা এবার বানিয়েছেন, কুমোরটুলির মৃৎশিল্পী সনাতন পাল। উদ্যোক্তাদের দাবি, ইউরোপের অন্যতম বৃহৎ এবারের এই দুর্গাপ্রতিমার উচ্চতা ৯ ফুট। কলকাতা থেকে এত বড় প্রতিমা খুব একটা প্রবাসে যায় না। সাধারণত ছ’সাত ফুটের প্রতিমাই প্যাকিং হয়ে যায় প্রবাসে।–জানাচ্ছেন এখানকার শিল্পীরাই। কিন্তু এখানেই তেরো পার্বণ এবার চমক রাখছে। পুজোর আনুষঙ্গিক সমস্ত উপকরণও তালিকা মিলিয়ে কলকাতা থেকে গিয়েছে প্রতিমার সঙ্গে। এবছর মণ্ডপসজ্জাতেও সাবেকি বাঙালিয়ানাকেই থিম হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছে বলে জানাচ্ছেন এই পুজোর সঙ্গে জড়িত সদস্যরা।
এর সঙ্গে পুজোর চারদিনই থাকছে বিভিন্ন রকম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সদস্যদের কথায়, তেরো পার্বণের মূল উদ্দেশ্য বাঙালিয়ানা, বাঙালি সংস্কৃতি ও সাহিত্যকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরা। এখানে এই পুজো ছাড়াও বেশ কয়েকটি পুজো হয় বড় করেই। সেখানেও এখন পুজোর আমেজ। পুজোর চার দিন দু’বেলাতেই পাত পেড়ে রয়েছে এক্কেবারে বাঙালি খাবার। উদ্যোক্তরা জানান, সেখানে যেমন আছে মাছের কালিয়া, পাতুরি আবার তেমনি আছে কলকাতার স্পেশাল মাটন বিরিয়ানি। ‘তেরো পার্বণ – প্রবাসী বেঙ্গলি কমিউনিটি অফ বেলজিয়াম’-এর প্রতিটি সদস্যই জানান, যাঁরা কলকাতার পুজো উপভোগ করতে পারেন না, আমরা চেষ্টা করি এখানেই পুজোর দিনগুলোয় তাঁদের এবং নিজেদের সবরকম আনন্দের বন্দোবস্ত করতে। এখানকার পুজো উদ্যোক্তা সুমনা দে মল্লিক বলেন, ‘‘আমরা খুব এক্সাইটেড এই পুজো ঘিরে। তোড়জোড় চলছে। গতবছর করোনার কারণে বড় করে পুজো করা যায়নি। এবছরটা বড় করেই হচ্ছে।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.