নব্যেন্দু হাজরা: দুর্গাপুজোর দশমীর পর অথচ লক্ষ্মীপুজোর আগে এই দেশে মা দুর্গার আরাধনা হয়। এটাই রীতি। তবে চারদিনের নয়। একদিনের পুজো এখানে। সেই দিনই বোধন, সেই দিনেই পুজো, সেইদিনই পুষ্পাঞ্জলি আবার সিঁদুরখেলাও। সবশেষে মিষ্টিমুখ।
পেলের (Pele) দেশের কথা হচ্ছিল। ব্রাজিলের (Brazil) সাও পাওলোর বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন অফ ব্রাজিলের পুজো এবার ১২ বছরে পা দিল। এবার এখানে পুজো হবে ৮ অক্টোবর। তবে এখানকার যেটা বিশেষত্ব তা হল, পুজোয় বসেন মহিলা পুরোহিত। কারণ, পুরুষ পুরোহিত এখানে নেই। শ্রীরামপুরের ব্রাক্ষ্মণ পরিবারের মেয়ে রত্নাবলী অধিকারী পুজো করেন। সব নিয়ম মেনেই। দু’বছর কোভিডকালে সেভাবে বড় করে পুজো হয়নি। কিন্তু এবার হচ্ছে বেশ জাঁকজমক করেই। ব্রাজিলে এই পুজোটি ছাড়াও রামকৃষ্ণ মিশনের একটা পুজোও হয়। সেটি হয় মিশনের নিয়ম মেনেই। তার বাইরে এই একটিই পুজো হয় এখানে।
২০১১ সালে এদেশে পুজো শুরু করেন কয়েকজন প্রবাসী বাঙালি মিলে। সেবার থেকেই বছর বছর বঙ্গে মা-দুর্গার বিসর্জনের পর ব্রাজিলে হাজির হন উমা। অনেক বাঙালি পরিবার রয়েছে এখানে। তাঁরা সবাই মিলেই মেতে ওঠেন উৎসবে। বছর তিনেক আগে কলকাতা থেকে মায়ের এক চালা মূর্তি গিয়েছিল সাও পাওলোতে। তার আগে ছিল অন্য মূর্তি। কয়েক বছর এক মূর্তিতেই পুজো হয়। তবে পুজোর উপকরণ যায় কলকাতা থেকেই। চারদিনের রীতি একদিনেই পালন করা হয় এখানে।
ফুটবলের দেশ ব্রাজিল। পেলে, রোমারিও, রোনাল্ডো-র পায়ের জাদুতেই মুগ্ধ হয় গোটা দুনিয়া। কিন্তু সেই দেশেও যে দুর্গাপুজো (Durga Puja) হয়, তা অনেকেরই অজানা। উদ্যোক্তাদের কথায়, পুজোর চারদিনের আনন্দ হয়তো এখানে হয় না, কিন্তু প্রবাসী বাঙালিরা কলকাতা থেকে এত দূরে থেকেও পুজোর আনন্দের স্বাদ পান। শরৎ এলে পুজোর গন্ধ পান। নতুন পোশাক এখানেও পুজোতেই তাঁরা কেনেন। এমনকী শুধু পুজো আর খাওয়া-দাওয়াতেই থেমে থাকে না এখানকার উৎসব। হয় ধুনুচি নাচও। প্রতিটি বাঙালি পরিবারের সদস্যরাই এই পুজোতে যুক্ত থাকেন।
সাও পাওলোর বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন অফ ব্রাজিলের পুজোর কর্মকর্তা স্নেহ মণ্ডল বলেন, ‘‘২০১৯ সালেই আমাদের বড় প্রতিমা এসেছে। এখানকার আমরা সবাই এই পুজোকে ঘিরে আনন্দে মেতে উঠি। তবে চারদিন নয়, এখানে পুজো হয় একদিনে। করেন মহিলা পুরোহিত।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.