সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কোভিড (COVID-19) বিদায়ে হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছিলেন? ওটা তো স্রেফ ট্রেলার ছিল। আসল ছবি যে এখনও বাকি! আরও সংক্রামক। আরও বিপজ্জনক। এবং অবশ্যই আরও, আরও বেশি শক্তিশালী ভাইরাসঘটিত এক মহামারীর কবলে শীঘ্রই পড়তে চলেছে গোটা দুনিয়া। আবার এমনটাও অসম্ভব নয় যে, হয়তো বিশ্বের কোথাও, কোনও এক প্রান্তে ইতিমধ্যেই সূচনাও হয়ে গিয়েছে সেই মহাপ্রলয়ের।
নামটা ভুলবেন না যেন! ‘ডিজিজ এক্স’। সালটা ২০১৯। করোনার থাবা পড়ল বিশ্বে। চিন থেকে গোটা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ল ভয়ংকর সেই ভাইরাস। টানা দু’বছর সেই ভাইরাসের উত্তরোত্তর মিউটেশন হল। এক প্রজাতি থেকে আরেক প্রজাতি। সংক্রমণেরও ঝাঁজ যেমন বেশি, মৃত্যুর হারও তত বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান বলছে, কোভিডে বিশ্বব্যাপী প্রায় ৭০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। কিন্তু ‘ডিজিজ এক্স’ (Disease X) নাকি ছাপিয়ে যেতে চলেছে আগের সব রেকর্ডকে! এমনটাই দাবি করেছেন স্বয়ং ব্রিটেনের ভ্যাকসিন টাস্ক ফোর্সের প্রধান ডেম কেট বিংহাম। ‘ডেলি মেল’কে তিনি জানিয়েছেন, কোভিডের থেকে সাত গুণ বেশি শক্তিশালী ‘ডিজিজ এক্স’। স্বাভাবিকভাবে অনেক বেশি মারাত্মকও বটে। এতটাই যে, এর দাপটে মৃত্যু হতে পারে অন্তত ৫ কোটি মানুষের। ফলত, কোভিডের পরবর্তী সম্ভাব্য মহামারীর আকার নিতে চলেছে এই ‘ডিজিজ এক্স’ই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘WHO’ ইতিমধ্যেই এবিষয়ে সতর্ক করেছে গোটা বিশ্বকে। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, দরজায় কিন্তু কড়া নাড়ছে এই মারণ রোগ।
শুধু তাই নয়। বিংহামের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, এই ভাইরাসটি কিন্তু নতুন নয়। আগে থেকেই পরিবেশে এর অস্তিত্ব ছিল। তবে প্রতিনিয়ত ‘মিউটেট’ করেছে। ফলে শক্তিও বেড়েছে। এই ভাইরাস ঠিক কতটা বিধ্বংসী, তা বোঝাতে গিয়ে ১৯১৮-১৯-এর ফ্লু মহামারীর তথ্য টেনে এনেছেন ব্রিটেনের এই স্বাস্থ্যকর্তা। সেই সময় ফ্লু-এর বলি হয়েছিলেন ৫ কোটিরও বেশি মানুষ। এক্ষেত্রেও মৃত্যুর হার কাছাকাছি যেতে পারে বলেই জানাচ্ছেন তিনি। বিংহামের কথায়, ‘‘পরিবেশে বিদ্যমান, এমন অনেক ভাইরাসের মধ্যে যে কোনও একটি এমন মারণ রূপ ধারণ করতে পারে। কারণ প্রতিটি ভাইরাসই নিরন্তর মিউটেট করে চলেছে। সবকটি কিন্তু বিপজ্জনক নয়। কয়েকটি নিয়েই চিন্তা।’’ তিনি জানিয়েছেন, বর্তমানে তাঁরা ২৫টি ভাইরাস পরিবারের গতিবিধি পরীক্ষা করছেন। এদের প্রতিটিতে হাজার হাজার, পৃথক পৃথক ভাইরাস রয়েছে। যে কোনও একটি থেকে পরবর্তী মহামারীর সূচনা হতে পারে।
তবে সবচেয়ে উদ্বেগজনক যে বিষয়, তা হল ‘ডিজিজ এক্স’-এর ভয়াবহতা। কোভিডের থেকে অনেকটাই শক্তিশালী এবং সংক্রামক হওয়ায় এর জেরে মৃত্যুহার যে বহুলাংশে বৃদ্ধি পেতে পারে, এই তথ্যটিই আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। বিংহামের কথায়, ‘‘কোভিড আক্রান্ত অনেকেই পরে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। কিন্তু ডিজিজ-এক্স এর ক্ষেত্রে ছবিটা এক নাও হতে পারে। কারণ এটি হামের মতো সংক্রামক, এর মৃত্যুহার ইবোলার মতো (৬৭ শতাংশ)। হতে পারে, এই মুহূর্তে বিশ্বের কোনও প্রান্তে এর মিউটেশন হচ্ছে। ফলে শীঘ্রই কোথাও না কোথা থেকে অসুস্থতার খবর আসতে পারে।’’ ব্রিটেনের এই স্বাস্থ্যকর্তা জানিয়েছেন, বর্তমানে তাঁরা বিভিন্ন প্রাণী ভাইরাসের সংক্রমণ ক্ষমতা খতিয়ে দেখছেন। এই তালিকায় রয়েছে বার্ড ফ্লু (Bird Floue), মাংকি পক্স এবং হান্টা ভাইরাস।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.