সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহামারীর আকার নিয়েছে করোনা ভাইরাস। চিনে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। গত সপ্তাহের ২৬ থেকে চলতি সপ্তাহের প্রথমদিনেই মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়লেন ৮০ জন। চিনা স্বাস্থ্য কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, শুধুমাত্র ইউহান অর্থাৎ করোনা ভাইরাসের উৎপত্তিস্থলেই মৃত্যু হয়েছে ৭৬ জনের। ৩০০০ জনের শরীরে মারণ জীবাণু বাসা বেঁধেছে বলে পরীক্ষায় নিশ্চিত করেছেন চিকিৎসকরা। এঁদের মধ্যে অন্তত ৩০০ জনের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক।
সাধারণ জ্বর-সর্দি-কাশি থেকে নিউমোনিয়ার মাধ্যমে প্রথমদিকে শরীরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ হচ্ছিল। সপ্তাহখানেক পর সংক্রমণের ধরনও পালটেছে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। যা তাঁদের আরও চিন্তায় ফেলেছে। কেউ কেউ শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভরতি হচ্ছে। পরীক্ষা করে দেখা যাচ্ছে, তাঁদের শরীরে থাবা বসিয়েছে করোনা ভাইরাস। আবার কেউ কেউ কোনও উপসর্গ ছাড়াই এই সংক্রমণের শিকার হচ্ছেন। ফলে রোগ নির্ণয় করে সময়মতো চিকিৎসা শুরু করার ক্ষেত্রে প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন চিকিৎসকরা। সংক্রমণ প্রতিরোধে সবচেয়ে দুর্বল বয়স্ক ব্যক্তিরা। চিকিৎসায় সাড়া দেওয়ার আগেই তাঁদের প্রাণ কাড়ছে মারণ জীবাণু।
করোনার আতঙ্কে কার্যত জরুরি অবস্থা চিনে। রোগীদের চিকিৎসার জন্য অন্যান্য প্রদেশ থেকেও ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা ছুটে গিয়েছেন ইউহানে। দিনভর হাসপাতালগুলিতে রোগীদের ভিড়। পরিস্থিতি সামাল দিতে জরুরি ভিত্তিতে খোলা হয়েছেো আরও দুটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। তৈরি হচ্ছে হাজার শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল। সংক্রমণ এড়াতে সাধারণ মানুষ থেকে স্বাস্থ্যকর্মী – সকলের মেডিক্যাল মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক হয়েছিল আগেই। কিন্তু চলতি সপ্তাহে দেখা গেল, সেই মাস্কেও টান পড়েছে। ফলে যত দ্রুত সম্ভব বিশেষ মাস্ক তৈরি করে জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।
এই অবস্থায় গৃহবন্দি দশা চিনের মানুষজনের। ইউহানকে আগেই গোটা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। রাজধানী বেজিং এবং সাংহাই, জিয়ান, তিয়ানজিন – এই চারটি বড় শহরে দূরপাল্লার বাস পরিষেবা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। চিনের প্রাচীর দর্শন আপাতত বন্ধ। এখন একটাই আতঙ্ক কাজ করছে। ২০০৩ সালে সার্স ভাইরাসের হামলা যে বিপুল সংখ্যক প্রাণ কেড়েছিল চিনে, এবার করোনার থাবায় তারই পুনরাবৃত্তি হবে না তো? চিন ছাড়াও থাইল্যান্ড, নেপাল, হংকং, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, জাপান-সহ একাধিক দেশে ছড়িয়েছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। তবে চিনের বাইরে এখনও পর্যন্ত মৃত্যুর খবর মেলেনি বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.