ছবি: প্রতীকী
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশ ছেড়ে অন্যত্র পালাতে গিয়ে স্বয়ং মৃত্যুমুখে আফ্রিকার (Africa) ছোট্ট দেশ চাদের অন্তত ২০ জন শরণার্থী। লিবিয়ার (Libya) ধু ধু মরুভূমিতে একফোঁটা জলের অভাবে প্রাণ হারিয়েছেন তাঁরা। উদ্ধারকারী দল মরুভূমির মধ্যে তাদের দেহগুলি উদ্ধার করেছে। পাশে পড়ে ছিল একটি ট্রাক। মনে করা হচ্ছে, এই ট্রাকেই তাঁরা মরুভূমির সীমান্ত পেরিয়ে অন্যত্র যাচ্ছিলেন। মাঝপথে ট্রাকটি খারাপ হয়ে যায়। তারপর অপেক্ষা করতে করতে জলের অভাবে মৃত্যু হয়েছে ওই শরণার্থীদের। মৃতদেহ অন্তত দু’সপ্তাহ আগেকার বলে অনুমান উদ্ধারকারী দলের। এই ঘটনা শরণার্থীদের (Migrants) দুর্ভাগ্যের আরেক নিদর্শন। আগেও বেশ কয়েকবার দেশ ছেড়ে পালাতে গিয়ে শরণার্থীদের মর্মান্তিক মৃত্যুর সাক্ষী থেকেছে গোটা বিশ্ব।
লিবিয়া ও চাদ (Chad) – দু’দেশের সীমান্তে বিশাল মরুভূমি। তা পেরিয়েই অন্যত্র যাওয়ার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিলেন ওই বাসিন্দারা। সম্ভবত তাঁরা সকলেই চাদ থেকে লিবিয়া যাচ্ছিলেন। লিবিয়া সীমান্তের ১২০ কিলোমিটার ভিতর কুফ্রা নামের ওই এলাকায় ঢুকেও গিয়েছিলেন। কিন্তু তারপর মরুভূমির (Desert) মাঝে ট্রাকটি খারাপ হয়ে যাওয়ায় আর এগোতে পারেননি। কোনও সাহায্যও পাননি। তার উপর শুষ্ক মরুভূমিতে এক বিন্দু জলও মেলেনি। তৃষ্ণায় ছটফট করতে করতে প্রাণবায়ু নিভেছে তাঁদের। সম্প্রতি ২০ জনের দেহ উদ্ধার করে এমনই মনে করছে প্রশাসন। নিখোঁজ অন্তত ৩০ জন। তাঁদের কোনও হদিশই মিলছে না।
কুফ্রা অ্যাম্বুল্যান্স সার্ভিসের সদস্যদের প্রথম চোখে পড়ে তাঁদের ট্রাকটি। কালো রঙের একটি গাড়ি। তার ঠিক পাশেই পড়ে ছিল মৃতদেহগুলি। গুনে দেখা যায়, দেহের সংখ্যা ২০। কুফ্রা অ্যাম্বুল্যান্স সার্ভিসের প্রধান ইব্রাহিম বেলহাসান এক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ট্রাকের চালক সম্ভবত পালিয়ে গিয়েছেন। আর বাকিরা তৃষ্ণার জল না পেয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। তবে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে দু’সপ্তাহ আগে। ইব্রাহিম জানাচ্ছেন, ট্রাকের ভিতরে থাকা মোবাইল ফোনগুলি থেকে বোঝা যাচ্ছে, ১৪ দিন আগে শেষবার ফোন করা হয়েছিল।
শুধু মরুভূমিতেই নয়, বুধবার রবারের ডিঙি নৌকা নিয়ে ভূমধ্যসাগর দিয়ে পালাতে গিয়ে সলিলসমাধি হয়ে মহিলা, শিশু-সহ তিরিশজনের মৃত্যুর খবর মেলে লিবিয়ার জলসীমায়। যদিও তাঁদের কারও দেহ উদ্ধার হয়নি। বছর কয়েক আগেই লিবিয়া থেকে ইউরোপের পথে যাওয়ার সময় নৌ দুর্ঘটনায় তুরস্ক উপকূলের কাছে উদ্ধার হয়েছিল ছোট্ট আয়লান কুর্দির দেহ। সেই দৃশ্য ভোলেনি গোটা বিশ্ব। তারপর কানাডায় বরফের মাঝে জমে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়। এমনই শরণার্থীদের নানা মৃত্যুর ঘটনা সামনে এসেছে। সেই তালিকায় জুড়ল লিবিয়ার মরুভূমির এই ঘটনা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.