সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যে কোনও দিন, যে কোনও সময় আমেরিকার বুকে আছড়ে পড়বে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্র। আছড়ে পড়তে পারে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই। এরকমই পাকা খবর রয়েছে মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ-র কাছে। এই দুশ্চিন্তায় ঘুম উড়েছে সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (সিআইএ)-র দুঁদে গুপ্তচরদের। সিআইএ-র চরদের মধ্যে এখন তৎপরতা তুঙ্গে। তাঁদের কাছে পাকা খবর আছে, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আমেরিকার মূল ভূখণ্ডে হামলার ছক কষছেন উত্তর কোরিয়ার সর্বময় কর্তা কিম ও তাঁর অনুগত জেনারেলরা।
এই শঙ্কা বাড়িয়েছে, কিমের সাম্প্রতিক দুটি ঘোষণা। কিম তাঁর সামরিক বিজ্ঞানীদের নির্দেশ দিয়েছেন, পরমাণু অস্ত্র বা নিউক্লিয়ার ওয়ারহেডের উৎপাদন দ্বিগুণ করতে হবে। অর্থাৎ উত্তর কোরিয়ার হাতে যেন বিপুল পারমাণবিক অস্ত্র মজুত থাকে। এই অস্ত্রগুলি যাতে দ্রুত সক্রিয় করে ক্ষেপণাস্ত্রের মাথায় বসানো যায় সেই ব্যবস্থাও তৈরি রাখতে নির্দেশ দিয়েছন কমিউনিস্ট শাসক। এছাড়া গত বছর ২০ বার দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছিলেন কিম। এর মধ্যে তিন বার ছাড়া বাকি পরীক্ষাগুলি সফল হয়েছিল। এই পরীক্ষার সংখ্যা চলতি বছরে আরও বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এই দুটি সিদ্ধান্তেই ঘুম উড়েছে মার্কিন সামরিক সদর দফতর পেন্টাগনের। আমেরিকার জনগণ ও সম্পত্তির নিরাপত্তা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় সিআইএ।
সিআইএ-র সদর দফতর ভার্জিনিয়ায় বসে বিবিসি-কে এক সাক্ষাৎকারে সিআইএ-র ডিরেক্টর মাইক পম্পেই জানিয়েছেন, আমাদের কাজ হচ্ছে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ঠিক খবর বা আশঙ্কার কথা জানানো। আমরা কড়া নজরদারির মাধ্যমে আমাদের কাজ করে যাচ্ছি। ২৪ ঘণ্টা সাত দিন প্রতি সেকেন্ডে নজরদারির কাজ চলছে। যে সমস্যার কূটনৈতিক সমাধান হয় না, সেই সমস্যার সামরিক সমাধানের ঝুঁকি যতটা সম্ভব কমানোর চেষ্টা চালাচ্ছি আমরা। কারণ উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক বা পারমাণবিক শক্তি প্রয়োগ করলে তা ওই এলাকাকে ধ্বংস করে নিশ্চিহ্ন করে দেবে। তাতে বিপুল ক্ষতি হবে আমেরিকার দুই বন্ধু দেশ জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়া। তাই এটা করতে চায় না আমেরিকা। যুদ্ধকে এড়িয়ে অন্যরকম সমাধানের রাস্তা খোঁজার চেষ্টা চালাচ্ছে ওয়াশিংটন।
তাহলে কি উত্তর কোরিয়ায় অভ্যুত্থান ঘটিয়ে কিমকে ক্ষমত্যচ্যুত করতে বা উত্তর কোরিয়ার সামরিক অস্ত্রভাণ্ডার ধ্বংস করার চেষ্টা চালাচ্ছে সিআইএ? জবাব এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, হতে পারে এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হল যেখানে কিম পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তটি বাতিল করতে বাধ্য হবেন বা আমেরিকায় হামলা চালানোর সিদ্ধান্তটি হিমঘরে পাঠাতে বাধ্য হবেন। এই অবস্থায় জেনিভা থেকে ইউনিসেফ এক প্রেস বিবৃতিতে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, উত্তর কোরিয়ার উপর আন্তর্জাতিকভাবে আর্থিক ও বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায় উত্তর কোরিয়ায় ৬০ হাজারের বেশি শিশু জরুরি ত্রাণ ও খাবার পাবে না। এতে হাজার হাজার শিশু মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.