সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারত মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার লক্ষ্যে বিতর্কিত দক্ষিণ চিন সাগরের কাছে ভারত, জাপান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক নৌ-মহড়া ‘মালাবার ২০১৬’ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অভিযোগ, এই মহড়ায় অংশগ্রহণকারী মহাশক্তিশালী মার্কিন এয়ারক্রাফট ক্যারিয়র ১০ হাজার টন ওজনের জন সি স্টেনিস-এর উপর নজরদারি চালাচ্ছে একটি চিনা জাহাজ।
(পরমাণু ক্লাবে প্রবেশ নিশ্চিত জেনে ঘাতক ‘প্রিডেটর’ কিনছে ভারত)
পারস্পরিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি মজবুত করার অঙ্গ হিসেবেই এই অত্যাধুনিক রণ কৌশল প্রদর্শন মহড়ার আয়োজন করা হয়েছে। জুনের ১০ থেকে ১৭ তারিখ পর্যন্ত চলবে এই মহড়া। ২০১৫-র ডিসেম্বরে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের নয়াদিল্লি সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তাঁর আলোচনার প্রেক্ষিতে জাপানকে এই মহড়ায় অংশগ্রহণকারী তৃতীয় দেশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
বিতর্কিত দক্ষিণ চিন সাগর অঞ্চলে চিনের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসনমূলক আচরণের প্রেক্ষিতে এই সামরিক মহড়া অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আন্তর্জাতিক আইন অগ্রাহ্য করে চিনের বেপরোয়া আচরণের ফলে ভারত মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সম্প্রতি উত্তেজনা বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। জাপান ও ভারত-সহ বেশ কয়েকটি দেশ চিনের এই ‘উগ্র’ আচরণে বিশেষভাবে শঙ্কিত। পরিস্থিতিতে একটি ভারসাম্য নিয়ে আসার লক্ষ্যেই এই মালাবার মহড়া চালানোর জন্য দক্ষিণ চিন সাগর সংলগ্ন পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে বেছে নেওয়া হয়েছে। এখানে জাপানের কয়েকটি দ্বীপ রয়েছে যার ওপর চিন ভাগ বসাতে চাইছে। তিনটি দেশের অত্যাধুনিক রণতরীর একটি বহর এই যৌথ নৌ-মহড়ায় অংশ নিচ্ছে। ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯২ থেকেই নিয়মিত এই মহড়া চালাচ্ছে। জাপান এতে যোগ দিয়েছে মাত্র গতবছর।
এই মহড়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অত্যাধুনিক এফ-১৮ ফাইটার জেট বহনকারী যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস জন সি স্টেনিস, ক্ষেপণাস্ত্র বিদ্ধংসী বিমান এবং হেলিকপ্টারবাহী সাবমেরিন, পরমাণু শক্তি চালিত সাবমেরিন এবং দূরপাল্লার নজরদারি বিমান অংশ নিচ্ছে। জাপানেরও অত্যাধুনিক যুদ্ধজাহাজ এবং নৌ-নজরদারি বিমান এই মহড়ায় অংশ নিয়েছে। ভারতের চারটি যুদ্ধজাহাজ এইএনএস সতপুরা, এইএনএস সাহায়াদ্রি, এইএনএস শক্তি ও এইএনএস কির্চ এই মহড়ায় সামিল হয়েছে। ভারতের ‘পূবে সক্রিয় হও’ নীতির অঙ্গ হিসেবে এই নৌ-মহড়ার গুরুত্ব আগের চেয়ে আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এই নৌ মহড়ার চূড়ান্ত লক্ষ্য হল, অংশগ্রহণকারী দেশগুলির সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে আরও সমন্বয় সাধন এবং সময়োপযোগী কৌশলগত তৎপরতা প্রদর্শন। অস্ট্রেলিয়াও খুব দ্রুত এই মহড়ায় সামিল হবে বলে আশা কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের। অস্ট্রেলিয়ার অংশগ্রহণ এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিঃসন্দেহে শান্তি ও স্থিতিশীলতার পরিবেশ অধিক মজবুত করবে। এই মহড়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য চিনকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া, সামুদ্রিক নিরাপত্তার পরিবেশ বিঘ্ন করার চেষ্টা করলে ভারত নীরব দর্শকের ভূমিকা নিয়ে বসে থাকবে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.