সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তবে কি সুর নরম করতে বাধ্য হল ড্রাগন? ডোকলাম ইস্যুতে গতবারের চেয়ে এবার অনেকটাই স্বর নামাল বেজিং। চিনা মিডিয়ার নয়া একটি ভিডিওকে কার্যত জয় হিসাবেই দেখছে নয়াদিল্লি।
ঠিক কী ঘটেছে এবার?
কয়েকদিন আগেই চিনা সংবাদমাধ্যম জিনহুয়া একটি ব্যঙ্গাত্মক ভিডিও প্রকাশ করে ভারত ও ভারতীয় সেনাকে নিয়ে ঠাট্টা করে। ওই ভিডিও-য় ভারতের সেনানীদের প্রতি যে ভাষা ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ব্যবহার করা হয়েছিল, তার প্রবল সমালোচনা হয়। অভিযোগ ওঠে, ওই ভিডিও-য় ভারতের বিভিন্ন জাতি-ধর্মালম্বীদের নিয়েও অশালীন ঠাট্টা করা হয়।
দেখুন সেই ভিডিও:
#TheSpark: 7 Sins of India. It’s time for India to confess its SEVEN SINS. pic.twitter.com/vb9lQ40VPH
— China Xinhua News (@XHNews) August 16, 2017
পালটা ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যম ও নেটিজেনরা চিনকে নিশানা করে একাধিক ভিডিও আপলোড করতে থাকেন। ভারতের বিরুদ্ধে সাতটি ‘পাপ’ করার যে অভিযোগ তুলেছিল চিনা সংবাদমধ্যম, তা এক কথায় উড়িয়ে পালটা চিনের একাধিক আগ্রাসনের পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয় ভারতের তরফেও। অবশ্য সরকারিভাবে নয়, সংবাদ মাধ্যম মারফত। ভারতের বিরুদ্ধে চিনা ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশ ও সেনা মোতায়েনের অভিযোগ তুলেছিল বেজিং। প্রশ্ন করেছিল কীভাবে আন্তর্জাতিক আইন ভাঙতে পারে ভারত? পালটা ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলি জানিয়ে দেয়, ভারত নয় বরং চিনই গত কয়েক বছরের বারবার আন্তর্জাতিক আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছে। তা সে দক্ষিণ চিন সাগরে লালফৌজের আগ্রাসনই হোক বা দলাই লামার বিরুদ্ধে একাধিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেই হোক।
ভারতের পালটা ভিডিও:
এর মধ্যেই প্রকাশ্যে চলে আসে গত ১৫ আগস্ট লাদাখে চিনা সেনার জঘন্য আক্রমণের ভিডিও। ওই ভিডিও-য় জওয়ানদের বিরুদ্ধে চিনা সেনাকে পাথর ছুড়তে দেখা যায়। চাপে পড়ে যায় চিন। আন্তর্জাতিক মহল আগেই বেজিংয়ের সঙ্গত্যাগ করেছে। আমেরিকা বারবার চিনকে সতর্ক করে এসেছে। জাপান এসে সরাসরি ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে। গত কয়েক বছরে চিনের সঙ্গে শুধু ভারত নয়, অন্তত আধডজন দেশের সীমান্ত সংঘাত তৈরি হয়েছে। যে ভুটানের ঘাড়ে বন্দুক রেখে ভারতকে নিশানা করছে চিন, সেই ভুটানও কূটনৈতিক চ্যানেলে বরাবরই দাবি করেছে, ডোকলামে চিনা সেনার রাস্তা ও পরিকাঠামো নির্মাণের বিরোধী তারা। ডোকলাম ভুটানের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সবমিলিয়ে কোনওভাবেই ডোকলাম ইস্যুতে জয় সম্ভব নয় বুঝে এবার শান্তির পথে হাঁটার বাণী শোনাল বেজিং।
লাদাখে হামলার ভিডিও:
4 days back our soldiers thrashed “Newly Trained Stone Pelter” Chinese army @ banks of Pangonse in Ladakh.
Chinese r on right side of screen pic.twitter.com/7Od7rQzc9c— Maj Surendra Poonia (@MajorPoonia) August 19, 2017
ভারত আজন্ম চিনের শত্রু নয় বলেও উল্লেখ করা হয়েছে এই ভিডিও-য়। চিনে কোনও স্বাধীন মিডিয়ার অস্তিত্ব নেই, পুরোটাই চলে সরকারি নিয়ন্ত্রণে। আরও স্পষ্ট করে বললে কমিউনিস্ট পার্টির নির্দেশে। তবে কি ডোকলাম নিয়ে এটাই চিনের নয়া বক্তব্য? জিনহুয়ার টুইটার হ্যান্ডেলে প্রকাশিত নয়া ভিডিও-য় ভারত ও চিনকে একাসনে বসানো হয়েছে। চিনা উপস্থাপক এবার অনেক বেশি ভদ্র ও মার্জিত। ভাষাও যথেষ্ট সংযত। এবার আর ভুটানের কোনও উল্লেখ করা হয়নি। শান্তির পথে ডোকলাম ইস্যুর সমাধান চেয়েছে চিন। তবে ভারতকে বিনা শর্তে সেনা সরিয়ে নিতে হবে বলে এবারও দাবি করেছে কমিউনিস্ট দেশটি। কেন্দ্র অবশ্য ডোকলাম ইস্যুতে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়বে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে। সেনাও সরবে না সিকিম সীমান্ত থেকে। বরং দেশের সেনাবাহিনী ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। কেনা হচ্ছে একগুচ্ছ নয়া সমারিক সরঞ্জাম। আমেরিকার কাছ থেকে অ্যাপাচে অ্যাটাক হেলিকপ্টার কিনছে সেনা। ভারতের সবচেয়ে বিশ্বস্ত সাঁজোয়া গাড়ি টি-৯০ ‘ভীষ্ম’তে বসছে থার্ড জেনারেশন মিসাইল। সবমিলিয়ে চিনা ড্রাগনকে সুর নরম করতে বাধ্য করল নয়াদিল্লি, এমনটাই মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
বেজিংয়ের নয়া ভিডিও:
Sober, cooperative solution is in need to tackle China-India border standoff (#DoklamStandoff). Watch our latest #TalkIndia program for more pic.twitter.com/VcnEwv3nDc
— China Xinhua News (@XHNews) August 20, 2017
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.