ফাইল ফটো
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আসন্ন জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিতে ভারতে আসছেন না চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। সরকারিভাবে এই খবরে সিলমোহর দিয়েছে বেজিং। এই নিয়ে বিভিন্ন মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে। চিনের নতুন ম্যাপ বিতর্কের ছায়াই পড়েছে এই শীর্ষ সম্মেলনে বলে ধারণা অনেকের। কিন্তু নানা গুঞ্জনের মাঝেই চিনের বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, ভারতের নেতৃত্বে হওয়া জি-২০ সম্মেলনে তাদের পূর্ণ সমর্থন থাকবে। এই সামিটকে সফল করতে সকলের সঙ্গে একযোগে কাজ করবে বেজিং।
সোমবার চিনের তরফে জানানো হয়েছিল, আসন্ন জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিতে ভারতে যাচ্ছেন না চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তাঁর বদলে নয়াদিল্লিতে এই সামিটে যোগ দেবেন প্রিমিয়ার লি কিয়াং। মঙ্গলবার এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র মাও নিং। তখন তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, জিনপিংয়ের ভারতে না যাওয়ার কারণ কি দু’দেশের মধ্যে চলতে থাকা চাপানউতোর? এই যুক্তি নস্যাৎ করে মাও কিং বলেন, “ভারত-চিন সম্পর্ক এখন স্থিতিশীল। দু’দেশই বিভিন্ন স্তরে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ বজায় রেখেছে। দু’দেশের মানুষের স্বার্থে সম্পর্কের উন্নতিতে কাজ করা হচ্ছে। আগামিদিনেও ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ঠিক রাখতে আমরা কাজ করতে প্রস্তুত।” তিনি আরও বলেন, “ভারতের নেতৃত্বে হওয়া জি-২০ সম্মেলনে আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক মজবুত করার মঞ্চ এই সামিট। জি-২০কে সফল করতে সকলের সঙ্গে একযোগে কাজ করব আমরা।”
উল্লেখ্য, গত ২৮ আগস্ট দেশের নতুন সরকারি ম্যাপ প্রকাশ করে চিন। সেখানে অরুণাচল প্রদেশকে নিজের বলে দাবি করেছে তারা। এমনকী আকসাই চিনও নাকি তাদের, দাবি বেজিংয়ের। এরপরই জিনপিং প্রশাসনের নিন্দায় সরব হয় মোদি সরকার। চিনের এমন পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা করে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর বলেন, এইরূপ ম্যাপ প্রকাশই চিনের অভ্যাস। ভারতের এমন কটাক্ষের পর পালটা আক্রমণ করে চিনের বিদেশমন্ত্রক জানায়, ”আমরা আমাদের ভূখণ্ডের সীমানা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। আইন মেনেই নতুন ম্যাপ তৈরি করা হয়েছে। এই নিয়ে বেশি ভাবার কোনও কারণ নেই।” এরপরই দু’দেশের স্নায়ুযুদ্ধ আরও তীব্র হয়। নানা মহলে জল্পনা শুরু হয়, আদৌ কী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মুখোমুখি হবেন জিনপিং?
তবে এদিন ভারতের প্রতি চিনের সুর নরম করা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে। একেই দু’দেশের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে সংঘাত সপ্তমে। তার মাঝে আগুনে ঘি ঢেলেছে চিনের নতুন ম্যাপ প্রকাশ। ফলে ভারতের মাটিতে দাঁড়িয়ে চিনের প্রিমিয়ার সেদেশের হয়ে কী কী বার্তা দেন, সেদিকেই এখন নজর সকলের।
অন্যদিকে, জিনপিংয়ের ভারতে না আসা নিয়ে চিনকে আক্রমণ শানাতে আসরে নেমেছে আমেরিকা। জি-২০তে বেজিং ‘বাধা সৃষ্টি’ করবে। এমনই মত মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানের। মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের সাংবাদিক সম্মেলনে ভারত-চিন সম্পর্ক নিয়ে সুলিভান বলেন,”ভারত-চিন চাপানউতোরের প্রভাব যদি জি-২০ সামিটে পড়ে তাহলে তার দায় চিনেরই। বেজিং যদি চায় সামিটে ‘বাধা সৃষ্টি’ করতে তাহলে অবশ্যই করতে পারে। তাদের কাছে সেই পথ খোলা রয়েছে।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সম্মেলনে ভারত,আমেরিকা ও চিনের একই মঞ্চে আসা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। তিন রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে আলোচনা হতে পারত ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, চিন সাগর ও মুক্ত বাণিজ্যপথের সমাধান সূত্র নিয়ে। কিন্তু এখন আর তা সম্ভব নয়। একই মঞ্চে মোদি-বাইডেন-জিনপিংকে দেখার জন্য মুখিয়ে ছিল গোটা দুনিয়া।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.