সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শি জিনপিংয়ের আমলেই ভারতের বিরুদ্ধে সবথেকে বেশি আক্রমণাত্মক আচরণ করেছে চিনের সরকার। সম্প্রতি মার্কিন কংগ্রেস দ্বারা নিযুক্ত একটি কমিশনের রিপোর্টে এই দাবিই করা হয়েছে। পরিষ্কার বলা হয়েছে, জিনপিংয়ের আগে চিনের ক্ষমতায় থাকা কোনও রাষ্ট্রপতিই ভারতের প্রতি এত আগ্রাসী মনোভাব দেখাননি। ভারতের প্রতি বেজিংয়ের পররাষ্ট্র নীতি কোনওদিনই এরকম ছিল না।
মার্কিন-চিন অর্থনৈতিক এবং নিরাপত্তা পর্যালোচনা কমিশন (US-China Economic and Security Review Commission) -এর ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, চিনের কমিউনিস্ট পার্টি (CCP) -এর সাধারণ সম্পাদক শি জিনপিংয়ের নেতৃত্বে বেজিং সবসময় দিল্লির প্রতি খুব আক্রমণাত্মক আচরণ করেছে। প্রতিমুহূর্তে আগ্রাসী একটা মনোভাব লক্ষ্য করা গিয়েছে। গত ২০১৩ সাল থেকে সীমান্ত ও নিয়ন্ত্রণরেখা নিয়ে ভারতের সঙ্গে পাঁচবার বড়সড় গন্ডগোলে জড়িয়েছে তারা। সম্পর্ক ঠিক রাখতে ভারতের পক্ষ থেকে বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবহার করা হলেও বারবার বিশ্বাসঘাতকতা করেছে চিন। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ঠিক করতে ও সীমান্ত সংক্রান্ত বিবাদ মেটাতে দুটি দেশের মধ্যে একাধিক চুক্তি হয়েছে। কিন্তু, প্রতিবার চুক্তি করার পরও সীমান্তে ভারতের এলাকা দখলের চেষ্টা করেছে চিন। শান্ত পরিবেশ অশান্ত করে তোলার চেষ্টা করেছে।
এপ্রসঙ্গে ওই রিপোর্টটির লেখক ও কমিশনের একজন নীতি বিশ্লেষক উইল গ্রিন জানান, চিনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের এই আগ্রাসী মনোভাবের পিছনে ভারতের সঙ্গে আমেরিকার ভাল সম্পর্কই দায়ী। হোয়াইট হাউস ও তাদের সহযোগীদের সঙ্গে দিল্লির ঘনিষ্ঠতা জিনপিংয়ের মানসিক চাপ বাড়িয়েছে। আর তারই ফলশ্রুতি হল সম্প্রতি লাদাখে হয়ে যাওয়া ভারতের সঙ্গে চিনের সেনার সংঘর্ষের ঘটনা। এর মধ্যে দিয়ে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, আমেরিকার সঙ্গে মাখোমাখো সম্পর্ক না রাখার বিষয়ে ভারতকে একটা বার্তা দিতে চাইছে চিন। হুঁশিয়ারি দিচ্ছে।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ২০১২ সালে শি জিনপিং চিনের রাষ্ট্রপতি পদে বসার পর থেকেই ভারতের প্রতি চিনের আচরণে বদল আসতে শুরু করে। ২০১৩ সালে অরুণাচলে সীমান্ত নিয়ে বড়সড় সংঘাতও হয়। ১৯৮৭ সালের পর দু’দেশের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে এতদিন বাদে কোনও বড় ঘটনা ঘটে। মাঝে ছোটখাট সমস্যা হলেও শান্তিই বিরাজ করছিল। তবে ২০১৪ সালে ভারতের ক্ষমতায় এনডিএ সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর আসনে নরেন্দ্র মোদি বসতেই পরিস্থিতি আরও বদলে যায়। এরপর থেকে ভারতের সঙ্গে আমেরিকার সখ্যতা যত বেড়েছে, নয়াদিল্লির প্রতি রাগ জন্মেছে বেজিংয়ের। লাদাখের ঘটনা তার প্রমাণ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.