সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ছক সাজানো সম্পূর্ণ। এবার ঘুঁটি চালার সময়। বিস্তর সমীকরণ, জটিল গণনা শেষে আদিপত্যের লড়াইতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে আমেরিকা, রাশিয়া ও চিনের মতো মহাশক্তিরা। তাই পরমাণু অস্ত্রে বলীয়ান দেশগুলির সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা ক্রমশ বাড়ছে। এমনই পরিস্থিতিতে দক্ষিণ চিন সাগরে, বেজিংয়ের আগ্রাসী কার্যকলাপ পরিস্থিতি আরো ঘোরালো করে তুলছে। দক্ষিণ চিন সাগরের বিতর্কিত দ্বীপগুলিকে ক্রমশ সামরিক ঘাঁটিতে পরিণত করে চলেছে লালফৌজ। মোতায়েন করা হয়েছে মিসাইল, জঙ্গিবিমান ও অত্যাধুনিক রাডার সিস্টেম।
সূত্রের খবর, এবার চরম যুদ্ধ প্রস্তুতি শুরু করেছে বেজিং। মার্কিন হুঁশিয়ারিকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে এবার বিতর্কিত দক্ষিণ চিন সাগরে আরও একটি বিমানবাহী রণতরী মোতায়েন করতে চলেছে লালফৌজ। এটি চিনের দ্বিতীয় বিমানবাহী রণতরী। বর্তমানে লালফৌজের কাছে এধরনের লিয়াওনিং নামের মাত্র একটি যুদ্ধজাহাজ রয়েছে। দিন কয়েক আগেই তাইওয়ান জলসীমা লঙ্ঘন করে শক্তিপ্রদর্শন করেছিল লিয়াওনিং।
কয়েক দিন আগেই দক্ষিণ চিন সাগর নিয়ে বেজিংকে চরম হুঁশিয়ারি দিয়েছিল আমেরিকা। বিতর্কিত জলরাশিতে কারও আগ্রাসন সহ্য করা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছিল ওয়াশিংটন। বিতর্কিত দ্বীপগুলিতে পরিকাঠামো নির্মাণে বেজিংকে বাধা দিতে আমেরিকাকে ‘যুদ্ধ’ ঘোষণা করতে হবে। এই বলে কয়েক দিন আগে আমেরিকাকে হুমকি দিয়েছিল চিন৷ তারপরই ইউএস সেক্রেটারি অফ স্টেট রেক্স টিলারসন বেজিংয়ের ‘দাদাগিরি’ রুখতে দক্ষিণ চিন সাগরের দ্বীপগুলিতে কোনওরকম পরিকাঠামো নির্মাণ করা থেকে চিনকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন৷ তাই মার্কিন সেনাকে ঠেকাতে তড়িঘড়ি দ্বিতীয় বিমানবাহী রণতরীটি বানাচ্ছে চিন। দালিয়ান বন্দরে চলছে নির্মাণ। ক্ষমতায় এসেই চিনকে সতর্ক করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাই আগেভাগেই যুদ্ধের জন্য নিজেকে তৈরি করছে লালফৌজ।
এশিয়া মহাদেশে বেজিংয়ের সামরিক উচ্চাকাঙ্খার পথে ভারত একটি প্রাচীর বলে মনে করে সে দেশের কমিউনিস্ট সরকার৷ তাই ভারতকে রুখতে ক্রমাগত পাকিস্তান ও অন্যান্য ভারত বিরোধী শক্তিগুলোকে মদত জুগিয়ে চলেছে চিন৷ দক্ষিণ চিন সাগরে সামরিক ঘাঁটি তৈরি করছে চিন৷ পাকিস্তানের করাচি ও গদর বন্দরেও মোতায়েন রয়েছে চিনা রণতরী৷ তাই লালফৌজকে ঠেকাতে জাপান ও ভিয়েতনামের সঙ্গে ক্রমাগত সামরিক সহযোগিতা বাড়াচ্ছে নয়াদিল্লি৷ এমনকি ভিয়েতনামকে ভয়ঙ্কর আকাশ মিসাইলও সরবরাহ করতে পারে ভারত৷ প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকর সাফ জনিযে দিয়েছেন, যে ভিয়েতনামের সেনাকে প্রশিক্ষণ দেবেন এদেশের জওয়ানরা৷ তিনি আরও বলেছেন, হ্যানয়কে কিলো ক্লাস সাবমেরিন ও সুখোইয়ের মত অত্যাধুনিক জঙ্গি বিমান চালানোর প্রশিক্ষণ দেবে দিল্লি৷ ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি হ্যানয় সফরে গিয়ে কৌশলগত ভাবে পারস্পরিক সহযোগিতার বার্তা দিয়েছেন৷
অন্যদিকে, জাপানের সঙ্গেও ভারত সামরিক সহযোগিতা ক্রমশ বাড়াচ্ছে৷ দক্ষিণ-চিন সাগরে লালফৌজের আগ্রাসী কার্যকলাপে উদ্বিগ্ন জাপান এবার নয়াদিল্লির সঙ্গে হাত মিলিয়ে চিনকে রুখতে প্রস্তুত৷ দক্ষিণ-চিন সাগরে লালফৌজকে নজরে রেখে ভারত-জাপান ও আমেরিকার নৌসেনারা ‘মালাবার’ যুদ্ধ মহড়াও সেরে ফেলেছে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.