সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আফগানিস্তানে (Afghanistan) শান্তি ফেরাতে আমেরিকার সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে তালিবান। আবার একই সঙ্গে সে দেশে থাকা মার্কিন সেনার উপর প্রাণঘাতী হামলাও হয়ে চলেছে। আর এর নেপথ্য কারণ খুঁজতে গিয়ে হতবাক মার্কিন গোয়েন্দারাও। সেই তথ্য সম্প্রতি আমেরিকার বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও জানানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাদের হত্যা করতে স্থানীয় জঙ্গিদের মোটা অর্থের টোপ দিয়েছে চিন। তবে সরকারিভাবে খবরের সত্যতা কেউ স্বীকার করেনি।
উল্লেখ্য, কয়েক মাস আগেই এই ধরনের হামলার পিছনে রাশিয়ার (Russia) হাত রয়েছে বলে সিআইএ সূত্রকে উদ্ধৃত করে খবর ছড়িয়েছিল। যা ‘ভুয়ো’ বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন স্বয়ং ট্রাম্প। গোয়েন্দা তথ্য থেকে এটা স্পষ্ট নয় যে, ইতিমধ্যে চিনের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে এমন কোনও হামলা সংঘটিত হয়েছে কিনা। তবে অতীতে মার্কিন গোয়েন্দাদের সংগৃহীত বহু তথ্য শেষ পর্যন্ত ভুল বলেও প্রমাণিত হয়েছে। বিশেষত, আফগানিস্তানে, মধ্যপ্রাচ্যে। তাই কোনও তরফেই প্রকাশ্যে বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করা হচ্ছে না। সূত্রের খবর, গত ১৭ ডিসেম্বর আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট ও’ব্রায়েন লিখিত ব্রিফিংয়ে ট্রাম্পকে এই তথ্য জানিয়েছেন। আগে তা মৌখিকভাবেও জানানো হয়েছিল। এবং মার্কিন শীর্ষ কর্তারা তা মেনে নিয়েছেন। চিনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধ, দক্ষিণ চিন সমুদ্র নিয়ে আমেরিকার সম্পর্ক অত্যন্ত তিক্ত। এই তথ্য সত্যি হলে তা আরও গুরুতর পর্যায়ে চলে যাবে।
ইতিমধ্যেই ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকরা চাইছেন, বেজিংয়ের উপর চাপ আরও বাড়ানো হোক। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের ডিরেক্টর জন র্যাটক্লিফ। অবশ্য এর পিছনে অন্য উদ্দেশ্যও রয়েছে। যাতে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দায়িত্ব নিয়েও চিনের সঙ্গে উত্তেজনা সহজে প্রশমিত করতে না পারেন। মার্কিন প্রশাসনের একাধিক শীর্ষ কর্তা কম্পিউটার হ্যাকিং, মার্কিন নির্বাচনে হস্তক্ষেপের চেষ্টার জেরে রাশিয়াকে বড় বিপদ বলে মনে করলেও ট্রাম্প, র্যাটক্লিফের মতো কেউ কেউ চিনের দিকেই নজর রেখে বসে আছেন। তাই সাইবার হানার শিকার হয়ে বিদেশ সচিব মাইক পম্পেও রাশিয়ার দিকে আঙুল তোলা সত্ত্বেও তা মানতে চাননি ট্রাম্প। ক্রুদ্ধ ভাবে বলেন, “যা কিছু হবে, খালি রাশিয়ার দিকে আঙুল তোলা হয়। কিন্তু চিনের ভূমিকার কথা কেউ (সংবাদমাধ্যম) ভুলেও উল্লেখ করে না।”
যদিও আমেরিকার সঙ্গে তিক্ত সম্পর্ক সত্ত্বেও আফগানিস্তান বা অন্যত্র মার্কিন সেনার বিরুদ্ধে চিনের ছায়াযুদ্ধের কথা আগে শোনা যায়নি। বরং বিশেষজ্ঞদের মতে, এর পিছনে রাশিয়ার হাত থাকা অনেক বেশি যুক্তিসঙ্গত। এবং রুশ সামরিক গুপ্তচররা যে তালিবানকে অর্থের টোপ দিয়েছিল, তার তথ্য পেন্টাগন ও মার্কিন গোয়েন্দাদের কাছে ছিল। সে জন্য রুশ বিদেশমন্ত্রীকে সরাসরি হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন পম্পেও। কিন্তু বেজিংয়ের রাজনৈতিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ মিললে তার পরিণতি অত্যন্ত গুরুতর হতে পারে। বাইডেনকে ইতিমধ্যেই দৈনন্দিন ব্রিফিং পাঠানো শুরু হয়েছে। তিনি এই তথ্য জানেন কি না, নিশ্চিত করতে পারেনি তাঁর ঘনিষ্ঠমহল। এই ধরনের তথ্য প্রকাশ্যে আসার পিছনে ট্রাম্প প্রশাসনের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলেও মনে করছেন অনেকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.