সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সন্ত্রাস কিংবা যুদ্ধ৷ কীসের লাভ কীসের ক্ষতি, তা জানা যায়নি৷ কিন্তু অসহায় মুখগুলির কোনও বদল হয় না৷ কেউ হারায় বাবা-মাকে৷ কেউ হারিয়ে ফেলে মাথার ছাদ৷ নিজের প্রাণটাও হারিয়ে ফেলে অনেক সময়৷ সংবেদনশীল মানুষের মনে জ্বলজ্বল করছে সমুদ্রসৈকতে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা একরত্তির আয়লান৷ অ্যাম্বুল্যান্সের রক্তমাখা সেই বাচ্চাটার ছবিগুলি এখনও টাটকা৷ সিরিয়ায় শান্তি ফিরিয়ে আনতে একের পর এক বৈঠক হয়েছে৷ আবার নিউ ইয়র্কে বাতিলও হয়েছে শান্তিপ্রক্রিয়ার বৈঠক৷ চুক্তি বাতিল হয়েছে৷ চেষ্টা হয়েছে সংঘর্ষ বিরতির৷ কিন্তু আতঙ্কের রেশ এতটুকুও মিলিয়ে যায়নি৷
সিরিয়ায় শৈশবও যে বিপন্ন, তার প্রমাণ মিলেছে সম্প্রতি৷ রাষ্ট্রশক্তির সামনে ধুকপুক করছে ছোট ছোট প্রাণগুলি৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে পড়া একটি ভিডিওতে এর প্রমাণ মিলেছে৷ আট বছরের একটি ছোট্ট মেয়ে৷ কপাল থেকে চুঁইয়ে পড়ছে রক্ত৷ চোখের জল অঝোরে পড়ছে গাল বেয়ে৷ উমনোঝুমনো চুল৷ সারা গায়ে ধুলো মাখা৷ এই পুঁচকি মেয়েটার বাড়ি তালবিসে৷ একরত্তি কাঁদতে কাঁদতেই জানিয়েছে তার নাম আয়া৷ ও বাড়িতেই ছিল৷ আচমকাই হুড়মুড় করে ছাদটা ভেঙে পড়ে ওর পাশেই৷ একটানা কেঁদে চলেছে সে৷ আর তার মাঝেই গায়ের ধুলোবালি আর রক্ত মুছে তাকে শান্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা৷
ইন্টারনেটে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এই ভিডিও৷ তালবিসের একটি গণমাধ্যমই প্রথম এই ছবিটি আপলোড করে৷ তারাই জানিয়েছে, সোমবার বিমান হামলায় ধসে পড়েছে আয়াদের বাড়ি৷ ধ্বংসস্তূপ থেকে তাকে ও তার আত্মীয়স্বজনকে উদ্ধার করা হয়৷ আয়ার আরও একটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন কয়েকজন সমাজকর্মী৷ সেটা যুদ্ধের আগের ছবি৷ আঁচড়ানো চুলে, ছোট্ট সুন্দর একটি মেয়ে আয়া৷ বাবা-মা, ভাই বোন, রোজ স্কুলে যায়৷ ফিরে আসে৷ বাবা-মার সঙ্গে আনন্দ করে৷ বন্ধুদের সঙ্গে দৌড়ে দস্যিপনা করে বেড়ায়৷
কিন্তু সেই আয়াকে আর চেনা যাচ্ছে না৷ এখন সে ‘যুদ্ধ’ নামক ভয়ানক এক দৈত্যের কবলে পড়েছে৷ কে তাঁকে বাঁচাবে? পুরনো আয়ার সঙ্গে তার কোনও মিল নেই৷ সারা চোখমুখে আতঙ্ক৷ ভয়ে কাঁপছে সে৷ আর অবিরাম চোখ দিয়ে জল পড়ছে৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় এই দু’টি ছবি পাশাপাশি পোস্ট করেছেন অনেকে৷ যুদ্ধবিমান ওর চুল এলোমেলো করে দিয়েছে৷ রক্তে রাঙিয়ে দিয়েছে মুখ৷ কবে আবার সে নতুন করে প্রাণশক্তি ফিরে পাবে, উত্তর মেলে না৷ কোনও রাষ্ট্রশক্তির কাছে এর উত্তর নেই৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.