সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আমাজনের জঙ্গলে বিমান ভেঙে পড়ার পরই নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল চার খুদে। তারপর তল্লাশি অভিযান চালিয়ে দীর্ঘ ৪০ দিন পর হদিশ মেলে সেই চারজনের। সেনা জওয়ানরা তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পাঠায়। কিন্তু ভয়ংকর রাক্ষুসে যে জঙ্গলে কয়েক ঘণ্টা টিকে থাকাই দায়, সেখানে কীভাবে ৪০ দিন ধরে বেঁচে রইল চারজন? এমন প্রশ্ন অনেকের মনেই উঁকি দিয়েছে। এবার মিলল সেই উত্তর।
আসলে তাদের পরিচয় এবং যে পরিবেশে তারা বড় হয়েছে, সেই সৌজন্যেই তারা গভীর জঙ্গলের মধ্যে কঠিন পরিস্থিতিতেও নিজেদের প্রাণ রক্ষা করতে পেরেছে। আসলে এই চার খুদে আদিবাসী পরিবারের সদস্য। তাই ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগে থেকেই অন্তঃসত্ত্বা মা তাদের সঙ্গে পরিবেশের এক অদ্ভুত গভীর সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন। জন্মের পর থেকে আবার চার খুদের ঠাকুরমা তাদের ‘ঝোপের শিশু’ বলে ডাকতেন। ছোটবেলা থেকেই তারা জানে, জঙ্গলের ভিতরের কোন গাছের শিকড় খেলে কোনও ক্ষতি হয় না। কিংবা কোন বীজ খেয়েও বেঁচে থাকা সম্ভব।
কলম্বিয়ার জাতীয় আদিবাসী সংস্থার তরফে বলা হয়েছে, জঙ্গলে বেঁচে থাকার মন্ত্র গর্ভস্ত অবস্থা থেকেই পেতে শুরু করে এই সন্তানরা। আর বাস্তবে সেই ছবিটাই ফুটে উঠেছে আমাজনের জঙ্গলে। তল্লাশি অভিযানের সময় হেলিকপ্টার থেকে জঙ্গলের মধ্যে শুকনো খাবারের প্যাকেট ফেলা হয়েছিল। যার হদিশ পেয়েছিল খুদেরা। কিন্তু তার বাইরেও বীজ, গাছের শিকড় খেয়ে দিন কাটিয়েছে তারা।
তবে উদ্ধারকারীরা বলছেন, জঙ্গলে থাকা নিয়ে তাদের জ্ঞান থাকলেও কোনও ঐশ্বরিক ক্ষমতা ছাড়া যে ৪০ দিন কাটিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়, এটা মানতেই হবে। আর সেই কারণেই কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেড্রো বলেছিলেন, ভয়ংকর ঘন জঙ্গলে তাদের জীবনযুদ্ধের এই জয় নিঃসন্দেহে দৃষ্টান্ত হয়ে রইল। ইতিহাস তাদের মনে রাখবে। পাশাপাশি আদিবাসী ও সেনাদের যৌথ অভিজ্ঞতার সৌজন্যেই যে চার খুদেকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে, সে কথাও শোনা গিয়েছে তার মুখে।
উল্লেখ্য, গত ১ মে এই দুর্ঘটনাতেই তাদের মা ম্যাগডানেনা, পাইলট এবং আরও এক ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছিলেন। গত ১৬ মে কলম্বিয়ার ঘন জঙ্গলে বিমানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গিয়েছিল। সেই সময় তাঁদের মৃতদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হলেও হদিশ পাওয়া যায়নি চার খুদের। তবে জারি ছিল তল্লাশি অভিযান। অবশেষে মেলে সাফল্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.