সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চরম আর্থিক সংকটে ধুঁকছে পাকিস্তান। দেউলিয়া দশায় আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারের (IMF) থেকে ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ সাহায্য চেয়েছে তারা। সেই টাকার শর্ত হিসেবে এবার নিজের দেশে বড় সিদ্ধান্ত শহবাজ শরিফের সরকার। ছেঁটে ফেলা হল পাকিস্তানের দেড় লক্ষ সরকারি পদ। পাশাপাশি ৬টি মন্ত্রকও। দেশের ভিখারির দশায় এই ক্ষেত্রগুলির অবাঞ্ছিত হিসেবে দাগিয়ে দিয়েছিল আইএমএফ।
ধুঁকতে থাকা পাকিস্তানকে সোজা পায়ে দাঁড় করাতে গত ২৬ ডিসেম্বর আর্থিক সাহায্যের প্রস্তাবে সিলমোহর দিয়েছে আইএমএফ। সেই প্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার দিয়েও দেওয়া হয়েছে। তবে এই টাকার সঙ্গে একাধিক শর্তও দিয়েছে আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার। যেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, একটি পয়সাও অপ্রয়োজনে খরচ করা যাবে না। আয়করের মাধ্যমে জিদিপি বাড়াতে হবে দেশের। পাশাপাশি কৃষি, রিয়েল স্টেট মতো একাধিক ক্ষেত্রে কর চাপাতে হবে। অগাধ ছাড়ের পরিমাণ কমাতে হবে সরকারকে। এমনই অসংখ্য শর্তে সম্মত হওয়ার পর আইএমএফ-এর টাকা পেয়েছে পাকিস্তান। টাকা হাতে পাওয়ার পরই সেখানে শুরু হল শর্ত পালনের প্রক্রিয়া।
যে দেশে আর্থিক দুর্দশা আকাশ ছুঁয়েছে সেখানে বিলাসিতা মানায় না। সেই মতো পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মহম্মদ ঔরঙ্গজেব বলেন, শর্ত মেনে আমরা ৬ টি মন্ত্রক বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বাকি আরক ২টি মন্ত্রককে একত্রিকরণের কাজ চলছে। গত বছর নতুন করে ৩ লক্ষ নতুন করদাতা নথিভুক্ত হয়েছিলেন। এ বছর আরও ৭ লক্ষ নতুন করদাতা যুক্ত হয়েছেন। ফলে আয়কর গতবারের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। অবাঞ্ছিত খরচ কমাতে আমরা দেড় লক্ষ চকরির পদ ছেঁটে ফেলেছি।
উল্লেখ্য, আফগানিস্তানের মাটিতে আমেরিকার যুদ্ধের ক্ষেত্রে সাহায্যের জেরে দীর্ঘ বছর ধরে মার্কিন অর্থে পুষ্ট হয়েছে পাকিস্তান। যদিও সেই অর্থের প্রায় পুরোভাগ ভারত বিরোধিতায় ও সন্ত্রাসে মদতের কাজে লাগিয়েছে তারা। যার জেরে পাকিস্তানে একটা শ্রেণি যেমন বিপুল অর্থের শিখরে উঠেছে। অন্য শ্রেণি গরিব থেকে গরিবতর হয়েছে। পরিস্থিতি এমন যে পাকিস্তানের জনগণ শুধু সৌদি আরবে ভিক্ষে করতে যায় না। আস্ত একটা দেশ কার্যত নেমে পড়েছে ভিক্ষাবৃত্তিতে। এহেন পরিস্থিতিতে শর্ত সাপেক্ষে আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারের সাহায্য মিলল ঠিকই, তবে সে টাকা কতদূর দেশের আর্থিক উন্নতিতে খরচ হবে? পাকিস্তানের অতীত ইতিহাস নতুন করে সে প্রশ্ন তুলছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.