সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জর্জ ফ্লয়েড হত্যা টলিয়ে দিয়েছে করোনা কবলিত বিশ্বকে। সংক্রমণের ভয় উপেক্ষা করে শুধুমাত্র জর্জের জন্য পথে নেমেছেন হাজার লক্ষ মানুষ। শনিবার বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বর্ণবৈষম্যের বিরোধিতায় মিছিল করেন সাধারণ মানুষ। সেসব ছবি আপাতত ভাইরাল। প্রতিবাদের এই ছবিতেই দেখা গেল বিশেষ একজনকে। মাস্ক পরে অটোয়ার রাস্তায় বর্ণবিদ্বেষ বিরোধী মিছিলে হাঁটলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। শুধু তাই নয়, রাস্তার উপর হাঁটু গেড়ে বসে মার্কিন পুলিশের বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদও জানালেন। ঠিক যেভাবে রাস্তায় ফেলে জর্জের ঘাড়ে হাঁটু দিয়ে আঘাত করে খুন করা হয়েছিল। প্রতিবেশী প্রশাসনের বিরুদ্ধে এভাবে ট্রুডোর প্রকাশ্য রাস্তায় হাঁটা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল।
শুক্রবার অটোয়ায় পার্লামেন্ট হিলের সামনে জর্জ ফ্লয়েডের খুনের প্রতিবাদে চলছিল মিছিল। পোশাকি নাম যার – Black lives matter, অর্থাৎ কৃষ্ণাঙ্গদের জীবনের দাম আছে। সেখানে আচমকাই নিরাপত্তারক্ষী বেষ্টিত হয়ে পৌঁছে যান কানাডার জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী জাস্টি ট্রুডো। সাদা-কালো শার্ট, ট্রাউজারের সঙ্গে মুখে ছিল কালো মাস্ক। মিছিলে হাঁটার পর প্রতিবাদীরা সবাই মার্কিন পুলিশের অনুকরণে পথে হাঁটু গেড়ে বসে পড়েন। এক প্রতিবাদী ট্রুডোকেও ওই ভঙ্গিমায় বসার আবেদন জানান। কোনও প্রশ্ন না করে প্রধানমন্ত্রী অবিকল তাঁদের মতো হাঁটু গেড়ে বসে পড়েন! আর এই ছবি নিমেষেই ভাইরাল। মিছিল শেষে প্রতিবাদকারীরা দেশের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। কৃষ্ণাঙ্গদের পাশে দাঁড়ানোর প্রতীক হিসেবে এদিন সকলের মুখে ছিল কালো অথবা বাদামি রঙের মাস্ক।
মার্কিন কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ড জ্বলন্ত ইস্যু হয়ে উঠতেই সপ্তাহের গোড়ায় কানাডার প্রধানমন্ত্রী একে ‘ভয়াবহ’ বলে চিহ্নিত করেছিলেন। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছেন বলেও জানিয়েছিলেন। শুক্রবার অটোয়ার মিছিলে তাঁকে ট্রাম্প প্রশাসনের পুলিশের এমন বর্বরোচিত আচরণ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে টানা ২১ সেকেন্ড কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে পারেননি জাস্টিন ট্রুডো। বোঝাই যাচ্ছিল, তিনি বেশ মর্মাহত।
তবে শুক্রবারের মিছিলে শুধুমাত্র কানাডার প্রধানমন্ত্রীর প্রতিবাদই নয়, নজর কেড়েছে কানাডিয়ান পুলিশের আচরণও। টরেন্টোর পুলিশ প্রধান মার্ক সন্ডার্স-সহ কয়েকজন পুলিশ আধিকারিক প্রতিবাদীদের সঙ্গে দেখা করেন। তারপর নিজেদের টুপি খুলে হাঁটু গেড়ে বসে তাঁদের সমর্থনও জানান। আসলে, সন্ডার্স নিজে একজন কৃষ্ণাঙ্গ। তাই তিনি অন্তর থেকে প্রতিবাদে শামিল হবেন, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু জাস্টিন ট্রুডোর এই আচরণ বোধহয় বুঝিয়ে দিল, প্রকৃত রাষ্ট্রনেতা জনতার রক্ষাকর্তা, জনহিতৈষী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.