সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সপ্তাখানেক ঘুরে বেড়ানোর পর দিশা মিলল। কানাডায় আশ্রয় পেলেন পরিবার ছেড়ে পলাতক সৌদি তরুণী রহফ মহম্মদ আল কুনুন। এতদিন ব্যাংককে রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কমিশনের আশ্রয়ে ছিলেন অষ্টাদশী। অস্ট্রেলিয়া প্রশাসনের সঙ্গে তাঁকে আশ্রয়দান নিয়ে রাষ্ট্রসংঘের তরফে কথাবার্তা বলা হলেও, তা বিশেষ এগোয়নি। সেই শাপ বরং বর হয়েই এল কুনুনের জীবন। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো নিজে এগিয়ে এসেছেন। বলেছেন, সাহসী তরুণীকে নিজের দেশে আশ্রয় দিতে পেরে তাঁরা সম্মানিত।
ঘটনা সপ্তাহখানেক আগের। আরবভূমের সামাজিক গোঁড়ামিতে আবদ্ধ না থেকে স্বাধীনতার সঙ্গে জীবনযাপন করতে চেয়েছিলেন আঠেরোয় পা দেওয়া তরুণী রহফ মহম্মদ আল কুনুন। কিন্তু বারবার বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছিলেন অভিভাবকরা। অনন্যোপায় হয়ে পরিবারের সঙ্গে কুয়েত যাওয়ার পথে বিমানবন্দর থেকে পালিয়ে যান কুনুন। উঠে পড়েন ব্যাংককের বিমানে। সেখানে নামতেই একরাশ প্রতিকূলতার মধ্যে পড়তে হয়। কুনুন আশঙ্কা প্রকাশ করেন, তাঁর প্রাণ সংশয় আছে। বাড়ি ফিরলে তাঁকে খুন করা হতে পারে।
[সিরিয়া ছাড়তে শুরু করল মার্কিন সেনা, হারানো জমি ফিরে পেতে পারে আইএস]
শেষপর্যন্ত রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কমিশনের এক আধিকারিকের হস্তক্ষেপে জট কাটে। আঠেরো পেরোনো যুবতীকে জোর করে কিছু করানো মানবাধিকার লঙ্ঘনের মধ্যে পড়ে- এই যুক্তি দেখিয়ে কুনুনকে তাঁর পছন্দমতো জায়গায় থাকার সুযোগ দেওয়া হয়। সাম্প্রতিক সময়ে এসব ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়াই হয়ে উঠেছে নির্ভরযোগ্য আশ্রয়স্থল। কুনুন নিজেও অস্ট্রেলিয়া গিয়ে থাকতে চেয়েছিলেন। তাই প্রথমে অস্ট্রেলীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তা বিশেষ ফলপ্রসূ না হওয়ায়, কানাডার দ্বারস্থ হন অষ্টাদশী। প্রস্তাব প্রায় লুফে নিল কানাডা প্রশাসন। প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বক্তব্য, ‘কানাডা সবসময়ে মানবাধিকারের পক্ষে। বিশেষত মহিলাদের অধিকারের বিষয়ে সবসময় তাঁদের পাশে। রাষ্ট্রসংঘের পক্ষ থেকে সৌদি তরুণী রহফ মহম্মদ আল কুনুনকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য আমাদের কাছে প্রস্তাব পাঠানো মাত্রই আমরা তা গ্রহণ করে নিই। ওঁর মতো মেয়েকে আশ্রয় দিতে পেরে আমরা নিজেরাই সম্মানিত বোধ করছি।`
[আমেরিকার পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হতে পারেন এক হিন্দু মহিলা!]
তবে মানবাধিকারকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে কানাডার এই সিদ্ধান্তে বেশ অসন্তুষ্ট সৌদি প্রশাসন। সূত্রের খবর, কানাডার-সৌদির কূটনৈতিক সম্পর্কে এর প্রভাব পড়তে পারে। আসলে কুনুনের এই ঘটনা তো শুধুমাত্র মানবাধিকার ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ রইল না। আরব দুনিয়ার কট্টরবাদকেও অনেকটা বিশ্বের সামনে নিয়ে এল। তাতে সৌদির মতো কয়েকটি দেশের ইমেজ রীতিমতো কালিমালিপ্ত হয়েছে। আল কুনুনের মুক্ত জীবনের বিনিময়ে নিজেদের গোঁড়ামিতে আঘাত কিছুতেই মেনে নেবে না আরবের দেশগুলি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.