সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ব্যাপারটা কিন্তু আদপেই গাঁজাখুরি নয়!
সারা পৃথিবী জুড়েই ধীরে ধীরে কমছে গাঁজা নিয়ে ছুঁৎমার্গ। গাঁজা সমাজে স্বীকৃত হচ্ছে মদের মতোই। এবং এই সামাজিক বিপ্লবের হাত ধরেই জন্ম নিয়েছে এক নতুন ঘরানার খাবার- ক্যানাবিস কুইজিন। পৃথিবীর যে দেশগুলোতে গাঁজা নিষিদ্ধ নয়, সেখানে ধীরে ধীরে বাড়ছে এই ক্যানাবিস কুইজিনের জনপ্রিয়তাও।
তার মধ্যেই রীতিমতো চমকে দিচ্ছেন ক্যালিফোর্নিয়ার এক রাঁধুনি। তাঁর নাম ক্রিস্টোফার সয়েঘ।
বিশ্বদরবারে ক্রিস্টোফারের পরিচিতি ‘দ্য হার্বাল শেফ’ নামে। নানা রকমের ভেষজ নির্যাস মিশিয়ে খাবারকে আরও সুস্বাদু করে তোলার জন্যই এহেন খেতাব! এখন, তাঁর রান্নায় ব্যবহৃত নানা ভেষজের তালিকায় যুক্ত হয়েছে গাঁজাও।
তা, কী ভাবে গাঁজাকে রান্নার মশলা হিসেবে ব্যবহার করছেন বছর চব্বিশের এই বিখ্যাত রাঁধুনি?
গাঁজার প্রভাবে রান্না যাতে বিস্বাদ হয়ে না যায়, তার জন্য অবশ্য একটু খাটতে হচ্ছে ক্রিস্টোফারকে। প্রথমে গাঁজার পাতাকে পিষে বের করে নিতে হচ্ছে নির্যাস। ঘন, একটু চিটে তেলের মতো সেই নির্যাসই আপাতত কাজ করছে ক্রিস্টোফারের হাতযশের নেপথ্যে।
তার পর?
নির্যাস বের করে নেওয়ার পর বাকিটা যেমন ভাবে রান্না হয়, তেমনই! একটা সিরিঞ্জে ভরে নিচ্ছেন রাঁধুনি সেই তরল। তার পর, রান্না হয়ে গেলে খুব সামান্য পরিমাণে, মাত্র এক কী দু’ ফোঁটা মিশিয়ে দিচ্ছেন খাবারে।
এবং, মাত্র একটি কী দু’টি পদেই থেমে থাকছে না এই ক্যানাবিস কুইজিনের জয়যাত্রা। ক্রিস্টোফার জানাচ্ছেন, যে কোনও খাবার, সরবত, মিষ্টি বা কারি- তাতে গাঁজার নির্যাস মিশিয়ে দেওয়া যায়।
তা বলে গাঁজার নির্যাসে খাবার যে আরও সুস্বাদু হয়ে ওঠে, এমনটা কিন্তু নয়। তার স্বাদ থাকে একই রকম।
প্রশ্ন উঠতেই পারে, এভাবে খাবারে নেশার জিনিস মিশিয়ে দিয়ে ক্রিস্টোফার কি আখেরে মানুষকে নেশার পথে ঠেলে দিচ্ছেন না?
ব্যাপারটাকে এভাবে দেখলে অন্যায় হবে। ”খাবারের সঙ্গে আমরা যখন ওয়াইন খাই, তখনও তো নেশা হয়। কই, সেটা নিয়ে তো কেউ আপত্তি তোলে না?” পাল্টা প্রশ্ন তুলছেন ক্রিস্টোফার।
তার সঙ্গেই এই ক্যানাবিস কুইজিন পাতে তুলে দেওয়া নিয়ে কিঞ্চিৎ জবাবদিহিও করেছেন তিনি। বলছেন, ”আমি এটা কখনই ভুলি না যে আমি আমার সমাজের কাছে দায়বদ্ধ। তাই এমন পরিমাণে গাঁজার নির্যাস মেশাই না যা শরীরের ক্ষতি করতে পারে।”
তাছাড়া, ক্রিস্টোফারের এই ক্যানাবিস কুইজিন এক গ্রাস খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই যে তুমুল নেশা হয়, এমনটাও নয়। জানাচ্ছেন রাঁধুনি, পুরো প্লেট শেষ করার পরে সামান্য একটু মৌতাত নিয়ে বাড়ি ফেরেন গ্রাহকরা।
নীতিবাগীশরা যা-ই বলুন, ক্যালিফোর্নিয়া আপাতত মজেছে ক্রিস্টোফারের ক্যানাবিস কুইজিনে। দামটাও নেহাত কম নয়। এক প্লেট খাবারের দাম পড়ছে ৫০০-৭০০ ডলার। সেটা ব্যয় করেও অনেকেই উপভোগ করছেন এই স্বাদের জাদু।
নিচের ভিডিওয় ক্লিক করে দেখে নিন, গাঁজা দিয়ে কেমন সুস্বাদু সব খাবার বানাচ্ছেন ক্রিস্টোফার!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.