সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অপরাধ বলতে ছিল যাত্রীদের মাস্ক পরতে বলা। তার জন্য নির্মম পরিণতির শিকার হতে হল বাসচালককে। মাস্ক পরতে না চাওয়া যাত্রীদের গণপ্রহারে মৃত্যু হল তাঁর। দক্ষিণ-পশ্চিম ফ্রান্সের এক শহরে এই ঘটনা রীতিমতো নাড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসনকে। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে যে আলোচনার মাধ্যমে সবটা সামাল দিতে ফ্রান্সের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী আজ সেখানে ছুটে যাচ্ছেন।
ঘটনা শুক্রবারের। করোনা (Coronavirus) পরিস্থিতি সামলে সদ্যই লকডাউনমুক্ত হয়েছে ফরাসি দেশ। চালু হয়েছে গণপরিবহণ। তবে মাস্ক ছাড়া বাড়ির বাইরে বেরনো বারণ। কিন্তু বারণ কে শোনে? দক্ষিণ-পশ্চিম ফ্রান্সের বায়োঁ (Bayonne) শহরে মাস্ক ছাড়াই বাসে উঠেছিলেন বেশ কয়েকজন যাত্রী। চালক ফিলিপ তাঁদের প্রথমে মাস্ক পরার অনুরোধ জানান। তাঁর অনুরোধের তোয়াক্কা করেননি কেউ। এরপর ফিলিপ জানান, মাস্ক না পরলে বাস থেকে নেমে যেতে হবে। চালকের এই সচেতনতাই তাঁর বিপদ ডেকে আনে। তেলেবেগুনে খেপে ওঠেন মাস্কহীন যাত্রীরা। আর রাগের মাথায় তাঁরা যা করেন, তা চরম নিন্দনীয়।
বছর উনষাটের বাসচালক ফিলিপকে ব্যাপক মারধর করতে শুরু করেন যাত্রীরা। অচেতন অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে কোনওক্রমে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সংকটজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন থাকার পর ব্রেন ডেথ হয় ফিলিপের। এরপর পরিবারের অনুমোদন সাপেক্ষে ভেন্টিলেশন খুলে মৃত ঘোষণা করা হয়। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই বাসচালকরা তীব্র প্রতিবাদ শুরু করেন। বায়োঁর রাস্তায় মৌন মিছিল করেন তাঁরা, কাজ বয়কটের ডাক দেন।
করোনা আবহে সচেতনতার বার্তা দিতে গিয়ে এক বাসচালকের এমন পরিণতি কার্যত বড়সড় ধাক্কা প্রশাসনের কাছে। ফিলিপের মৃত্যুতে শোকবার্তা দিয়েছেন দেশের নতুন প্রধানমন্ত্রী জঁ ক্যাসটেক্স। তাঁর মতে, একজন অত্যন্ত সচেতন নাগরিক হিসেবে নিজের কর্তব্য করেছেন ফিলিপ। এর জন্য দেশ তাঁকে মনে রাখবে। তাঁর অপরাধীদের শাস্তি হবেই।
জানা গিয়েছে, পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে ২ যুবকের বিরুদ্ধে সরাসরি খুনের মামলা রুজু করেছে। এছাড়া আরও ৪ বাসযাত্রীর বিরুদ্ধে অপরাধীদের সাহায্য করার অভিযোগ পৃথক মামলা দায়ের হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.