রোশনি চক্রবর্তী: এম উইল৷ বয়স ষাট৷ সন্তানের জন্ম দিতে চলেছেন৷ লন্ডনের এই প্রৌঢ়া কিন্তু মা হচ্ছেন না৷ সম্পর্কে দিদিমা হবেন৷ নিজের নাতি-নাতনির জন্ম দিতে চলেছেন নিজেরই গর্ভে!
কানসারে ২৯ বছর বয়সে মারা গিয়েছেন উইলের মেয়ে৷ নিজের ডিম্বাণু সংরক্ষণ করে রেখেছিলেন তরুণী৷ স্বেচ্ছাতেই সেই ডিম্বাণু নিয়ে মা হতে চেয়েছেন উইল৷ তারপরই বিতর্ক৷ গড়াল আদালত পর্যন্ত৷ মাকে ডিম্বাণু ধারণ করার জন্য লিখিত বিবৃতিও দিয়ে গিয়েছিলেন উইলের মেয়ে৷ লিখে গিয়েছেন, “সংরক্ষিত রয়েছে আমার ডিম্বাণু৷ সেই ডিম্বাণু যেন আমার মা বহন করেন৷ জন্ম দেবেন আমার সন্তানের৷”
তা সত্বেও মেয়ের মৃত্যুর পর নাতি কিংবা নাতনিকে পৃথিবীর আলো দেখাতে শুরু হয় দাদু-দিদিমার দীর্ঘ লড়াই৷ ২০১১ থেকে আইনি লড়াই শুরু উইলের৷ অনেকবার বাতিল করে দেওয়া হয় তাঁদের আবেদন৷ এরপর এইচএফইএ-কে হাই কোর্ট বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলে৷ তিনটি ডিম্বাণুকে ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশনের জন্য নিউ ইয়র্কের ক্লিনিকে পাঠাতে বলা হয়৷ শেষে হিউমান ফার্টিলাইজেশন অ্যান্ড এমব্রায়োলজি অথরিটি (এইচএফইএ) সাহায্যে এই যুদ্ধে জয়ী হন এম উইল৷
গবেষণা বলছে, যে মহিলারা ডিম্বাণু সংরক্ষণ করতে চান, তাঁরা এখনও মনের মানুষের খোঁজ পাননি৷ চিকিৎসা সংক্রান্ত কারণেও এই সংরক্ষণ জরুরি নতুন প্রজন্মের মহিলাদের জন্য৷ গবেষক কেইলি বোল্ডউইন বলেন, সম্প্রতি ৩১ জন মহিলার উপর সমীক্ষা করেছেন তিনি, প্রত্যেকেই নিজেদের ডিম্বাণু সংরক্ষণ করতে চান সামাজিকতার কারণে৷ তাঁর মতে, কোনও মহিলাই কেরিয়ারের জন্য ডিম্বাণু সংরক্ষণ করতে চান না৷ প্রত্যেকেই জীবনসঙ্গীর খোঁজ করেন৷ তবে, অনেক ক্ষেত্রে এই ডিম্বাণু সংরক্ষণই জিইয়ে রেখেছে কোনও মানুষের বাঁচার আশাকে৷ তেমনটাই হয়েছে এম উইলের ক্ষেত্রে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.