সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যেন সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখে থেকে ফিরে আসা। প্রায় মাসখানেক ধরে করোনা যুদ্ধে জয়ী হয়ে নিজের কুর্সিতে বসে, নিজের সেই যুদ্ধের ভয়াবহ দিনের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। রবিবার ‘দ্য সান’ পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বর্ণনা করেছেন হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা সমস্ত খুঁটিনাটি বিষয়। কীভাবে তাঁর জীবন বাঁচাতে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা দিনরাত কাজ করে গিয়েছেন, সেই কৃতিত্বের কথাও গোপন করেননি। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ”আমাকে বাঁচিয়ে রাখতে লিটার লিটার অক্সিজেন দিতে হয়েছিল।” সব কিছুর জন্য ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী নিজেকে ‘ভাগ্যবান’ বলে মনে করছেন।
গত ২৬ মার্চ। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর করোনা রিপোর্ট পজিটিভ, এই খবর একেবারে বিদ্যুতের গতিতে ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বজুড়ে। রিপোর্ট হাতে দেশবাসীর উদ্দেশে ঘোষণা করে তিনি নিজেই চলে যান কোয়ারেন্টাইনে। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি বিশেষ। গুরুতর অসুস্থতা নিয়ে কয়েকদিন পরই ভরতি হন লন্ডনের সেন্ট থমাস হসপিটালে। সেখানে আইসিইউ-তে তাঁকে ভরতি নিয়ে শুরু হয় চিকিৎসা। শুরু হয় করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে কঠিন এক লড়াই।
‘দ্য সান’ পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বরিস জনসন সেই কঠিন দিনগুলির কথাই বলেছেন। বরিস বলছেন, তাঁর থেকে যেন অন্যদের সংক্রমণ না হয়, একথা বারবার তিনি চিকিৎসকদের বলেছিলেন। আরও একটি ইচ্ছার কথাও প্রকাশ করেছিলেন ব্রিটেনের রাষ্ট্রপ্রধান। এই দুর্দিন কাটিয়ে তাঁর দেশ যেন আবার উঠে দাঁড়ায়। তাঁর কথায়, ”সত্যিই একটা কঠিন সময় ছিল। আমি তা অস্বীকার করতে পারি না। কীভাবে যে আজ ফিরে এসেছি… কয়েকদিনের মধ্যে আমার শারীরিক অবস্থার এতটা অবনতি হয়ে গিয়েছিল!” বলেরিস এও জানিয়েছেন যে চিকিৎসা পদ্ধতি তাঁর শরীরে কাজ না করলে, তার বিকল্পও ভেবে রেখেছিলেন চিকিৎসকরা।
সেই স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে নিজেই প্রায় শিউড়ে উঠছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। দীর্ঘদিনের জট ব্রেক্সিট যিনি অনায়াসে কাটিয়ে ফেলতে পেরেছিলেন, সেই রাষ্ট্রপ্রধান করোনা ভাইরাসের হামলার কাছে যেন নিতান্তই অসহায়। তবে সেই কঠিন সময় পেরিয়ে তিনি জীবনে ফিরে এসেছেন তো বটেই, সঙ্গে সদ্যোজাত শিশুপুত্র। এ যেন যুদ্ধজয়ের পুরস্কার। গত বুধবার বরিসের বান্ধবী ক্যারি সাইমন্ডস এক পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছেন। তার নাম রাখা হয়েছে – উইলফ্রেড লরি নিকোলাস জনসন। এত বড় নামের পিছনে কিন্তু ইতিহাস আছে। পরিবার সূত্রে খবর, এই শিশুর নামের মধ্যেই রয়েছেন সেই দুই চিকিৎসক, যাঁরা প্রাণপণ লড়াই করে বরিস জনসনকে ফিরিয়ে এনেছেন সুস্থতার পথে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.