সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গণতন্ত্রের দাবিতে উত্তাল মায়ানমার (Myanmar)। পালটা ফৌজের নিপীড়নে প্রাণ হারিয়েছেন হাজারেরও বেশি গণতন্ত্রকামী। সেনাশাসন শেষ করতে তীব্র যুদ্ধ চালাচ্ছে বিদ্রোহী বাহিনী। এহেন সময়ে জুন্টার বিরুদ্ধে গণহত্যার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠে এসেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে।
সোমবার এক প্রতিবেদনে বিবিসি দাবি করেছে, গত জুলাই মাসে মধ্য মায়ানমারের সাগাইং প্রদেশের কানি শহর সংলগ্ন অন্তত চারটি গ্রামে গণহত্যা চালিয়েছিল বার্মিজ সেনা। যার ফলে শুধুমাত্র ওই চার এলাকাতেই মৃত্যু হয়েছিল ৪০ জন সাধারণ মানুষের। বলে রাখা ভাল, কানি শহর বিদ্রোহীদের ঘাঁটি। ওই অঞ্চলে সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করা মিলিশিয়াগুলিকে শাস্তি দিতেই গণহত্যা চালায় ‘টাটমাদাও’ তথা বার্মিজ সেনা। বিবিসি-তে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়াইন নামের একটি গ্রামে একসঙ্গে সবচেয়ে বেশি মানুষকে মারা হয়। সেখানে ১৪ জন গ্রামবাসীর উপর অকথ্য নির্যাতন চালিয়ে তাঁদের হত্যা করেছে ফৌজ।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটির দাবি, এক মহিলা প্রত্যক্ষদর্শীকে বলতে শোনা গিয়েছে, “সেই অকথ্য নির্যাতন চোখে দেখা যায় না, তাই মাথা নিচু করেই কাঁদছিলাম আমরা। আমরা তাদের (সৈনিকদের) কাছে ক্ষমাভিক্ষা চাইছিলাম। কিন্তু তারা কোনও কিছুতেই কান দিচ্ছিল না। এক সৈনিক আমাকে প্রশ্ন করে, তোমার স্বামী কি ওদের মধ্যে আছে? যদি থাকে, তাহলে তার শেষকৃত্যের জন্য তৈরি হও।” আর একটি গ্রাম, জি বিন দুইনেও মিলেছে ১২টি ক্ষতবিক্ষত দেহ। শিশু, প্রতিবন্ধীর দেহও মিলেছে। সেখানে গাছে বেঁধেও মেরে ফেলা হয়েছে এক বৃদ্ধকে। নিহতদের এক আত্মীয়া বলেন, “সেনা বলেছিল একটা কথাও বলবে না। আমরা খুব ক্লান্ত। বেশি কথা বললে তোমাকেও মেরে ফেলব।”
উল্লেখ্য, মায়ানমারের উত্তর-পশ্চিমে সাগাইং প্রদেশে সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী ‘পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস’-এর মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ চলছে। গত জুলাই মাস থেকেই ওই এলাকা থেকে বিদ্রোহী বাহিনীকে হঠিয়ে দিতে অভিযান শুরু করেছে জুন্টা। গত অক্টোবর মাসে ‘রেডিও ফ্রি এশিয়া’ জানিয়েছিল, পালে টাউনের নিকটে সংঘর্ষে নিহত হয় বার্মিজ সেনার ৩০ জওয়ান। নিহতদের মধ্যে বার্মিজ সেনার এক কমান্ডারও ছিল। ওই ঘটনার পর থেকেই সেনার অত্যাচার আরও বেড়েছে বলে খবর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.