সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চিন থেকে ইটালি, স্পেন, আমেরিকা ঘুরে এবার কি নোভেল করোনা ভাইরাসের হটস্পট হিসেবে উঠে আসছে ব্রাজিল? পেলের দেশ কিন্তু সে পথেই এগোচ্ছে। ৬৭ হাজার মানুষ আক্রান্ত এবং ৪৫০০ জনের প্রাণহানির পরও সে দেশের প্রেসিডেন্ট মনে করছেন, করোনা ছোটখাটো ফ্লু গোছের কোনও রোগ। তা রুখতে খুব বেশি বিধিনিষেধের প্রয়োজন নেই। আর প্রেসিডেন্টের এই মনোভাবই দেশক বিপদের মুখে ফেলছে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ ও নাগরিকদের একাংশ।
জানা গিয়েছে, COVID-19 পজিটিভ রোগীদের জন্য দেশের বহু হাসপাতালেই আর জায়গা নেই। তার জেরে বাড়িতে থেকেই প্রাণ খোয়াতে হচ্ছে অনেককে। আমাজন লাগোয়া শহর মানাউসে। সেখানে শুধুমাত্র বাড়িতে থেকেই যে হারে মৃত্যু হয়েছে, তা কপালের ভাঁজ চওড়া করেছে সাধারণ নাগরিকের। সবচেয়ে বড় সমাধিস্থলটিতে নতুন করে গণকবর খোঁড়া হচ্ছে। সৎকারের কাজে জড়িত কর্মীদের আশঙ্কা, এই হারে মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকলে কয়েকদিনের মধ্যে কফিন শেষ হয়ে যাবে। তখন এ প্রান্তে, ও প্রান্তে পড়ে থাকবে মৃতদের দেহাংশ!
সাও পাওলো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক তথা ভাইরোলজিস্ট পাওলো ব্র্যান্ডাও অত্যন্ত হতাশার সুরে বলছেন, “আমাদের দেশে করোনা পরিস্থিতি আরও জটিল ও ভয়াবহ হওয়ার সবরকম রাস্তা পাকা।” সামনে শীতকাল। আর কম তাপমাত্রায় নোভেল করোনা ভাইরাসের সক্রিয়তা বাড়ে। চিন, ইটালিতে এই তাপমাত্রার কারণেই এতটা দাপট দেখাতে পেরেছে মারণ জীবাণুটি। ফলে ব্রাজিলে আরও দুর্দিন ঘনিয়ে আসছে বলে আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ব্রাজিলের ৪৫০০ জনের প্রাণ কেড়েছে COVID-19. ছোবল বসিয়েছে ৬৭ হাজার মানুষের শরীরে। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, সংখ্যাটা আরও অনেকটাই বেশি। কারণ, ঠিকমতো পরীক্ষা না হওয়া, হাসপাতালে ঠাঁই না হওয়া-সহ একাধিক ফ্যাক্টর প্রাণহানির সংখ্যা অনেকটাই বাড়িয়ে তুলেছে। ২১ কোটিরও বেশি বসবাসকারীর দেশে কমপক্ষে ১ লক্ষ মানুষ করোনা কবলিত বলে তাঁদের ধারণা। রিও-ডি-জেনেইরো, সাও পাওলো-সহ একাধিক শহরের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ভেঙে পড়ায় কার্যত মাথায় হাত চিকিৎসকদের।
মার্চের মাঝামাঝি সময়েই ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর করোনা পরীক্ষা নিয়ে অনেক জলঘোলা হয়েছে। কখনও পজিটিভ, কখনও নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে তাঁর। তবে শেষমেশ তা নেগেটিভ আসে। আর তারপরই সম্ভবত তিনি এই রোগ সম্পর্কে কিছুটা উদাসীনতা প্রকাশ করতে থাকে। যা বড়সড় বিপদের কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.