ছবি- সংগৃহীত
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিদ্রোহে কাঁপছে পাকিস্তান! বালোচিস্তান প্রদেশের তুরবত শহরে বিস্ফোরণে নিহত আধাসেনা-সহ ৬ জন। আহত বহু। জানা গিয়েছে, একটি বাসে আইইডি বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। আশপাশের গাড়িতেও আগুন ধরে যায়। আহতদের অনেকেরই আঘাত গুরুতর হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রশাসনের। এই হামলার দায় স্বীকার করেছে বালোচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)।
রয়টার্স সূত্রে খবর, গতকাল শনিবার এই হামলা হয়। বাসটি আধাসেনা নিয়ে করাচি থেকে তুরবত শহরে আসছিল। তখনই আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। বাসটির পাশাপাশি আশপাশের কয়েকটি গাড়িও ঝলসে যায়। প্রাণ হারান আধাসেনা-সহ ৬ সাধারণ নাগরিক। আহত তিরিশের উপর। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পাক সেনা, বিশাল পুলিশবাহিনী ও দমকল। প্রথমে দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকা বাসটির আগুন নেভানো হয়। তারপর আহতদের উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে হামলার দায় স্বীকার করে বিএলএ। সশস্ত্র সংগঠনটির এক মুখপাত্র বলে, পুলিশের কনভয়কে টার্গেট করে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। আজ এই তথ্য ও মৃতের সংখ্যা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছে পুলিশ।
গত বছরের ৯ নভেম্বরও ভয়ংকর হামলা চালায় বালোচ লিবারেশন আর্মি। বালোচিস্তানের রাজধানী কোয়েটায় রেল স্টেশনে আত্মঘাতী হামলা হয়। সেদিনের ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করেছিলেন শতাধিক মানুষ। পেশোয়ারে যাওয়ার জন্য ট্রেনে সওয়ারও হয়েছিলেন বহু মানুষ। কিন্তু ট্রেন ছাড়ার ঠিক আগের মুহূর্তেই বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে গোটা স্টেশন চত্বর। সঙ্গে সঙ্গে সেখানে পৌঁছয় পাক পুলিশ, নিরাপত্তাবাহিনী দমকল ও উদ্ধারকারী দল। কিন্তু ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান অনেকে। আহত প্রায় ৪০। সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা ২৬।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানি শাসনের শৃঙ্খল ভেঙে ফেলতে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চালাচ্ছে বালোচরা। পালটা গুমখুন, হত্যা ও ধর্ষণের মতো অমানুষিক অত্যাচার চালিয়ে বিদ্রোহের আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে ইসলামাবাদ। বিশেষ করে চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর তৈরি হওয়ার পর থেকেই আরও অশান্ত হয়ে উঠেছে বালোচিস্তান। অভিযোগ, খনিজ সমৃদ্ধ প্রদেশটিকে কার্যত লুট করছে পাক প্রশাসন। প্রতিদানে বালোচ জনতা পেয়েছে শুধু নির্যাতন ও দারিদ্র।
প্রসঙ্গত, ২০১৫-তে স্বাক্ষর হওয়া মউয়ের ভিত্তিতে চিন-পাকিস্তানের মধ্যে অর্থনৈতিক করিডর বা সিপিইসি নির্মাণকার্য শুরু হয়েছে৷ চিনের প্রস্তাবিত ‘ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রোড’ নীতির উপর ভিত্তি করে, তাদের অর্থ সাহায্যেই এই করিডর তৈরি হচ্ছে৷ পাকিস্তানের গদর পোর্ট থেকে চিনের শিনজিং প্রদেশ পর্যন্ত মোট ২,০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পথটি তৈরি করা হয়েছে৷ এই করিডর নিয়ে প্রথম থেকেই বিক্ষোভ প্রদর্শন করে আসছেন বালোচিস্তান-সহ গিলগিট-বালতিস্তান ও পিওকে-র নাগরিকরা৷ অভিযোগ, পেশিশক্তির জোরে তাঁদের বাসভূমি কেড়ে নিয়ে এই করিডর তৈরি করেছে পাকিস্তান৷ যাতে পূর্ণ মদত দিয়েছে চিন। যে কারণে চলতি বছরেও একাধিকবার চিনা ইঞ্জিনিয়ারদের উপর জঙ্গি হামলা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.