সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আটচল্লিশ ঘণ্টা না কাটতেই বয়ান বদল। বুধবার ইউক্রেনকে অত্যাধুনিক ‘হিমারস রকেট সিস্টেম’ দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তার আগে অবশ্য তিনি বলেছিলেন যে রুশ ভূখণ্ডে হামলা চালানোর মতো দূরপাল্লার কোনও অস্ত্র কিয়েভকে দেওয়া হবে না। এদিকে, ইউক্রেনকে এহেন হাতিয়ার দিলে ফল ভুগতে হবে বলে হুমকি দিয়েছে রাশিয়া।
গত বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “ইউক্রেনের (Ukraine) আবেদন মেনে আমরা তাদের সীমিত সংখ্যায় মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রায় ৭০০ মিলিয়ন ডলার সামরিক প্যাকজের অন্তর্গত জ্যাভলিন মিসাইল-সহ আরও হাতিয়ার ইউক্রেনকে দেওয়া হবে। তবে আমরা মনে করি দেশের মধ্যে রুশ ফৌজকে নিশানা করতেই তারা এগুলি ব্যবহার করবে।” বাইডেন সোমবার বলেছিলেন, “রুশ হামলা ঠেকাতে আমরা ইউক্রেনকে আরও সামরিক সাহায্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কিন্তু, রাশিয়ার ভূখণ্ডে হামলা চালানো যায় এমন কোনও ক্ষেপণাস্ত্র আমরা ইউক্রেনকে দেব না।” কিন্তু চাপের মুখে সিদ্ধান্ত বদল করেছেন তিনি।
এই বিষয়ে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, “আমেরিকা ইচ্ছা করেই উত্তেজনা বাড়াচ্ছে। এ ধরণের অস্ত্র সরবরাহ শান্তি আলোচনায় ইউক্রেনের নেতাদের ফিরে আসার ক্ষেত্রে কোনও ভূমিকা রাখবে না।” রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভও আমেরিকার সমালোচনা করে বলেছেন, বাইডেনের ঘোষণা তৃতীয় কোনও দেশের ইউক্রেন সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি করেছে।
দোনবাস (ইউক্রেনের ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলকে একত্রে এই নামে ডাকা হয়) এলাকায় গত কয়েক সপ্তাহের রুশ হামলায় কোণঠাসা হয়ে পড়েছে ইউক্রেনীয় সেনা। এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট আমেরিকার কাছে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র চেয়েছিলেন। কিন্তু রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের হুঁশিয়ারির পরে অবস্থান বদলে ফেলেছিলেন বাইডেন। তবে বর্তমান পরিস্থিতি নজরে রেখে ইউক্রেনকে ‘হিমারস রকেট সিস্টেম’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, ফেব্রুয়ারির ২৪ তারিখ ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করে রাশিয়া। কিন্তু এখনও কিয়েভ দখল করতে পারেনি তারা। লড়াইয়ে কয়েক হাজার সেনা ও বিপুল অস্ত্র খুইয়ে গত এপ্রিলে সামরিক অভিযানের প্রথম পর্বে ইতি টানার কথা ঘোষণা করে রাশিয়া। পাশাপাশি, মারিওপোল ও দোনবাস অঞ্চলে অভিযান তীব্র করে তোলে পুতিনের বাহিনী। ইতিমধ্যে মারিওপোল দখল করে ফেলেছে রুশ ফৌজ। এবার দোনবাস অঞ্চলে ইউক্রেনের শেষ ঘাঁটি সেভেরদোনেৎস্ক দখলে মরিয়া পুতিন বাহিনী। লুহানস্ক (Luhansk) অঞ্চলের সেভেরদোনেৎস্ক শহরের মেয়র আলেকজন্ডার স্টাইউক আগেই জানিয়েছিলেন, প্রায় তিন সপ্তাহের যুদ্ধে সেখানে দেড় হাজারেরও বেশি সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। রুশ বাহিনীর ধারাবাহিক গোলা ও ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষণের ফলে শহরের ৬০ শতাংশই ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.